নীলফামারীর ডোমারে অসহায় এক বৃদ্ধকে মামলায় ফাঁসিয়ে জমি দখলসহ বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে, উপজেলা গোমনাতী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড পন্ডিতপাড়া গ্রামে। সর্বস্থ হারিয়ে বৃদ্ধ আঃ মোতালেব ও তার স্ত্রী আলেমা বেগম ও সন্তানেরা দূর্বৃত্তদের ভয়ে গ্রাম ছাড়া হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। মামলা সুত্রে জানাযায়, উক্ত গ্রামের মৃত সেকেন্দার আলীর পুত্র আব্দুল মোতালেব (৭০) এর সাথে তারই সৎভাই আবু তালেব ও রুহুল আমিনের সাথে দীর্ঘদিন যাবত জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় আবু তালেব ও রুহুল আমিন মিলে বৃদ্ধ আব্দুল মোতালেবের বাড়ির পার্শ্বে নিজ ভোগদখলীয় বিনিময় কৃত ১ একর ৩৬ শতক জমি আবু তালেব ও রুহুল আমিন মিলে তা দখলের পায়তারা করে। যার কারণে মোতালেবের পরিবারের উপর অমানুষিক নির্যাতন করতে থাকে। বিষয়টি বুঝতে পেরে আঃ মোতালেব উক্ত জমির উপরে গত ১৫/১২/২০১৯ইং তারিখে নীলফামারী বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৪৪/১৪৫ ধারায় পিটিশন মামলা নং-৪৪৮/১৯ দায়ের করে। আঃ মোতালেব মামলাটি করার কারনে তার বড় আপন ভাই আব্দুল হক, সৎভাই আবু তালেব ও রুহুল আমিন মিলে মোতালেবের সাথে শত্রুতা শুরু করে। অপরদিকে ঘটনার দিন আব্দুল মোতালেব ও তার বড় ছেলে প্রভাষক আশেকে এলাহী বাড়িতে না থাকায়, সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে। বিজ্ঞ আদালতের আদেশ ১৪৪/১৪৫ ধারাকে অমান্য করে পরিকল্পিত ভাবে দেশীয় অস্ত্র হাতে আব্দুল হক, আবু তালেব, রুহুল আমিনসহ তাদের দলবল নিয়ে (ট্র্যাক্টর) দিয়ে হাল চাষ করে আঃ মোতালেবের ১একর ৩৬ শতক জমি জোর পূর্বক দখল করে নেয়। এ সময় আব্দুল মোতালেবের ছেলে মেরাজুর, মোমিনুর, মাসুম, বাপ্পি, হাবিবুর বাঁধা দিতে গেলে উভয়ের মধ্যে বাকবির্তকের সৃস্টি হয়। প্রতিপক্ষের আঘাতে মোমিনুর, বাপ্পি, হাবিবুর গুরুত্বর আহত হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। অপরদিকে ওই পক্ষের রুহুল আমিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। সেই কারণে রুহুল আমিনের ছেলে কাওছার আলম বাদী হয়ে আঃ মোতালেব সহ তার ৫ ছেলে ও নাতীকে মিলে ১৪ জনের বিরুদ্ধে ডোমার থানায় মামলা নং- ০৯, তারিখ- ২৫/০৭/২০২০ইং দায়ের করে। তাদের দেয়া মামলার কারণে আঃ মোতালেব, স্ত্রী আলেমা বেগম, ছেলে আশেকে এলাহীকে গ্রেফতার করে জেলা কারাগারে পাঠায় পুলিশ। তারা সকলে কারাগারে আটক থাকায় এবং অন্যন্য ছেলেরা পলাতক থাকার কারণে সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মোতালেবের সৎভাই আবু তালেব ভাতিজা আঃ কাদের, কাওছারসহ একদল সন্ত্রাসী মোতালেবের বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাংচুর ও মালামাল লুটপাট করে বলে অভিযোগ উঠেছে। যার কারনে আঃ মোতাােলবের ছেলে মোমিনুর রহমান বাদী হয়ে বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের বিষয়ে কাওছার সহ ২১ জনের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আমলী আদালতে পিটিশন মামলা নং- ২৪/২০ দায়ের করে। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে এফআইআর হিসাবে তদন্তের জন্য ডোমার থানায় প্রেরণ করেন। মামলাটি ডোমার থানার ওসি (তদন্ত) বিশ্বদের রায় তদন্ত করছেন। দীর্ঘ ৩ মাস হাজতে থেকে আব্দুল মোতালেব ও তার স্ত্রী আলেমা বেগম জামিনে মুক্তি পেয়ে বাড়িতে ফিরে আসলে ভাঙ্গাচুড়া ও তছনছ করা বাড়ি দেখে কান্নায় ভেঙ্গেপড়ে। সেখানে মানুষের বসবাসের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। ওই ভাঙ্গা বাড়িতে থাকতে গেলে প্রতিপক্ষরা স্বামী স্ত্রী দুই বৃদ্ধার উপর নির্যাতন শুরু করে। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে আঃ মোতাবেল ও তার স্ত্রী সন্তান পথে প্রান্তে ঘুরে ঘুরে খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে দেখা গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডোমার থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান জানান, কাওছার আলমের দেয়া হত্যা মামলায় ৩জন গ্রেফতার ছিল। উচ্চ আদালতের মাধ্যমে জামিনে আছে। অপরদিকে বাড়িঘর ভাংচুরের মামলাসহ হত্যা মামলাটি সুষ্ঠ তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। স্বাক্ষী প্রমানের ভিত্তিতে বিজ্ঞ আদালত রায় প্রদান করবেন।