বাগেরহাট সদর হাসপাতাল সংলগ্ন ৫০ শয্যা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের ভ্যাকসিন প্রদান বুথে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্য বিধি। রেডক্রিসেন্টের নিবন্ধন টেবিলের সামনে গাদাগাদি করা লোক। একজনের শরীরের সাথে অন্যজনের শরীরে মেশানো। বুথের বাইরে টিকা গ্রহিতাদের উপচে পড়া ভীড়। দীর্ঘ লাইনে ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে আছেন নানা বয়সী মানুষ। কেউ কেউ ছাতা নিয়ে, আবার কেউ হাতের ব্যাগ মাথায় দিয়ে দাড়িয়ে আছেন রোদের মধ্যে। নারী ও বৃদ্ধরা পড়েছে বিড়ম্বনায়। লাইনে দাড়ানো লোকদের গা ঘেসে হেটে যাচ্ছেন, কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসাধীনর রোগীর স্বজনরা। ভ্যাকসিন গ্রহিতার ভীড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকরা। সোমবার (১২ জুলাই) বেলা ১১ টায় বাগেরহাট সদর হাসপাতাল সংলগ্ন কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালের সামনে টিকা গ্রহিতাতের এই চিত্র দেখা যায়। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, যারা আজকের জন্য ম্যাসেজ পেয়েছেন শুধুমাত্র তারা আসলে এই ভীড় হত না। যাদেরকে টিকার ম্যাসেজ দেওয়া হয়নি, তারা আসায় অতিরিক্ত ভীড় হয়েছে। বাগেরহাট জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানাযায়, দুই দফায় সিনোফার্মের পাওয়া ২৮ হাজার ৪০০ টিকা রয়েছে বাগেরহাটে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ৮ তারিখ থেকে বাগেরহাট সদর হাসপাতাল সংলগ্ন ৫০ শয্যা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে পাঁচটি বুথে এই টিকা দেওয়া হচ্ছে। ৮, ১০ এবং ১১ জুলাই এই তিন দিনে নিবন্ধিত ২ হাজার ৬৩০ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। ষাটগম্বুজ থেকে টিকা নিতে আসা সুজয় দে বলেন, সকাল ৮টা থেকে এসে লাইনে দাড়িয়েছি। রোদের মধ্যে দাড়িয়ে খুব খারাপ অবস্থা আমাদের।এভাবে দাড়িয়ে থেকে অনেকেই অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে। টিকা নিয়ে বের হওয়া হাজেরা বেগম বলেন, সকাল ৮টায় আসতে বললেও এসেছিলাম সাতটায়। তারপরও প্রায় তিন ঘন্টা দাড়িয়ে থেকে টিকা দিতে পেরেছি।এজন্য সকলকে ধন্যবাদ। লাইনে দাড়ানো আব্দুল গফফার ও সুব্রত পাল বলেন, এত অব্যবস্থাপনা চিন্তা করা যায় না। সবাইকে একজায়গায় এনে স্বাস্থ্য বিধি লঙ্গন না করে, এলাকায় এলাকায় টিকা দেওয়ার দাবি জানান তারা। বাগেরহাট রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সাধারন সম্পাদক তালুকদার নাজমুল কবির ঝিলাম বলেন, ৮ জুলাই থেকেই আমাদের ৫০ জন স্বেচ্ছাসেসবক এখানে কাজ করছে। কিন্তু টিকা নিতে আসা লোকের চাপ এত বেশি যে আমরা তাদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছি। টিকা গ্রহিতারা বসে অপেক্ষা করবে এমন কোন জায়গা ছিল না। আমরা বসার জন্য একটি প্যান্ডেলও করেছি।লোক এত বেশি যে সবাইকে বসতেও দেওয়া যাচ্ছে না। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি সকলকে স্বাভাবিকভাবে টিকা দিয়ে বাড়ি ফেরাতে। বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কে এম হুমায়ুন কবির বলেন, প্রতিদিন ৪০০ মানুষকে টিকা দেওয়ার সক্ষমতা আছে। আমরা চারশ মানুষকেই ম্যাসেজ দিয়েছি। কিন্তু ম্যাসেজ না পেয়েও কিছু মানুষ টিকা কার্ড নিয়ে হাসপাতালে এসেছে। যার ফলে এই ভীড়ের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা তাদের না আসতে অনুৎসাহিত করছি।মাইকিং করে তাদেরকে না আসার জন্য বলে দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, যারা রেজিষ্ট্রেশন করেছেন তারা সবাই টিকা পাবেন। তারা হুরো করার কিছু নেই। আমাদের পর্যাপ্ত টিকার মজুত রয়েছে। এই টিকা দেওয়া শেষ হলে আমাদেরকে আরও টিকা বরাদ্দ দেওয়া হবে।