শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
জব্দ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর রিট আরেক হত্যা মামলায় সাবেক বিচারপতি মানিককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে মানহানির মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান উৎপাদনে ফিরলো কর্ণফুলী পেপার মিল ২০৫০ সালের মধ্যে ৪ কোটি মানুষের মৃত্যু হবে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সংক্রমণে দিল্লিতে মেয়ের সঙ্গে থাকছেন শেখ হাসিনা, দলবল নিয়ে ঘুরছেন পার্কে পিআইবির নতুন ডিজি ফারুক ওয়াসিফ, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের এমডি এম আবদুল্লাহ ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পোশাক শিল্প আইন আপনার হাতে তুলে নেয়ার কারো কোনো অধিকার নেই :স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা দেয়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে বললেন মির্জা ফখরুল

লকডাউনের কারণে আদমদীঘির গরুর খামারীরা দুশ্চিন্তায়

আদমদীঘি প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় বুধবার, ৭ জুলাই, ২০২১

কোরবানির ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার পশু খামারিদের দুশ্চিন্তা ততই বাড়ছে। কোভিট-১৯ করোনা ভাইরাসের প্রকোপে সারাদেশ লকডাউনের কারণে আসছে ঈদুল আযহায় গরু খামারিরা পশু বাজারে নিতে পারবেন কিনা, বাজারে নিলেও ক্রেতা মিলবে কিনা, ক্রেতা মিললেও দাম সঠিক পাবেন কিনা এসব নানান বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার খামারীরা। জানা গেছে, উপজেলায় দীর্ঘ দিন থেকে দেশীয় পদ্ধতিতে গবাদিপশু মোটাতাজা করেন খামারিরা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের এসব গরু বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করে থাকেন খামারীরা। গত বছর কোরবানির ঈদে জেলার স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে গরু ও ছাগল বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করেছেন খামারিরা। করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে গত ১লা জুলাই বৃহস্পতিবার থেকে কঠোর লকডাউনের পর থেকে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এ অঞ্চলের খামারিরা। এ তথ্য প্রযুক্তির যুগে গরু খামারী কেউ কেউ আবার অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক পেজের মাধ্যমে গবাদিপশুর তথ্য আপলোড দিয়ে বেচাকেনা করার কথা ভাবছে অনেক খামারী। কিন্তু এ প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের খামারীরা এ সব তথ্য প্রযুক্তি এখনো বুঝে উঠতে পারেনি বলে জানান অনেক খামারীর মালিক। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ছোট বড় মিলে প্রায় দুই হাজারেরও অধিক গরু ছাগলের খামার রয়েছে। এসব খামারে ২৫ হাজার বিভিন্ন জাতের গবাদি পশু মজুদ রয়েছে। এর মধ্যে ষাঁড় ১০ হাজার ৮শ টি ও ৬ হাজার ৯শ টি ছাগল রয়েছে। এছাড়া এলাকার কৃষকদের রয়েছে প্রায় ৭ হাজার ৩শটি গবাদিপশু। উপজেলায় এবার হাট বসবে ৬টি স্থানে। এসব কুরবানীর পশু হাটে মেডিকেল টিম ও উপজেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান মোবাইল কোর্ট পরিচালনা থাকবে। উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসের তথ্য মতে, প্রথম ঢেউয়ের পর করোনার প্রকোপ অনেকটা কমে যাওয়ায় চলতি বছর উপজেলার অনেক খামারি গতবারের তুলনায় এবার বেশি গরু মোটাতাজা করেছেন এবং অনেক নতুন খামার গড়ে উঠেছে। খামারি ছাড়াও উপজেলার সাধারণ কৃষকরা বাড়তি ইনকামের জন্য বাড়িতে দু’ একটি করে গরু মোটাতাজা করছেন। শেষ সময়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসায় এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন উপজেলার খামারি ও কৃষকরা। তবে করোনা মহামারী ঠেকাতে বগুড়া জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে অনলাইন ওয়েব সাইট ফেইজের মাধ্যমে এবার কুরবানীর পশু বেচাকেনা প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে বলে জানান উপজেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ। ইতিমধ্যে আদমদীঘি উপজেলায় ফেসবুক ফেইজের মাধ্যমে বিভিন্ন খামার থেকে কুরবানীর পশুর ছবি তুলে আপলোড দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের কালাইকুড়ি গ্রামের জি.এম বিফ ফ্যাটেনিং খামারের সত্ত্বাধিকারী আলহাজ্ব আব্দুল মহিত তালুকদার বলেন, আমার খামারে ৩৮টি শাহীওয়াল জাতের ষাঁড় গরু রয়েছে। করোনার প্রকোপে গত বছর কুরবানীর ঈদের গরু বিক্রয়ে লোকসান গুনতে হয়েছে। এবারও যদি এ অবস্থা থাকে তাহলে উপজেলার প্রতিটি গরু খামারীরা আগামীতে খামারী ব্যবসা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে। তবে কোরবানি পশু বহনকারী যানবাহন যেন এর আওতায় না থাকে। না হলে আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবো। তিনি আরোও বলেন, এবার যদি বর্ডার থেকে গরু না আসে এবং পশু বহনকারী যানবাহন লকডাউনের আওতায না থাকে তাহলে এ এলাকার খামারীরা ও কৃষকরা বেশ লাভবান হবে। উপজেলা সদরের হাট ইজারাদার জয়নাল খান জানান, এবার কোরবানির ঈদে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পাইকার ও স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা গরু কিনতে আসেন হাটে। আসছে ঈদে করোনার কারণে অন্য কোনো জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা আসবেন কিনা জানি না। বাইরের থেকে বড় ব্যবসায়ীরা না এলে হাটে বেচাকেনা জমবে না। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন খামারি, কৃষক, ইজারাদার, ব্যবসায়ীরাসহ সবাই। লকডাউনের মধ্যে কোরবানির পশুবাহী ট্রাকসহ সব যানবাহন অবাধে চলতে দেয়ার দাবী জানা তিনি। এ বিষয় উপজেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডাঃ কামরুন নাহার বলেন, করোনা মহামারী দূর্যোগের মাঝে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে উপজেলায় ৬টি কুরবানীর পশুর হাট বসবে এবং আমাদের উপজেলায় একটি ফেসবুক গ্রুপ ফেইজ খোলা হয়েছে সেখানে বিভিন্ন খামার থেকে কুরবানীর পশুর ছবি তুলে আপলোড দেয়া হচ্ছে যা দেখে মানুষ অনলাইনের মাধ্যমে কুরবানীর পশু ক্রয় করতে পারে। এ ব্যাপারে আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সীমা শারমিন বলেন, লকডাউন ও করোনার দুর্যোগময় মুহূর্তে কোরবানির পশু ঘরে থেকেই মোবাইল অ্যাপ ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কীভাবে সহজে বেচাকেনা করা যাবে এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই বগুড়া জেলা প্রশাসন কর্তৃক অনলাইন ফেইজ ও আমাদের আদমদীঘি উপজেলায় ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে খামার থেকে পশুর ছবি তুলে আপলোডের কাজ শুরু হয়েছে। তবে আশা করা যাচ্ছে উপজেলার সচেতন মানুষ করোনাকালীন এই দুর্যোগময় সময়ে অনলাইনের মাধ্যমে কুরবানীর পশু কেনার আহবান জানান।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com