শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৩৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
জব্দ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর রিট আরেক হত্যা মামলায় সাবেক বিচারপতি মানিককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে মানহানির মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান উৎপাদনে ফিরলো কর্ণফুলী পেপার মিল ২০৫০ সালের মধ্যে ৪ কোটি মানুষের মৃত্যু হবে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সংক্রমণে দিল্লিতে মেয়ের সঙ্গে থাকছেন শেখ হাসিনা, দলবল নিয়ে ঘুরছেন পার্কে পিআইবির নতুন ডিজি ফারুক ওয়াসিফ, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের এমডি এম আবদুল্লাহ ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পোশাক শিল্প আইন আপনার হাতে তুলে নেয়ার কারো কোনো অধিকার নেই :স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা দেয়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে বললেন মির্জা ফখরুল

টাঙ্গাইলের কৃষক ও খামারির প্রায় ১লাখ কোরবানির পশু প্রস্তুত

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৮ জুলাই, ২০২১

আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে টাঙ্গাইলের চর ও গ্রামাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটাতাজা করা হচ্ছে। প্রতিটি বাড়িই এখন একটি খামারে পরিনত হয়েছে। অল্প কয়েক মাস গরু লালন পালন করে অধিক লাভজনক হওয়ায় প্রতিবছরই খামারের সংখ্যা বাড়ছে। এসব খামারে তৈরি হয়েছে অনেক লোকের কর্মসংস্থান। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে টাঙ্গাইলের কৃষক ও খামারিরা প্রায় ১লাখ কোরবানির পশু প্রস্তুত রেখেছেন যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ অন্যান্য জেলায়ও যোগান দেওয়া সম্ভব হবে।কোরবানীর পশুর হাটগুলোতে যদি বিদেশী গরুর আমদানী না হয় তবেই এসব ক্ষুদ্র খামারীরা অধিক লাভবান হবেন বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ঠরা। বর্তমানে শেষ মুহূর্তে এসে পশু পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা। তাদের টার্গেট আসছে কোরবানির ইদে পশুর ন্যায্য মূল্য পাওয়া। কোরবানীতে দেশী গরুর চাহিদা বেশি থাকায় বেশিরভাগ খামারীরা কমবেশি লাভবান হয়েছেন। সেই সাথে গরুর উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকারের নানামুখী উদ্যোগ ও গরুর খামার লাভজনক হওয়ায় টাঙ্গাইল জেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামেই বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠেছে গরুর খামার। হরমোন জাতীয় ইনজেকশন এবং কোন প্রকার রাসায়নিক ঔষধ প্রয়োগ না করে প্রতি বছরের মতো এবারও টাঙ্গাইলের খামারিরা সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে ও প্রাকৃতিক উপায়ে লালন পালন করে গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া মোটাতাজা করেছেন। খামার গুলোতে খাওয়ানো হচ্ছে দেশীয় খাবার খড়, খৈল, ভুসি, গুড়ের চিটা, লবণ, চাল-ডাল ও ছোলার-গুঁড়োসহ চাষ করা নেপিয়ার ঘাস। পশু চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী গরুগুলোকে দেয় হয় চিকিৎসা। ব্যবহার করা হচ্ছে না মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর কোনো মেডিসিন। কোরবানীর