বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৬ পূর্বাহ্ন

নায়িকা পরীমণিকে মারধরের কথা স্বীকার করেছে নাসির ও অমি

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ২০ জুন, ২০২১

ঢাকা বোট ক্লাবে চলচ্চিত্র নায়িকা পরীমণিকে মারধর করা হয়েছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামি জাপা নেতা নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও পরীমণির বন্ধু তুহিন সিদ্দিকী অমি। তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, রিমান্ডে থাকা নাসির ও অমি জিজ্ঞাসাবাদে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে সে দিনের ঘটনা সম্পর্কে খুলে বলেছে। তবে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ সম্পর্কে তারা এড়িয়ে গেছে। এ দিকে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কর্মকর্তারা বলছেন, গত ৯ জুন মধ্যরাতে ঢাকা বোট ক্লাবে নায়িকা পরীমণিকে ঘিরে ঘটনার সাথে একজন গার্মেন্ট মালিক জড়িত রয়েছেন। যিনি সে দিন ওই মুহূর্তে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। ডিবির একজন তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, তারা ওই পোশাক ব্যবসায়ীকে খুঁজছেন। তবে তদন্তের স্বার্থে তার নাম প্রকাশ করেননি।
ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে পরীমণির দায়ের করা মামলায় উত্তরা এক নম্বর সেক্টরের একটি বাসা থেকে গত সোমবার গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা ব্যবসায়ী ও উত্তরা ক্লাবের সাবেক প্রেসিডেন্ট নাসির ইউ মাহমুদসহ তুহিন সিদ্দিকী অমিকে গ্রেফতার করে। ওই মামলায় আরো চারজনকে আসামি করা হয়েছে। ওই অভিযানে গোয়েন্দা পুলিশ তিনজন নারীকেও গ্রেফতার করে। পাশাপাশি সেখান থেকে দেশী-বিদেশী মদ ও এক হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলায় নাসির ও অমিসহ গ্রেফতার তিন নারীর রিমান্ড চলছে।
এজাহারে পরীমণি লিখেছেন, শারীরিকভাবে নির্যাতন করার পাশাপাশি নাসির জোর করে খাওয়ানোর জন্য তার মুখে মদের বোতল ঠেসে ধরেন। এ ছাড়া অমিসহ অজ্ঞাতনামা চার ব্যক্তির সহযোগিতায় নাসির তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ দিকে নায়িকা পরীমণিকে বোট ক্লাবে ধর্ষণ-হত্যাচেষ্টার মামলার প্রধান আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদ গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাবেরও সদস্য। রাজধানীর অভিজাত ক্লাব সোসাইটির অন্যতম এই সংগঠক উত্তরা ক্লাবের সাবেক সভাপতি ছিলেন। পরীমণির মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর বোট ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটি থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়।
নাসির উদ্দিন মাহমুদ গ্রেফতার হওয়ার দুই দিন পর বুধবার রাতে অল কমিউনিটি ক্লাবের সভাপতি কে এম আলমগীর ইকবাল অভিযোগ করেন, গত ৮ জুন মধ্যরাতে পরীমণি ও তার সঙ্গীরা ওই ক্লাবে গিয়ে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটান। পরে পরীমণি এ বিষয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সে দিন রাতে অল কমিউনিটি ক্লাবে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে ভাঙচুরের ঘটনাকে অস্বীকার করে তিনি দাবি করেন, এই অভিযোগ বোট ক্লাবের ঘটনাকে আড়াল ও হালকা করার চক্রান্ত। মূল ঘটনা থেকে নজর সরাতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে অল কমিউনিটি ক্লাবের সভাপতি কে এম আলমগীর ইকবাল বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে বলেন, নাসির উদ্দিন মাহমুদ আমাদের ক্লাবেরও একজন সদস্য। এক সময় তিনি আসা-যাওয়া করলেও অনেক দিন ধরেই আসেন না। তবে এখনো তার সদস্যপদ আছে।
নাসির গ্রেফতার হওয়ার পর তার পক্ষ নিয়ে পরীমণির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হচ্ছে কি না, জানতে চাইলেও অল কমিউনিটি ক্লাবের সভাপতি বলেন, এ রকম ভাবার কোনো কারণ নেই। আমরা কারো পক্ষে বা বিপক্ষে যেতে চাই না। ওই দিন রাতে ক্লাবে একটি ঘটনা ঘটেছিল বলেই বিষয়টি সামনে এনেছি। পরীমণি কিংবা নাসির উদ্দিন, কারো ব্যাপারেই আমাদের কিছু বলার নেই। আমরা ভাঙচুরের ঘটনায় পরীমণির বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেইনি। আমাদের ক্লাবের যে সদস্যের অতিথি হয়ে তিনি এসেছিলেন, বিষয়টি তাকে জানিয়েছি। যে কয়েকটা গ্লাস-প্লেট ভেঙেছে সেগুলোর দাম তিনিই পরিশোধ করবেন।
পরীমণির এই ভাঙচুরের ঘটনা আট দিন পর কেন প্রকাশ করা হলো? জবাবে কে এম আলমগীর ইকবাল বলেন, আমরা এ ঘটনা সম্পর্কে কোনো অভিযোগ করিনি। পরীমণি নিজেই ট্রিপল নাইনে কল করেছিলেন। ওই সূত্রেই বিষয়টি সামনে এসেছে। পরে বিষয়টি ব্যাখা করতেই সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেছি। ভাঙচুরের ঘটনায় পরীমণির বিরুদ্ধে ক্লাব কর্তৃপক্ষের মামলা করার কোনো ইচ্ছে বা পরিকল্পনা নেই বলেও জানান অল কমিউনিটি ক্লাবের সভাপতি।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com