প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, মানুষ যেভাবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে এ অবস্থায় আমরা সব কোর্ট খুলে দিতে পারি না। আমাদের মনে রাখতে হবে আগে জীবন পরে জীবিকা।
গতকাল রোববার (১৮ এপ্রিল) আপিল বিভাগ চলাকালীন সময়ে হাইকোর্টের ভার্চুয়াল বেঞ্চ বাড়ানোর প্রসঙ্গ উঠলে প্রধান বিচারপতি এ মন্তব্য করেন। আদালতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, আমি তো বারের সম্পাদক। আইনজীবীরা আমাকে বিভিন্নভাবে হাইকোর্টে বেঞ্চের সংখ্যা বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছেন। অনেক আইনজীবী আর্থিক কষ্টে আছেন। আইনজীবীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই হাইকোর্টে বেঞ্চ বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছি। কারণ আমাদের তো আপনি ছাড়া আবেদন করার আর কোনো জায়গা নেই। এক পর্যায়ে আইনজীবী সমিতির সাবেক সহসভাপতি মো. অজি উল্লাহও হাইকোর্টে জামিন ও রিট মোশনের বেঞ্চ বাড়ানোর জন্য আবেদন জানান। তখন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন প্রশ্ন রেখে বলেন, আগে জীবন না জীবিকা? আমার তো মনে হয় আগে জীবন, পরে জীবিকা। করোনায় মানুষ যেভাবে আক্রান্ত হচ্ছে এ অবস্থায় তো আমরা সব কোর্ট খুলে দিতে পারি না। আমরা যদি এ অবস্থায় হাইকোর্টে ভার্চুয়াল বেঞ্চের সংখ্যা বাড়াতে যাই তাহলে অনেক স্টাফকে সশরীরে কোর্টে আসতে হবে। এতে জনবল বেড়ে যাবে এবং করোনা আক্রান্তের ঝুঁকিও বাড়বে। তিনি বলেন, আমি কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপিল বিভাগের সব বিচারপতির সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেই। বিচারক, আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী সবার কথা চিন্তা করে বেঞ্চ সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছি। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা হাইকোর্টে ভার্চুয়াল বেঞ্চ বাড়ানোর বিষয়টি দেখব। আপিল বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী বলেন, প্রধান বিচারপতি তো সব কিছু বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখন কোর্টের সংখ্যা বাড়ালে অনেক স্টাফকে কোর্টে আসতে হবে। তাদেরও তো পরিবার আছে। তাদের তো আমরা ঝুঁকিতে ফেলতে পারি না। আপিল বিভাগের আরেক বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বার সম্পাদককে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি তো বারের সেক্রেটারি আপনি তো শুধু আইনজীবীদের বিষয়টি দেখছেন। কিন্তু প্রধান বিচারপতিকে সবার দিক চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। প্রসঙ্গত, করোনার সংক্রমণ রোধে লকডাউনের মধ্যে হাইকোর্টের চারটি বেঞ্চে বিচারকাজ চলছে। যদিও আইনজীবীরা হাইকোর্টের বেঞ্চ বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছিলেন।