শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৫ অপরাহ্ন

রোগী বাড়ছে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আশংকা

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ১৩ জুন, ২০২১

সীমান্তবর্তী জেলা ছাড়িয়ে করোনা রোগী বাড়ছে পাশের জেলাগুলোতেও। সামাজিক সংক্রমণ হয়েছে ভারতীয় তথা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের। গত সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে সংক্রমণের হার বেড়েছে ২৭ শতাংশেরও বেশি।

স্বাস্থ্য অদিধফতর জানিয়েছে চলতি সপ্তাহে রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৫ হাজার ১৭২ জন। গত সপ্তাহে শনাক্ত হয়েছিলেন ১১ হাজার ৯২৮ জন। আগের সপ্তাহের চেয়ে বেড়েছে ২৭ দশমিক ২০ শতাংশ। দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হারও বেড়েছে। অধিদফতর জানায়, চলতি সপ্তাহে করোনায় মারা গেছেন ২৭৯ জন। গত সপ্তাহে মারা গিয়েছিলেন ২৫২ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানাচ্ছে, সংক্রমণের হার বাড়ায় গতমাসের মতো স্বস্তিতে যাবে না চলতি জুন। এর বড় কারণ সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে সংক্রমণের হার। এর মাঝে সরকারঘোষিত বিধিনিষেধে শিথিলতা এলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে। রোগী সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বগতিতে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই ঢাকায় রোগীর চাপ বেশি ছিল। কারণ ঢাকার বাইরে আইসিইউ ও অন্যান্য চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি রোগীরা সন্তুষ্ট নন। অনেক জায়গায় এখনও আইসিইউ নেই, সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইনও নেই। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে, দেশে করোনা রোগীদের জন্য জেনারেল বেড রয়েছে ১১ হাজার ৯৭২টি। এখন রোগী ভর্তি আছেন তিন হাজার ৯৯ জন। বেড ফাঁকা রয়েছে আট হাজার ৮৭৩টি। আইসিউ রয়েছে এক হাজার ১৩৫টি। তাতে ভর্তি আছেন ৩৭০ জন। সারা দেশে অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে ২৩ হাজার ৩৬৪টি। হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা রয়েছে এক হাজার ৬০২টি আর অক্সিজেন কনসেনট্রেটর রয়েছে এক হাজার ৬১৯টি।
গত মার্চে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হলে বন্ধ হয়ে যাওয়া হাসপাতালগুলোর কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। কিন্তু সেসময় রোগীরা আইসিইউ পায়নি, পায়নি সাধারণ বেডও। আইসিইউর অভাবে অ্যাম্বুলেন্সে ঘুরতে ঘুরতেই মারা গিয়েছিলেন অনেকে। এবার সংক্রমণের চাপ বাড়লে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি নজর দিতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটিও বলছে, দেশে করোনাভাইরাসের বড় আকারে সংক্রমণ হলে চিকিৎসা ব্যবস্থা বিরাট চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। যেমনটি দেখা গেছে পাশের দেশ ভারতে। কমিটি বলছে, ভারত এখনও এই চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
তৈরি হচ্ছে সীমান্তবর্তী হাসপাতালগুলো: সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি রয়েছে সীমান্তবর্তী বিভাগ রাজশাহীতে। সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় (১১-১২ জুন) শনাক্ত হয়েছেন ৩৪৫ জন। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগী বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ বেড ও আইসিইউ বাড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী। তিনি বলেন, গতবছর করোনা সংক্রমণের শুরুতে এ হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য প্রথমে ছিল ৬৫টি বেড। দ্বিতীয় ঢেউয়ে সেটা বাড়িয়ে হয় ১৬৫টি। এখন আছে ২৭১টি। সবগুলোতেই সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন রয়েছে। এর সঙ্গে রয়েছে আরও অতিরিক্ত বেড। সেখানে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর দিয়ে রোগী ম্যানেজ করা হচ্ছে। আগে এ হাসপাতালে আইসিইউ বেড ছিল ১০টি। এবার বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৮টি। রোগী বাড়লে বেড আরও বাড়ানো হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আর বড়জোর দুটো বাড়ানো যাবে, এর বেশি নয়। তবে পাশাপাশি একটি ওয়ার্ড তৈরি হয়েছে জানিয়ে পরিচালক ইয়াজদানী বলেন, ৪৮ বেডের ওই ওয়ার্ডে আইসিইউর কাছাকাছি সব সুবিধাই রয়েছে। রোগী অনেক বাড়ছে। তবে এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) ডা. ফরিদ হোসেন মিঞা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আগে ঢাকায় রোগী বেশি ছিল, এবার বাইরে থেকে রোগী আসছে।’
