কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ঢাকার ধামরাইয়ে কুল্লা ইউনিয়নের আড়ালিয়া গ্রামে এক টন ওজনের কালো বাহাদুর দেখতে আসা জনতার ভিড় লাগে প্রতিদিন গরুর মালিক হরিপদ সরকারের বাড়ীতে। কালো বাহাদুর (কোরবানির ষাঁড় গরু) ঈদুল আযহার কোরবানির জন্য তৈরি করা হয়েছে। খামারি হরিপদ সরকার শখের বশে হয়ে ওই গরুর নাম দিয়েছে কালো বাহাদুর। ধামরাই উপজেলার প্রত্যন্ত আঞ্চলের কৃষক হরিপদ সরকার স্বাস্থ্য সম্মতভাবে এই ষাঁড়টি পালন করেছেন। বর্তমানে নিজ বাড়ীতে রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিক্রির জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে জানাগেছে,কুল্লা ইউনিয়নের আড়ালিয়া গ্রামে কৃষক সৌখিন খামারী হরিপদ সরকার। গত চার বছর আগে তার বাড়ীর একটি অস্ট্রেলিয়া ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী থেকে ষাঁড় গরু জন্ম দেয়।এক কথায় বলা চলে গরু প্রতিপালন তার একটি নেশা। গত ৪টি বছর যাবত তার নিজের মত করে কালো বাহাদুর লালন পালন করেছেন। এখন তার বয়স ৪ বছর। গায়ের রং কালো বলে নাম দিয়েছে কালো বাহাদুর। ষাঁড়টি বর্তমানে ৪টি দাঁত উঠেছে। এর উচ্চতা ৫ফিট ২ইঞ্চি এবং লম্বা প্রায়১০ফিট।
ষাঁড়টির ওজন ধরা হয়েছে এক হাজার ৮০ কেজি বা ২৭মণ।এর দাম চাওয়া হচ্ছে ১২-১৪লক্ষ টাকা। কালো বাহাদুর আপেল, কলা, মাল্টা থেকে শুরু করে গমের ভুষি, ছোলা, কুড়া,মিষ্টি কুমরা ও খোদের ভাতসহ ৫-৬শত টাকার খাবার লাগে প্রতিদিন। এছাড়া কাচা ঘাস তো আছেই। কালো পাহাড় এতটায় শান্ত, যে কেউ শরীরে হাত ভুলিয়ে আদর করতে পারে। যার কারণে কালো পাহাড়কে দেখতে দুরদুরান্ত থেকে প্রতিদিন মানুষ ভিড় জমায়। এই ব্যাপারে গরুটির মালিক মোঃ হরিপদ সরকার বলেন, গত ৪বছর যাবত ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড় গরুটি শখ করে নিজেই লালন পালন শুরু করি। ষাঁড়টির নাম রাখা হয়েছে কালো বাহাদুর। প্রতিদিন সকালে তাকে গোসল না করালে কোন খাবার সে খাই না। তাই সকালে উঠে প্রথমে কালো পাহাড়কে আগে গোসল করানো হয়। কালো বাহাদুর(ষাঁড়টি) আমি ও আমার আমার স্ত্রী দেখভাল করে থাকি।তবে কৃষিকাজের জন্য বেশিরভাগ সময় আমাকে বাহিরে থাকতে হয় তাই বেশিরভাগ সময় আমার স্ত্রী দেখে। কলো বাহাদুর সম্পুর্ণ দেশীয় খাবার খায়। তাকে প্রতিদিন চার বার খাবার খায়ানো হয়। প্রতিদিন ১২ কেজি করে খাবার লাগে। খাবারের মধ্যে গমের ভুষি, চালের কুড়া, ছোলা,খোদের ভাত।এছাড়া আপেল,কলা,মাল্টা খায়ানো হয়।কালো বাহাদুরকে( ষাঁড়) সব সময় পরিস্কার পরিছন্ন জায়গায় রাখা হয়।সব সময়ে তার সেবা যন্ত করায় কালো বাহাদুর এর কোন রোগ বালায় নেয়।
তাই বিধিনিষেধ এর মধ্যেও তার বাড়ীতে ভিড় জমায় কৌতুহল জনতা। ২৭মণ ওজনের এ গরুটির দাম উঠেছে ৫ লাখ টাকা।তবে খামাররি প্রত্যাশা আরও বেশি। এখন কালো বাহাদুর কি পারবে খামারি হরিপদ সরকারের প্রত্যাশা পূরণ করতে। সেই জন্য শাজাহান মিয়া বলে দেখাযাক আমার ভ্যাগে কি আছে। ষাঁড়টি দেখতে বিভিন্ন জায়গা থেকে লোক আসছে তারা দাম বলতেছে। আশানুরুপ দাম পেলে দিয়ে দেব।করোনাকালে হাট বাজারে গিয়ে ষাঁড়টি বিক্রি না করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজ বাড়ীতে থেকে সুলভ মুল্যে বিক্রি করতে চান। এই ব্যাপারে পাশের গ্রাম থেকে দেখতে আসা মনির হোসেন ও ইমরান নামে দুইজন বলেন, আমরা লোক মুখে শুনে কালো বাহাদুর দেখতে এসেছি। এসে দেখলাম সত্যিই যেন এটি কালো বাহাদুর । আমার জীবনেও এত বড় ষাঁড় গরু দেখিনি। হরিপদ ছেলে বলেন ষাড়টি বিক্রি ও ক্রেতা আকৃষ্ট করার জন্য বিভিন্ন ভাবে সামজিক যোগাযোগ ম্যধমে (ফেসবুকে) ইউটিউবে প্রচারের করা হচ্ছে। আগ্রহী ক্রেতাগণ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিস্তারিত জানতে পারবেন। এই ব্যাপারে ধামরাই উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মোঃ সাইদুর রহমান বলেন, কালো বাহাদুর ষাঁড় গরুটি ফ্রিজিয়ান জাতের গরু। এর মাংস বেশ সুস্বাদু হবে। কারণ এটি সম্পুর্ণ দেশীয় খাবার খেয়ে বড় হয়েছে। স্বাস্থ্য বিধি মেনে ষাঁড়টিকে লালন পালন করা হয়েছে।