ঈদ মৌসুমের ৫ থেকে ৭ মাস আগে থেকে এসব খামারে গরু পালন করা হয়। অবশ্য কেউ কেউ এক কোরবানীর ঈদে খামারের গরু বিক্রি করে পরের মৌসুমের জন্য গরু পালন করা শুরু করেন। প্রাকৃতিক উপায়ে মোটাতাজা করা দেশীয় জাতের গরুর চাহিদা বেশী ক্রেতাদের। এ কারণে হাটে নেয়ার সাথে সাথে বিক্রি হয়ে যায় এসব গরু। অনেক সময় খুচরা ক্রেতা ও পাইকাররা খামার থেকেই গরু কিনে নিয়ে যান। তবে গো খাদ্যের চড়া দামে পশু লালন পালন করে এ মহামারি করোনায় ন্যায্য মূল্য পাবেন কিনা তা নিয়ে অনেকটা শঙ্কায় আছেন খামারিরা। তার পরও করোনার এ পরিস্থিতিতে সীমান্ত দিয়ে যদি দেশের বাইরের পশু আমদানি বন্ধ থাকে তাহলে ইদের হাটে এসব পশু বিক্রি করে লাভবান হবেন বলে আশা প্রকাশ করছেন পশু খামারীরা। খামারি ও কৃষকদের ভাষ্য অনুযায়ী এবার গো-খাদ্যের দাম বাড়ার ফলে পশু লালন পালন খরচ অন্য বছরের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে। জেলা পশুসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায় এ বছর স্থানীয় খামারিরা তাদের খামারগুলোতে ৯৫ হাজার ১৫৯ টি কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত রেখেছেন। আর ব্যক্তিগত ও কৃষক পর্যায়ে আরও ৪-৫হাজারের মত পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। যা কোরবানিযোগ্য পশুর চাহিদার তুলনায় প্রায় ১৫-২০ হাজার বেশি। টাঙ্গাইল জেলা কোরবানিযোগ্য পশুর চাহিদা ৮০-৮৫ হাজার। সেই ক্ষেত্রে কোরবানির জন্য পশু আমদানির প্রয়োজন হবে না বলে মনে করছেন জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ। জেলা পশুসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায় টাঙ্গাইল জেলা কোরবানিযোগ্য ৯৫,১৫৯ প্রস্তুত হাজার এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৭,০০০, গোপালপুর উপজেলায় ৫,১৮৫, ভূয়াপুর উপজেলায় ১৩,০৪২ ঘাটাইল উপজেলায় ৮,৭৪৭ মধুপুর উপজেলায় ৮,৬৪৬, ধনবাড়ি উপজেলায় ৩,৭৮৫ সখীপুর উপজেলায় ১৮,৬৫৩ বাসাইল উপজেলায় ৫,২৩৩ মির্জাপুর উপজেলায় ৩,৬৯১ দেলদুয়ার উপজেলায় ৩,৯০৪ নাগরপুর উপজেলায় ৬,১৯৮ কালিহাতি উপজেলায় ১১,০৭৬। খামারিরা বলছেন, তাদের পালিত পশুগুলোর বেশির ভাগই ৫০ থেকে ৯০ হাজার টাকা মূল্যের। এ পশুগুলোর অধিকাংশই মধ্যবিত্তদের কাছেই চাহিদা পেতো। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে কারণে মধ্যবিত্তরাই রয়েছেন নানান সঙ্কটে। অনেকেই হয়ত এবার কোরবানি নাও দিতে পারেন। ফলে পশুর চাহিদা এবার কম থাকবে বলে মনে করছেন তারা। খামারীরা জানান, গরুর খামারে তৈরী হয়েছে অনেক মানুষের কর্মসংস্থানেরও। গরুর পরিচর্চা করার জন্য খামারগুলো নিয়োগ দেয়া হয়েছে শ্রমিকদের। এতে তাদের দারিদ্রতাও দুর হচ্ছে। বিদেশী গরুর আমদানী না হয় তাহলে আমরা খামারীরা অধিক লাভবান হবো। এ বিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রানা মিয়া বলেন, এসব খামারীদের স্থানীয় প্রাণি সম্পদ দপ্তর প্রয়োজনীয় সহায়তা করছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে টাঙ্গাইলের দেশীয় জাতের গরু অন্য জেলাতেও যাচ্ছে বিক্রির জন। অল-লাইন পশুর হাট নামে একটি পেজ খোলা হয়েছে এতে করে এবার জেলার গরু গুলো সহজে খামারীরা বিক্রি করতে পারে। জেলার ১২ টি উপজেলায় পৃথক ভাবে এই অন-লাইন পশুর হাট পেজ খোলা হয়েছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com