সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৭ পূর্বাহ্ন

অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছে ১২ ছাত্রসংগঠন

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ২৬ মে, ২০২১

অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে ১২ ছাত্রসংগঠন। গতকাল মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্র নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনায় দেশের শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি সরকারের অবহেলা ও উদাসীনতায় জাতি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এ অবস্থা অব্যাহত থাকায় শিক্ষার্থীরা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। সরকার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রশাসনের কান্ডজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত শুধু শিক্ষার্থীদের নয় বরং পুরো দেশবাসীকে বিক্ষুব্ধ করে তুলেছে। দেশের অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্য, দোকান, বাজার, মার্কেট, যানবাহনসহ সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চললেও শুধুমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ঢাকঢোল পিটিয়ে ভার্চুয়াল ক্লাসের কথা বলা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। করোনা পরিস্থিতিতে সরকার বিভিন্ন খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দিলেও আগামীর দেশগড়ার কারিগর লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীদের দূরবস্থাকে চতুরতার সাথে এড়িয়ে যাচ্ছে। করোনাকালে শিক্ষার্থীরা মানবেতর জীবন যাপন করলেও তাদের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করছে না। অন্যদিকে অতিরিক্ত হারে সেশন ফি-সহ অন্যান্য ফি-জরিমানা, বেতন বহাল রাখা হয়েছে। সরকার শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তামাশা শুরু করেছে। সরকার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রশাসনের সার্বিক দায়িত্বহীন আচরণে মনে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের প্রতি তাদের নূন্যতম কোন দায়বদ্ধতা নেই। এটা কোন সভ্য দেশের চিত্র হতে পারে না।

নেতৃবৃন্দ বলেন, দীর্ঘসময় স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। শিক্ষার্থীরা পড়াশুনায় মনোযোগ ও আগ্রহ হারাচ্ছে। অন্যদিকে শিশু-কিশোরদের মোবাইল এবং ইন্টানেটের প্রতি আসক্তি বাড়ছে এবং তরুণ-যুবকরা অহেতুক অতিরিক্ত সময় ইন্টারনেটে কাটাচ্ছে। এতে করে অনেকের আচরণগত সমস্যা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মানসিক ও মেধার বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তারা নিয়মতান্ত্রিক জীবনে অনভ্যস্ত হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। ফলে অনেকেই অনৈতিক কার্যকলাপ, নেশা ও উশৃঙ্খলতায় জড়িয়ে যাচ্ছে। উঠতি বয়সী শিক্ষার্থীদের মধ্যে কিশোর গ্যাং নামক ধ্বংসাত্মক সংস্কৃতির প্রসার ঘটছে। এছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় উচ্চ শিক্ষিত বেকার শিক্ষার্থীদের বিরাট অংশ চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারছেন না। অনেকের বয়সও শেষ হয়ে গেছে। ফলে তাদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। যার ফলে নৈতিক অবক্ষয়সহ দেশ নানামুখী সংকটের দিকে ধাবিত হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ক্ষতি ভয়াবহতা সুদূরপ্রসারী তাতে সন্দেহ নেই। যা অভিভাবকদের জন্য সীমাহীন উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পক্ষ থেকে জোর দাবী উঠেছে। তাদের দাবি যৌক্তিক এবং এ দাবী শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ারের সাথে জড়িত। এ ব্যাপারে বিবেকবান সকলেই একমত। শিক্ষার্থীরা আগে থেকেই বার বার এ দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু সরকার কোনভাবেই তাদের দাবির প্রতি কর্ণপাত করেনি। ফলে তারা রাস্তায়ও নেমে এসেছিলো। এ অবস্থায় আমরা সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়ে বলতে চাই, সরকারকে অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হল খুলে দিতে প্রয়োজনে অর্থ বরাদ্দ করে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। চাকুরিতে প্রবেশে বয়সের সময় বৃদ্ধি করতে হবে। অন্যথায় শিক্ষার্থীদের প্রতি এমন দায়িত্বহীন আচরণ অব্যাহত রাখলে সারাদেশে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটবে। আর তখন কোন অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তার দায়ভার সরকারকেই বহন করতে হবে।
বিবৃতি প্রদানকারী ছাত্রনেতৃবৃন্দ হচ্ছেন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি সালাহউদ্দিন আইউবী, জাতীয় ছাত্রসমাজের (কাজী জাফর) সভাপতি কাজী ফয়েজ আহমেদ, জাগপা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রহমান ফারুকী, বাংলাদেশ ছাত্র মিশনের (ইরান) সভাপতি সৈয়দ মুহাম্মদ মিলন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ মনির হোসাইন, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি জাকির বিল্লাহ, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সভাপতি সুহাইল আহমদ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসমাজের সভাপতি জাবের হোসাইন, ইসলামী ছাত্র খেলাফতের সভাপতি বাংলাদেশ আবুল হাসিম শাহী, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিসের সভাপতি তারেক বিন হাবিব, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি সৈয়দ মো: মহসিন, জাতীয় ছাত্র পার্টির সভাপতি সোহেল রানা।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com