তবে বাইরে যেসব জায়গায় রোগী বাড়ছে সেসবের মধ্যে যেখানে আইসিউ ছিল না, সেখানে আইসিইউ দেওয়া হয়েছে। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ভোলায় আসিইউ ছিল না। সেখানে আইসিইউ সেটআপ হচ্ছে। জনবল দেওয়া হচ্ছে এবং তাদের প্রশিক্ষণও চলছে। শুধু ফরিদপুর সদর হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেনের কাজ এখনও শুরু হয়নি।
নাটোর, পঞ্চগড়েও আইসিইউ ছিল না। সেখানকার জন্য ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়েছে জানিয়ে ডা. ফরিদ হোসেন মিঞা বলেন, শুধু আইসিইউ সেটআপ করলেই সমস্যার সমাধান হবে না। এর জন্য যথেষ্ট পরিমাণ প্রশিক্ষিত চিকিৎসকসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী দরকার।
তিনি বলেন, ঢাকায় রোগীদের জন্য ডিএনসিসি মার্কেট হাসপাতালটি প্রস্তুত করা হয়েছে। মহানগর হাসপাতাল এবং লালকুঠি হাসপাতালে অক্সিজেন লাইনসহ আইসিইউ প্রস্তুত করা হয়েছে। রোগীর চাপ নেই বলে এখনও সেটা চালু হয়নি।
প্রভাব পড়বেই: তবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরার্মশক কমিটির অন্যতম দুই সদস্য। কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান বলেন, ‘রোগী বাড়ছে আর এর প্রভাব পড়বেই। ভারতের মতো যদি বাংলাদেশে রোগী বাড়ে তবে বাংলাদেশের পক্ষে তা সামাল দেওয়া কঠিন হবে। আমরা বারবার এটা বলে এসেছি। পরামর্শক কমিটিও এ নিয়ে কথা বলেছে।’
অধ্যাপক ইকবাল আর্সলান বলেন, ‘এবার অক্সিজেন লাগছে বা আইসিইউ লাগছে এমন রোগীর সংখ্যাই বেশি। সমস্যা সেখানেই। এটা আগে থেকেই ভাবার দরকার ছিল। এসব কাজ বাস্তবায়নে যারা নিয়োজিত রয়েছেন, তাদেরও ব্যাখ্যা রয়েছে নানান রকম। কিন্তু সেই ব্যাখ্যা কতটুকু গ্রহণযোগ্য, এটা বড় প্রশ্ন।’
‘যেখানেই রোগী বাড়ছে, সেখানেই চিকিৎসা ব্যবস্থার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে বলে আমরা গণমাধ্যমেই দেখছি।’ বললেন পরামর্শক কমিটির আরেক সদস্য অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। তিনি আরও বলেন, গতবছরের জুনে প্রধানমন্ত্রী সব জেলা হাসপাতালে আইসিইউ স্থাপনের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কিন্তু সব জায়গায় এখনও নেই। সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে যেখানে রোগী বেড়েছে সেখানেও সব হাসপাতালে আইসিইউ নেই।
এদিকে, করোনা আক্রান্ত হলেই সব রোগীর হাসপাতালে যাবার দরকার নেই জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের পাবলিক হেলথ অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য আবু জামিল ফয়সাল।
‘রোগী বাড়ছে, বাড়বে। এটা এভাবে বাড়তে থাকলে চিকিৎসা ব্যবস্থায় চাপ পড়বে জানিয়ে আবু জামিল ফয়সাল বলেন, করোনা আক্রান্ত হলেই হাসপাতালে যেতে হবে না, এটাও বুঝতে হবে। অনেক রোগীই বাসায় থেকে সুস্থ হতে পারবেন কেবল ব্রিদিং এক্সারসাইজসহ নিয়ম কানুন মেনে। এ কথাও মানুষকে জানাতে হবে। এখানে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে।’
