নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলার চন্ডিগর ইউনিয়নের কেরণখলা এলাকার সোমশে^রী নদীতে বাংলা ড্রেজার বসিয়ে অবাধে উত্তোলন বালু উত্তোলন করার খবর পাওয়া গেছে। সরকারি নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে ওই এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল কোন প্রকার ইজারা ছাড়াই বালু উত্তোলন করে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। রোববার বিকেলে সাংবাদিকদের এমনটাই জানালেন স্থানীয়রা। এ নিয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, ওই এলাকার বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যানের ছোট ভাই স্বপন মিয়া স্থানীয় ও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে সোমেশ^রী নদী থেকে ইজারা ছাড়াই বাংলা ড্রেজার বসিয়ে লক্ষ লক্ষ ঘনফুট বালু উত্তোলন করে দেদারছে বিক্রি করছে প্রতিনিয়ত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় ভুক্তভোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বালু উত্তোলনের কারণে আশপাশের কৃষকের ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি সাধন হচ্ছে। কেরণখলা বেরিবাঁধটি ধ্বসে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা এতে বাঁধা দিলে ওই প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ী মহলটি মারমুখী হয়ে উঠেন তাদের ওপর। ওই এলাকার চেয়ারম্যানের প্রভাব খাটিয়ে তার ছোট ভাই স্বপন মিয়া, সেকুল মিয়া, কাশেম মেম্বার, হাবিল উদ্দিন সহ আরো কয়েকজন মিলে ৩টি স্থান থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মাধ্যমে বিশালাকার স্তূপ তৈরী করে চলে বিক্রির মহোৎসব। ওই অবাধ বালু বাণিজ্যের প্রায় দুইশত গজ দক্ষিণে স্থানীয় আব্দুল আজিজ, মিলন মিয়া, ছিদ্দিক, সালাম ও সেলিম মিলে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে স্তূপ করে রাখে। এর কিছুদুর অগ্রসর হলেই দেখা মেলে উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ সরকারের নেতৃত্বে আরো দু‘তিন জন পার্টনার নিয়ে বাংলা ড্রেজার বসিয়ে দেদারসে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করেছেন। বর্তমানে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বালু উত্তোলন আপাততঃ বন্ধ রাখলেও পানি নেমে গেলেই পুনরায় শুরু বালু খেকোদের যুদ্ধ। চন্ডিগড় বাজার থেকে কেরনখলা যাওয়ার গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়নে নির্মিত কার্পেটিং সড়কটি ভারী যানবাহন দিয়ে বালু আনা নেয়ার ফলে রাস্তা ভেঙ্গে চলাচলে অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের প্রতিকার চেয়ে স্থানীয়রা মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেনা। এ নিয়ে উপজেলা প্রশাসন সহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী। এ নিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলতাবুর রহমান কাজল এর সাথে কথা বলার জন্য বারংবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। অবৈধভাবে বালু নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান বলেন, সরকারি ইজারা ছাড়া সরকারি যে কোন ভুমি থেকে বালু উত্তোলন করা দন্ডনীয় অপরাধ। সরকারের ভাবমুর্তি নষ্ট হবে এমন কোন কাজ করতে দেয়া হবে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখে জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।