সোমবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সুপার লিগের ম্যাচে গাজী গ্রুপের বিপক্ষে প্রায় হারতে বসেছিল আবাহনী। তবে শেষ পর্যন্ত বড় বাঁচা বেঁচে গেছে মুশফিকুর রহীমের দল। কোনোমতে ১ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে।
তবে দল জিতলেও মুশফিকের জন্য দুঃসংবাদ। ওই ম্যাচে ফিল্ডিংয়ের সময় বরাবরের মতো উইকেটের পেছনে গ্লাভস হাতে ছিলেন মুশফিক। ম্যাচের এক পর্যায়ে সতীর্থ ফিল্ডারের থ্রো রিসিভ করতে গিয়ে ডান হাতের আঙুলে ব্যথা পান তারকা এই উইকেটরক্ষক।
গতকাল (মঙ্গলবার) স্ক্যান করানো হয়েছে মুশফিকের হাতের। তাতে বড় কিছু ধরা পড়েনি। তবে সূক্ষ্ম চিড় আছে। তাই বিশ্রামের প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে সুপার লিগের বাকি ম্যাচগুলো আর খেলা হচ্ছে না আবাহনী অধিনায়কের। বিসিবির অন্যতম পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজনকে জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন এই তথ্য।
সামনে জিম্বাবুয়ে সফর। মুশফিককে নিয়ে কি তবে শঙ্কা আছে ওই সফরেও? সুজন জানালেন, না, ওমন শঙ্কা নেই। জিম্বাবুয়ে সফরের আগেই দলের অন্যতম সেরা এই পারফরমার ফিট হয়ে উঠবেন, সুজনের।
তামিম ইকবালের হাঁটুর ইনজুরি। সাকিব আল হাসান চলে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রে স্ত্রী-সন্তানদের কাছে। এবার ডান হাতের আঙুলে চিড় নিয়ে সুপার লিগের শেষ তিন ম্যাচের আগে ছিটকে গেলেন আবাহনী অধিনায়ক। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এসে রং হারাল অনেকটাই।
সাকিব আল হাসানের মতো আইপিএল, বিগ ব্যাশ, সিপিএল আর পিএসএলসহ বিশ্বের সব নামী ফ্র্যাঞ্চাইজি আসর খেলে বিশ্বজোড়া খ্যাতি অর্জন করা হয়তো সম্ভব হয়নি মুশফিকের। সাকিবের মতো বিশ্বকাপে ৬০০+ রান করে হৈ চৈ ফেলে দিতেও পারেননি। জাতীয় দলের হয়ে সাকিব সবচেয়ে কার্যকর। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের ব্যাট ও বল দুই-ই টিম বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ। কিন্তু এবার ঘরোয়া ক্রিকেটে সাকিব ততটা প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি।
কাগজে-কলমে অনেক বড় তারকা, সুপারস্টার সাকিব ঢাকা লিগে সবচেয়ে দামি ক্রিকেটারও। তাকে পেতে সবচেয়ে বেশি অর্থ লগ্নি করতে হয় ক্লাবগুলোকে। এবারও মোটা অংকের টাকায় সাকিবকে কিনেছে মোহামেডান।
কিন্তু বাস্তবতা হলো, ঢাকা লিগে সাকিব কখনও লিগ নির্ধারক হতে পারেননি। যে সাকিব জাতীয় দলের হয়ে সব ফরম্যাটে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারীর তালিকায় শীর্ষ তিনে, যিনি দেশের সর্বাধিক উইকেট শিকারি, সেই সাকিব কিন্তু ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত একবারও টপ স্কোরার ও সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হতে পারেননি।
কিন্তু সেখানেই ব্যতিক্রম মুশফিক। জাতীয় দলের মতো মুশফিক বরাবরই ঘরোয়া ক্রিকেটেও টপ পারফরমার এবং দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ক্রিকেটার। দলের বিপদে, সংকটে আর বিপর্যয়ে মুশফিকের ব্যাটই সবচেয়ে বিশ্বস্ত। একবার নয়, প্রায় প্রতি বছর ঢাকা লিগের শীর্ষ রান সংগ্রকারীদের মধ্যে থাকেন তিনি।
এবারের লিগেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। এখন পর্যন্ত প্রথম লেগ আর সুপার লিগের দুই ম্যাচসহ ১৩ ম্যাচে দুই ফিফটিসহ ২৬৭ রান করেছেন মুশফিক। যার মধ্যে অন্তত তিন থেকে চারটি ছিল ম্যাচ জেতানো ইনিংস। সুপার লিগের শেষ তিন ম্যাচে তাই তার অভাবটা ভালোই বোধ করবে আবাহনী।