বর্তমান লকডাউনে সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রোববার ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল উপজেলার বৃহত্তর সাপ্তাহিক নেকমরদ হাট নিবিঘ্নে চালালো ইজারাদার। সরকারী আইন অমান্য করে হাট চালানোর খবর পেয়েও তেমন কোন ব্যবস্থা নেই নি প্রশাসন। উপজেলা প্রশাসনের ভুমিকা প্রশ্নবিদ্ধ? বলে মনে করছেন সচেতনমহল। অথচ গত শনিবারের কাতিহার হাট বেলা ১১টার মধ্যে এসিল্যান্ড নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ভেঙে দিয়ে চলে আসেন। রোববার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই হাটে গরু ছাগল হাস মুরগী ধান গম খোলা কাপড়ের দোকান অস্থায়ী হোটেলে কেনাবেচা শুরু হয়। গরু থেকে শুরু করে সাইকেল ধানগম কাচাবাজারসহ অন্যান্য বাজারে যথারীতি মানুষের উপচে পড়া ভিড় সৃষ্ঠি হয়। এ সময় দুরত্ব বজায় রেখে চলার কোন বালাই লক্ষো করা যায় নি। তাছাড়া বেশিরভাগ মানুষের মুখে ছিলো না মাস্ক। হাটে দেখা যায়, শরীরে শরীর ঘেঁষে মানুষ চলাফেরা করছে,অস্থায়ী হোটেলগুলোতে মানুষ জটলা বেধে চা পান পরেটা খাচ্ছে। খোলা কাপড়ে দোকানে মানুষ স্বাদছন্দে কেনাকাটা করছে। ইজারাদার হাটের প্রবশেপথে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করেছে এবং টোল আদায়ের জন্য রশিদ বই দিয়ে তাদের লোকজনকে দিয়ে টোল আদায় করছে। হাটের একাধিক ক্রেতা বিক্রেতা বলেন, হাটে প্রায় চার থেকে পাচশত গরু ছাগল কেনা বেচা হয়েছে। দুই সপ্তাহের মধ্যে আজ হাটে স্বাভাবিক কেনাবেচা হয়েছে। এদিকে নেকমরদ হাটে গুর ছাগলসহ অন্যান্য পণ্যের টোল আদায়ে রয়েছে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ। হাটের একাধিক ক্রেতা জানান, গরু প্রতি সরকারী ২৩০ টাকার বদলে আদায় করছে ৩৫০ টাকা ছাগলের ৯০ টাকার বদলে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। এছাড়াও সাইকেল ধানগম হাটিসহ অন্যান্য খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছেও নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত টোল। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ ফিরোজ আলম জানান, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধের প্রধান বিষয় হচ্ছে মুখে মাস্ক রেখে কথাবার্তা বলা এবং সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করা। তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতিতে কোনভাবেই বৃহৎ ভাবে মানুষের সমাগম করা যাবে না। এতে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে পারে। হাট বসানোর সরকারী নির্দেশনা রয়েছে কি না জানতে এ প্রতিবেদক রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবিরের কাছে ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হাট বসানো যাবে না। আমি ও এসিল্যান্ড একটি রাজস্ব মিটিংয়ে আছি। এসিল্যান্ড হাট ভাঙতে যাচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত হাটে নেকমরদ ইজারাদারকে সাবধান করা হয়েছিল। সে তা উপেক্ষা করে আবারো হাট বসিয়েছে। এ জন্য তাকে জরিমানা করা হবে। হাট যথারীতি চলেছে। এসিল্যান্ড প্রীতম সাহা বেলা ১২ টা ৪০ মিনিটে হাটে পৌছালেও ইজারাদার অফিসে বসে ইজারাদারকে হাট ভাঙার আধা ঘন্টা সময় দিয়ে তিনি চলে যান। এদিকে চলমান লকডাউনের মধ্যে হাট বসানো বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও হাট বসিয়ে রীতিমত হাট পরিচালনা করে নেয় ইজারাদার। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে হাট বসালেও অজ্ঞাত কারণে কোন ব্যবস্থা নেই নি এসিল্যান্ড। রমজান মাসের কারণে হাট দুপুর দেড়টা থেকে দুইটার মধ্যে হাট শেষ হয়ে যায় বলে জানাই স্থানীয়রা। ইজারাদার মোমিন বলেন, লকডাউনের মধ্যে হাট নিয়েছি, এক হাট মিস হলে প্রচুর টাকা লোকসান এটা কে দিবে বলেন, তবে তিনি হাটে টোল বেশি নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। পরবর্তীতে সময়ে ইউএনও’ সোহেল সুলতান জুলকার নাইনকে পূণরায় ফোন দিয়ে এ বিষয়ে বলেন- আমরা রাজস্ব মিটিংয়ে আছি, এসিল্যান্ড গিয়ে হাট ভেঙেছে। হাটের টোল বেশি নেওয়া প্রসঙ্গে বলেন, এটি তো আগে বলেন-নি, আগামী থেকে টোল বেশি নিতে দেওয়া হবে না। নিলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।