গাংনীর সীমান্তবর্তী এক গ্রামেই ১৩ জন করোনা আক্রান্ত: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সীমান্তবর্তী তেঁতুলবাড়ীয়া গ্রামে ১৩ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মেহেরপুর জেলার তিনটি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ৩৭ জনের করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্েেয গাংনী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ২৩ জন। তবে উপজেলার সীমান্তবর্তী তেঁতুলবাড়ীয়া গ্রামেই ১৩ জন, মেহেরপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ৯ জন ও মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ৫ জন। মেহেরপুর সিভিল সার্জন ডাক্তার নাসির উদ্দীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মেহেরপুর সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, নতুন প্রাপ্ত রিপোর্টের ১০২টির মধ্যে পজিটিভ ৩৭ জনের। এ নিয়ে জেলায় এ পর্যন্ত ১৫৪ জনের পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মেহেরপুর সদরে ৩০, গাংনীতে ৭৬ ও মুজিবনগর উপজেলায় ৪৮ জন। জেলায় এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ২৬ জন। এর মধ্যে মেহেরপুর সদরে ১০, গাংনীতে ১০ ও মুজিবনগর উপজেলায় ৬ জন। আক্রান্তের মধ্যে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৯১৬ জন।
এদিকে মেহেরপুর জেলার গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার সীমান্তঘেঁষা গ্রামগুলোতে করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। ভারতে বেশি আক্রান্ত হওয়ার কারণে এ রোগে সীমান্তবর্তী গ্রামে প্রভাব বিস্তার করছে।
কারণ মেহেরপুরের সীমান্তের ওপারে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলা। এ জেলার করিমপুর, তেহট্টি ফুলবাড়িয়া, বারুইপোতা, খানজিপুর, মোবারকপুর, লালবাজার , কৃষ্ণনগর, বেতায়, গোবিন্দপুর, হৃদয়পুর, সাহাপুর, নবীননগর গ্রাম। সীমান্ত সিলগালা থাকা সত্ত্বেও সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে শত শত ভারতীয় কৃষকরা প্রবেশ করছেন নোমান্সল্যান্ডে। ফলে দু’দেশের কৃষকরা পাশাপাশি মাঠের ক্ষেতে কাজ করছেন। ক্ষেতে কাজ করার সময় দু’দেশের কৃষকরা কখনও কখনও এক সাথে মেলামেশা করছেন।
গাংনীর সীমান্তবর্তী মৈত্রাপুর গ্রামের কৃষক মোকাদ্দেস আলী জানান, আমরা সীমান্তবর্তী গ্রামে বসবাস করি। মাত্র কয়েকশ’ মিটার দূরে ভারত। তফাৎ শুধু কাঁটাতার। একই জমির পাশাপাশি কাজ করতে হলে, দু’দেশের কৃষকদের মেলামেশা স্বাভাবিকভাবে হয়ে ওঠে।
করোনার এ প্রভাব বিস্তারের ফলে মেহেরপুর জেলার গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলায় লগডাউন খুবই জরুরি বলে মনে করছেন এলাকার সচেতনমহল।
রামেক হাসপাতালে তেরো দিনে ১২৫ জনের মৃত্যু: রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রবিবার (১৩ জুন) জানানো তথ্যে বলা হয়, মৃতদের ছয় জন করোনা পজিটিভ ছিল। বাকিরা উপসর্গ নিয়ে মারা যান। মৃতদের মধ্যে ১২ জন পুরুষ ও একজন নারী রয়েছেন। এ নিয়ে গত ১৩ দিনে (১ জুন সকাল থেকে ১৩ জুন সকাল পর্যন্ত) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেলেন ১২৫ জন।
হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, শনিবার সকাল ৮টা থেকে রবিবার সকাল ৮টার মধ্যে বিভিন্ন সময় ১৩ জন মারা যান। এদের মধ্যে রাজশাহীর দুই জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ছয় জন, নওগাঁর তিন জন, নাটোর ও কুষ্টিয়ার একজন করে রয়েছেন। মারা যাওয়া করোনা শনাক্তদের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাঁচ জন ও নওগাঁর একজন ছিলেন বলে জানান তিনি। এ নিয়ে গত ১৩ দিনে (১ জুন সকাল থেকে ১৩ জুন সকাল পর্যন্ত) এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেলেন ১২৫ জন। এর মধ্যে ৭০ জনই মারা গেছেন করোনা শনাক্ত হওয়ার পর। বাকিরা উপসর্গ নিয়ে মারা যান।
পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন ৪২ জন। ছুটি নিয়েছেন ৩৫ জন। ২৭১ বেডের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছেন ২৯৪ জন। অতিরিক্ত রোগীদের বিকল্পভাবে বেড বাড়িয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। নতুন ভর্তি রোগীদের মধ্যে রাজশাহীর ২৭ জন, চাঁপাইনবাগঞ্জের সাত জন, নাটোরের তিন জন ও নওগাঁর পাঁচ জন রয়েছেন। ভর্তি ২৯৪ জনের মধ্যে রাজশাহীর ১৩০, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ১০৮, নাটোরের ১৪, নওগাঁর ২৮, পাবনার চার ও কুষ্টিয়ার একজন রয়েছেন। হাসপাতালের আইসিইউতে ১৮ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com