সিরাজগঞ্জের তাড়াশের পাটের বাম্পার ফলনে আগ্রহ জাগছে কৃষকের। আগামীতে ব্যাপক পাট চাষ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবার পাট চাষে ভাগ্য খুলেছে চলনবিলাঞ্চলের চাষীদের। চলনবিলাঞ্চলের পাটের মাঠ এখন সবুজে ঘেরা। অনেক কৃষকই পাট কাটতে শুরু করেছেন। বিস্তির্ণ মাঠজুড়ে পাট কাটার এমন চিত্র এখন চোখে পরবে এলাকায়। পাটের বাম্পার ফলনে মাঠে মাঠে পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারাও পাটের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। পাটের বীজ, সার, কীটনাশকসহ অন্যান্য কৃষি উপাদানের দাম অনুকুলে থাকায় ও কৃষি অধিদফতরের উদ্যোগে এবং অফিসারদের পরামর্শে কৃষকেরা এবার পাট চাষ করেছেন। প্রতি বিঘা জমিতে চাষ করতে খরচ হয়েছে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছেন, গত বছরে ২শ ১০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছিল। কিন্তু এবার অফিসারগন কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে ৫শ ৯৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করছেন। বেশ কয়েকটি উন্নত জাতের পাট চাষ করার পরামর্শ দেয়া হয়। যেমন দেশি, তোষা, মেশতা, রবি-১ মহারাষ্ট্র জাত।এসব জাতের পাট ১৫ থেকে ১৭ হাত লম্বা হয়। পাটের দাম বেশি পেলে চাষিরা পাট চাষে আরও আগ্রহী হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের ঘরগ্রামের পাট চাষী আগের আলী জানান, চলতি মৌসুমে দুই বিঘা জমিতে পাটের চাষ করেছিলাম। প্রতি বিঘায় ফলন পেয়েছি ১০ মণ। কৃষি বিভাগ থেকে আবারো সার্বিক সহযোগিতা পেলে সামনে পাটের আবাদ আরও করবো। স্থানীয় আরেক জন পাট চাষী জবান আলী ফকির বলেন, আমরা পাট কাটা, জাগ দেওয়া, পাট ছড়ানো ও শুকানো নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছি। এবার খালে পানি থাকায় পাট জাগ দিতে কোনও সমস্যা হয়নি। এছাড়া, পাটের ফলন ভালো হওয়ায় প্রতি মন পাট ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চলনবিলে অবস্থিত তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার লুুৎফুন্নাহার লুনা বলেন, চলনবিলাঞ্চলে পাটের আবাদ ভালো হয়েছে। বাংলাদেশের ঐতিহ্য সোনালি আঁশ হিসেবে পরিচিত পাট হারিয়ে যেতে বসেছিল। এই সোনালী আঁশ নাম ধরে রাখতেই আমরা এবার কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করেছি। ভাল বীজ সংগ্রহ ও বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে কৃষকের অর্থকরী ফসল পাট চাষ করানোর চেষ্টা করেছি। প্রতি বিঘা জমিতে ১০ থেকে ১২মন পাট হচ্ছে। বাজারে প্রতি মন পাট ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে বাজারে পাটের চাহিদা ও মূল্য বৃদ্ধির কারণে কৃষকদের পাট চাষে আগ্রহ জাগবে।