পৃথিবীর বিলুপ্তপ্রায় লাল তালিকার পশু-পাখিতে ভরপুর একখন্ড ভালবাসার নাম ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্ক। কক্সবাজার এসে লাখ টাকার নামীদামী হোটেলে অবস্থান, সমুদ্র স্নান- অবলোকনের পরও অপূর্ণ থাকে যদি একপলক দেখা না হয় বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কের শত বুনো প্রাণীর উম্মুক্ত বিচরন। প্রিয় মানুষকে সাথে নিয়ে বনছায়ায় হেঁটে-বসে উম্মুক্ত পরিবেশে পশু-পাখি দেখার মজাই আলাদা। বাঘ, সিংহ, গয়াল, জেব্রা, ওয়াইল্ডবিষ্ট ছাড়াও এ পার্কের আকর্ষন হলো পৃথিবীর বিলুপ্তপ্রায় লাল তালিকার পশু-পাখি। এদের মধ্যে বিশ্বজুড়ে বনগরুকে ‘লাল তালিকাভুক্ত’ করেছে আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক ইউনিয়ন (আইইউসিএন)। পৃথিবী জুড়ে যখন এ প্রাণীর আকাল চলছে বাংলাদেশ দিচ্ছে বিলুপ্তপ্রায় এ বনগরুর সুখবর। সম্প্রতি চকরিয়ার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে দুটি বাচ্চা প্রসব করেছে ‘রানি বাহাদুর’। এ নিয়ে পার্কে বনগরুর সংখ্যা ছয়ে দাঁড়াল। পার্কের বন্য প্রাণী চিকিৎসক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাচ্চা দুটি সুস্থ রয়েছে। তাদের নিয়মিত পরিচর্যা করা হচ্ছে। প্রায় সাত মাস মায়ের দুধ খেয়ে বড় হবে বাচ্চা দুটি। বর্তমানে তাদের নিয়ে ফুরফুরে সময় কাটাচ্ছে খান বাহাদুর-রানি বাহাদুর জুটি। প্রসঙ্গত, আট বছর আগে কাপ্তাই উপজেলা থেকে পাচারের সময় খান বাহাদুরকে উদ্ধার করে সেনাবাহিনীর একটি দল। পরে তাকে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে হস্তান্তর করা হয়। পার্কের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী এ প্রতিবেদককে বলেন, পার্কে তিনবারে চারটি বাচ্চার প্রজনন হয়েছে, যা একটি মাইলফলক। পার্কে আসার পর সঙ্গীহীন খান বাহাদুর মনমরা থাকত। সঙ্গী পাওয়ার পর স্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে। জানা গেছে, বনগরু গাউর বা গৌর নামে পরিচিত। অনেকে এটিকে গয়াল বলে ভুল করেন। সাধারণ পুরুষ প্রজাতির একটি বনগরু প্রায় ২৫ বছর বাঁচে। স্ত্রী প্রজাতির বনগরু বাঁচে ২৩ বছর। পার্কের প্রকল্প পরিচালক আবু নাছের মো. ইয়াছিন নেওয়াজ বলেন, একসময় অনেক বন গরু দেখা গেলেও বর্তমানে এর সংখ্যা কমে আসছে। এই অবস্থায় পার্কের বেষ্টনী সম্পন্ন এখন জরুরী। সাত কোটি টাকার চলমান কাজ সমাপ্ত হলে পার্কের শ্রী বৃদ্ধির সাথে বৃদ্ধি পাবে পর্যটক-রাজস্ব।