চলতি বছর জনপ্রতি সর্বনিম্ন ফিতরা ৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সোমবার (৪ মে) বায়তুল মোকাররম মসজিদের পূর্ব সাহানে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মাওলানা মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে জাতীয় ফিতরা নির্ধারণ কমিটির সভায় এই হার নির্ধারণ করা হয়।
উৎকৃষ্ট লাল আটার ৪২ টাকা দর ধরে ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
গত বছরও ফিতরার সর্বনিম্ন হার ৭০ টাকাই ছিলো।
এদিকে সর্বোচ্চ ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে ২২০০ টাকা। পনিরের দর হিসাব করে এটা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ফিতরা বা সদকাতুল ফিতর হলো- সেই নির্ধারিত সদকা, যা ঈদের নামাজের আগে প্রদান করতে হয়। ঈদের দিন সকালবেলায় যিনি নিসাব পরিমাণ সম্পদের (সাড়ে সাত ভরি সোনা বা সাড়ে বাহান্ন ভরি রুপা বা সমমূল্যের ব্যবসাপণ্যের) মালিক থাকবেন, তার নিজের ও পরিবারের ছোট–বড় সবার পক্ষ থেকে ফিতরা আদায় করা তার প্রতি ওয়াজিব।
যারা নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক নন, তাদের জন্যও ফিতরা আদায় করা সুন্নত ও নফল ইবাদত।
ফিতরা সম্পর্কিত হাদিসগুলো পর্যালোচনা করলে এ বিষয়ে মোট পাঁচ প্রকার খাদ্যের বর্ণনা পাওয়া যায়- যব, খেজুর, পনির, কিসমিস ও গম।
হাদিসে এ ৫টি দ্রব্যের যেকোনোটি দ্বারা ফিতরা আদায়ের সুযোগ দেওয়া হয়েছে যেন মুসলমানগণ নিজ নিজ সামর্থ্য ও সুবিধা অনুযায়ী এর যেকোনো ১টি দ্বারা তা আদায় করতে পারেন।
সভায় সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, ইসলামি শরিয়া মতে আটা, যব, গম, কিসমিস, খেজুর ও পনির ইত্যাদি পণ্যগুলোর যেকোনো একটি দ্বারা ফিতরা প্রদান করা যায়।
আটা দ্বারা ফিতরা আদায় করলে অর্ধ সা’ বা ১ কেজি ৬শ’ ৫০ গ্রাম বা এর সর্বোচ্চ বাজার মূল্য ৭০ (সত্তর) টাকা প্রদান করতে হবে।
যব দ্বারা আদায় করলে এক সা’ বা ৩ কেজি ৩ শ’ গ্রাম বা এর সর্বোচ্চ বাজার মূল্য ২৭০ (দুইশ সত্তর) টাকা, গম দ্বারা আদায় করলে অর্ধ সা’ বা ১ কেজি ৬শ’ ৫০ গ্রাম বা এর সর্বোচ্চ বাজার মূল্য ৭০ (সত্তর) টাকা, কিসমিস দ্বারা আদায় করলে এক সা’ বা ৩ কেজি ৩শ’ গ্রাম বা এর সর্বোচ্চ বাজার মূল্য ১৫০০ (এক হাজার পাঁচশ) টাকা, খেজুর দ্বারা আদায় করলে এক সা’ বা ৩ কেজি ৩ শ’ গ্রাম বা এর সর্বোচ্চ বাজার মূল্য ১৬৫০ (এক হাজার ছয়শত পঞ্চাশ) টাকা, পনির দ্বারা আদায় করলে এক সা’ বা ৩ কেজি ৩ শ’ গ্রাম বা এর সর্বোচ্চ বাজার মূল্য ২২০০ (দুই হাজার দুইশ) টাকা ফিতরা প্রদান করতে হবে।
দেশের সকল বিভাগ থেকে সংগৃহীত আটা, যব, গম, কিসমিস, খেজুর ও পনিরের সর্বোচ্চ বাজার মূল্যের ভিত্তিতে উপর্যুক্ত ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে। মুসলমানগণ নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী উপরোক্ত পণ্যগুলোর যেকোনো একটি পণ্য বা এর বাজার মূল্য দ্বারা ফিতরা আদায় করতে পারবেন।
তবে উপরোক্ত পণ্যসমূহের স্থানীয় খুচরা বাজার মূল্যের তারতম্য রয়েছে। তদানুযায়ী স্থানীয় মূল্যে পরিশোধ করলেও ফিতরা আদায় হবে।
সভায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ, শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম মাওলানা ফরীদ উদ্দিন মাসউদ, জাতীয় মুফতি বোর্ডের সদস্য সচিব মো. নুরুল আমীন, লালবাগ মাদরাসার মুফতি মো. ইয়াহিয়া, মদিনাতুল উলুম কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আবদুর রাজ্জাক, ঢাকা নেসারিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা কাফীলুদ্দীন সরকার সালেহী, কাদেরিয়া তৈয়্যেবিয়া কামিল মাদ্রাসার প্রধান মুফতি মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসান, জামিয়া আশরাফিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আ. আলীম ফরিদী, জামিয়া শারইয়্যাহ মাদরাসার সহকারী মুফতি আব্দুল্লাহ মাসুম, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক মো. আনিসুজ্জামান সিকদার, মো. আনিছুর রহমান সরকার, উপ-পরিচালক ও মুহাদ্দিস মুফতি ওয়ালিয়ূর রহমান খান, সম্পাদক ড. মাওলানা মুশতাক আহমদ, সম্পাদক ড. মাওলানা আবদুল জলীল, মুফাসসির ড. মাওলানা মুহাম্মদ আবু সালেহ পাটোয়ারী, মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, ড. মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ, মিজানুর রহমান সাঈদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এমআর/প্রিন্স