মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়াঘাটের অদূরে ইলিশ মাছের আদলে নির্মিত দপ্রজেক্ট হিলসা’ রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। বুধবার বেলা ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত প্রজেক্ট হিলসাতে মুন্সীগঞ্জ জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আসিফ আল আজাদ অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় তিনি সেখানে রেঁস্তোরাটির নানা অনিয়ম দেখতে পান। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি ভোক্তা অধিকার।
আসিফ আল আজাদ বলেন, প্রজেক্ট হিলসাতে গিয়ে বাবুর্চিদের ও কর্মচারীদের টয়লেটে কোনো সাবান পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া সেখানে কোনো টিস্যুও পাওয়া যায়নি। টয়লেট ব্যবহারের পর তারা পানি দিয়ে হাত পরিস্কার করেন। এর আগে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি দাম রেখে সমালোচনার মুখে পড়ে এ প্রতিষ্ঠানটি।
স¤প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ভোক্তার খাবারের দামের একটি বিল ভাইরাল হয়। তারপরই নানা আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে। এবার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে ভোক্তা অধিকারের পর্যবেক্ষণে। ফ্রিজে কাঁচামাছ-মাংসের সঙ্গে রান্না করা খাবারও মজুত রাখা হয়েছিল, যা ঠিক নয়। সেই সাথে রেস্তোরাঁটিতে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) এর অনুমোদনহীন বিপুল পরিমাণের সস ও নুডলসও পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, ‘এসব পণ্যের ক্ষেত্রে অবশ্যই বিএসটিআইয়ের অনুমোদন লাগবে।’ প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন অনিয়মের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, সেখানে প্রায় ১০০ কর্মচারী রয়েছেন। তারা রান্নাঘরে ব্যবহারের স্যান্ডেল পরেই টয়লেটে যান। আবার সেই স্যান্ডেল রান্নাঘরে ব্যবহার করেন। তাদের টয়লেটের জন্য আলাদা কোনো স্যান্ডেল নেই। এটা খুবই অস্বাস্থ্যকর। সাধারণত মানুষ ঘরেও আলাদা আলাদা স্যান্ডেল ব্যবহার করে। কিন্তু এখানে চিত্রটি সর্ম্পূণই ভিন্ন।
এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে তাদেরকে কোনো জরিমানা করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ভোক্তা অধিকারের এই কর্মকর্তা বলেন, আমারা মূলত ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ সম্পর্কে অবহিত করা ও কিভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে সেই নিয়ম-কানুন সম্পর্কে তাদেরকে সচেতন করতে গিয়েছি। এ ঘটনায় প্রথমবারের মতো তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে। এ ছাড়া সংশোধন হওয়ার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। তিনি বলেন, একই অপরাধ আবার করলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। খাবারের মূল্য অতিরিক্ত রাখার বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আসিফ আল আজাদ বলেন, খাবারের মূল্য নির্ধারণ করবে যারা খাবার তৈরি করবে। সেখানে যদি মূল্য তালিকা লাগানো থাকে, সেক্ষেত্রে ক্রেতা দেখে খাবার কিনতে পারেন। এক প্লেট ভাতের দাম বা মাছের দাম কত তা প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করে, সরকার করে দেয় না। এটা মেনু তালিকায় লিখে রাখতে হবে অথবা মূল্য তালিকায় লিখে রাখতে হবে। তবে এর থেকে বেশি দাম নেয়া যাবে না। ভোক্তারা মেনু কার্ড দেখে খাবার খাবেন। ভোক্তার কাছে যদি মনে হয় দাম বেশি, তাহলে ওই ভোক্তা ওই রেঁস্তোরায় খাবার নাও খেতে পারেন। এটা ভোক্তার স্বাধীনতা। যদি মূল্য তালিকা না থাকে তাহলে তারা অপরাধ করেছে বলে গণ্য হবে। প্রজেক্ট হিলসার আরো অনেক ক্রটি রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা তাদের এসব ক্রটি-বিচ্যুতি সংশোধন করতে বলেছি।