প্রস্তাবিত ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বাজেটে কিছু পণ্যের ভ্যাট, আমদানি শুল্ক, আগাম কর অথবা সম্পূরক শুল্কে ছাড় দেয়ায় হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দাম কমতে পারে। প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ের ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এছাড়া থ্রেসার মেশিন, পাওয়ার রিপার, পাওয়ার টিলার, অপারেটেড সিডার, কম্বাইন হারভেস্টর, রোটারি টিলার, নিড়ানি ও ঝাড়াইকলের আমদানি পর্যায়ের আগাম কর অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। ফলে দাম কমতে পারে এসব পণ্যের। উৎপাদন পর্যায়ে মুড়ির ভ্যাট অব্যাহতি দেয়ায় প্যাকেটজাত মুড়ির দাম কমতে পারে। ব্যবসায়ী পর্যায়ে তাজা ফলের ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার করায় কমতে পারে ফলের দাম। সিসিভেদে মাইক্রোবাস আমদানিতে শুল্ক কমানো হয়েছে। এছাড়া হাইব্রিড গাড়ির সম্পূরক শুল্কে কমানো হয়েছে। তাই জ্বালানি বান্ধব গাড়ির দাম ও মাইক্রোবাসের দাম কমতে পারে।
এছাড়া ওয়াশিং মেশিন, মাইক্রোওয়েভ ওভেন ও ইলেকট্রিক ওভেন: উৎপাদন পর্যায়ের ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। ব্লেন্ডার, জুসার, মিক্সার, গ্রাইন্ডার, ইলেক্ট্রিক কেটলি, রাইস কুকার, মাল্টি কুকার, প্রেসার কুকারের দাম কমতে পারে। প্রস্তাবিত বাজেটে স্পিনিং মিলে ব্যবহূত পেপার কোনের ওপর বিদ্যমান মূল্য সংযোজন কর ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। দাম কমছে নির্মাণ সামগ্রীর। এসব সামগ্রীর মধ্যে ইট, বালি , রড ও সিমেন্ট জাতীয় সামগ্রীর দাম কমেছে। স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত স্যানিটারি ন্যাপকিনের ওপর প্রযোজ্য সমুদয় ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি স্যানিটারি ন্যাপকিন ও ডায়াপার উৎপাদনের লক্ষ্যে কতিপয় কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা দুই বছর বাড়ানো হয়েছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে কোভিড-১৯ টেস্ট কিট, পিপিই এবং ভ্যাকসিন আমদানি উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা বহাল রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে।
দাম বাড়তে পারে যেসব পণ্যের:
প্রস্তাবিত ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বাজেটে কিছু পণ্যের শুল্ক-করহার বাড়ানো হয়েছে। বাজেটে শুল্ক-করের যে প্রস্তাব দেওয়া হয় তা ঘোষণার পরই কার্যকর হয়। ফলে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদে বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বেশ কিছু পন্যে শুল্ক-করহার বাড়ানোর প্রস্তাব করেন।
আমদানি করা বিলাসী পণ্য যেমন- বডি স্প্রে ও প্রসাধনী পণ্যে নতুন করে শুল্ক আরোপ হতে পারে। ফলে এসব পণ্যের দাম আরেক দফা বাড়বে।
অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের কারণে এবার বাড়বে সিগারেটসহ বিভিন্ন ধরনের তামাকজাত পণ্যের দাম। এসব পণ্যে স্ল্যাব অনুসারে শুল্ক আরোপ হচ্ছে। দেশীয় পণ্য সুরক্ষায় শুল্ক আরোপের কারণে আমদানি করা স্মার্ট ফোনের দাম আরেক দফা বাড়বে। সেক্ষেত্রে সুবিধা পাবে দেশীয় কোম্পানিগুলো।
নতুন বাজেটে আমদানি করা মাশরুমের ওপর শুল্ক আরোপ করা হবে, ফলে দাম বাড়বে এর। আর অগ্রিম কর আরোপের কারণে দাম বাড়বে অ্যালকোহল জাতীয় মাদক দ্রব্যের। এছাড়াও ভ্যাট আরোপের কারণে খুচরা পর্যায়ে স্যানেটারি টেবিল ওয়্যার, কিচেন ওয়্যার ও টাইলসের দাম বাড়তে পারে। এদিকে চার্টার্ড বিমান ও হেলিকপ্টার ভাড়ার ওপর সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। কার ও এসইউভির নিবন্ধন খরচও বাড়ছে, খরচ বাড়বে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত লঞ্চ সার্ভিসের। দেশীয় কৃষিপণ্য সুরক্ষায় আমদানি করা গাজর, ক্যাপসিকাম, কাঁচামরিচ, টমেটো ও কমলা আমদানিতে ন্যূনতম শুল্কায়ন মূল্য আরোপের কথা বলা হয়েছে। এতে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে। মাংস আমদানিতে শুল্কহার বাড়ানো হয়েছে। এতে বিদেশি মাংসের দাম বাড়বে। শিল্প লবণের ওপর কর বাড়ানো হয়েছে। বিস্কুট ও সমজাতীয় সুগার কনফেকশনারির ওপর সম্পূরক শুল্ক ২০ বাড়িয়ে ৪৫ শতাংশ করা হয়েছে। এতে দাম অনেকটাই বাড়তে পারে।