বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৪৯ অপরাহ্ন

লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক

ইসলাম ডেস্ক :
  • আপডেট সময় রবিবার, ১৮ জুলাই, ২০২১

আজ পবিত্র আরাফাত দিবস

‘লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়ালমুলক।’ অর্থাৎ ‘আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার।’ এই ধ্বনিতে আজ মুখরিত হবে আরাফাতের ময়দান। আরাফাতের ময়দানে জোহরের নামাজ শেষে খুতবায় অংশ নেন মুসল্লিরা। এরপর তাঁরা আসরের নামাজ আদায় করবেন। সূর্যাস্ত পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করে মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করবেন। রাতে সেখানে খোলা মাঠে অবস্থান করবেন। শয়তানের প্রতিকৃতিতে পাথর নিক্ষেপের জন্য প্রয়োজনীয় পাথর সংগ্রহ করবেন সেখান থেকে।
মুজদালিফায় ফজরের নামাজ আদায় করে হাজিরা কেউ ট্রেনে, কেউ গাড়িতে, কেউ হেঁটে মিনায় যাবেন। পরে তাঁরা নিজ নিজ তাঁবুতে ফিরবেন। মিনায় শয়তানকে সাতটি পাথর মারার পর পশু কোরবানি দিয়ে মাথার চুল ছেঁটে (ন্যাড়া করে) গোসল করবেন। সেলাইবিহীন দুই টুকরা কাপড় বদল করবেন। এরপর স্বাভাবিক পোশাক পরে মিনা থেকে মক্কায় গিয়ে পবিত্র কাবা শরিফ সাতবার তাওয়াফ করবেন। কাবার সামনের দুই পাহাড় সাফা ও মারওয়ায় ‘সাঈ’ (সাতবার দৌড়াবেন) করবেন। সেখান থেকে তাঁরা আবার মিনায় যাবেন। মিনার কাজ শেষে আবার মক্কায় বিদায়ী তাওয়াফ করার পর নিজ নিজ দেশে ফিরবেন। যাঁরা হজের আগে মদিনায় যাননি, তাঁরা মদিনায় যাবেন। হাজিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সৌদি কর্তৃপক্ষ পুলিশ, আধা সামরিক ও সামরিক বাহিনী মোতায়েন করেছে। হাজিদের বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা দিতে মিনায় কিছুদূর পরপর রয়েছে হাসপাতাল। রয়েছে মোয়াচ্ছাসা, দমকল বাহিনী, পুলিশ বাহিনীর সদস্য। হাজিরা পথ হারিয়ে ফেললে স্বেচ্ছাসেবক, স্কাউট ও হজকর্মীরা তাঁদের নির্দিষ্ট (তাঁবুতে) গন্তব্যে পৌঁছে দেন।
জিলহজ মাস হিজরি সনের মধ্যে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। এ মাসের বিশেষ ফজিলত রয়েছে। জিলহজ মাস হজের মাস। বছরের ১২ মাসই আল্লাহর কাছে সমান মর্যাদার। এর মধ্যেও কয়েকটি মাস আছে যেগুলো আল্লাহ বিশেষ ফজিলতের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। জিলহজ মাস তার একটি। ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের একটি হজ বিশ্বের মুসলমানদের মধ্যে এক ভ্রাতৃত্ববোধের সৃষ্টি করে। ত্যাগের মনোভাব সৃষ্টি করে। আল্লাহর রাহে নিজকে উৎসর্গ করার মানসিকতা তৈরি করে। ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হওয়ার মাস জিলহজ। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন এবং তার সান্নিধ্য লাভের মাস। এসব মাসে যুদ্ধবিগ্রহ, কলহ-বিবাদকে সম্পূর্ণ হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। এই মাসের ৮ থেকে ১৩ তারিখ- এই ছয় দিনেই হজের মূল কার্যক্রম সম্পাদন করা হয়। তাই এ মাসের মর্যাদা ও ফজিলত অন্য মাসগুলো থেকে অনেক বেশি।
মহাগ্রন্থ আল কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হজ সম্পাদন করো সুবিদিত মাসগুলোতে। অতঃপর যে কেউ এই মাসগুলোতে হজ করা স্থির করে, তার জন্য হজের সময়ে স্ত্রী সম্ভোগ, অন্যায় আচরণ ও কলহবিবাদ বৈধ নয়। তোমরা উত্তম কাজ যা কিছু করো, আল্লাহ তায়ালা তা জানেন এবং তোমরা তোমাদের সাথে পাথেয় নিয়ে নাও। বস্তুতপক্ষে উৎকৃষ্ট পাথেয় হচ্ছে তাকওয়া বা আত্মসংযম।’ (সূরা বাকারা-১৯৭)। তিরমিজি শরীফের এক হাদিসে আবু হুরায়রা রা: বর্ণনা করেন, রাসূল সা: বলেন, ‘জিলহজের ১০ দিনের ইবাদত আল্লাহর কাছে অন্য দিনের ইবাদতের তুলনায় বেশি প্রিয়। প্রতিটি দিনের রোজা এক বছরের রোজার মতো আর প্রতি রাতের ইবাদত লাইলাতুল কদরের ইবাদতের মতো’। জিলহজ মাসে হজের সময় তালবিয়া পাঠের মধ্য দিয়ে প্রতিটি মুসলমান আল্লাহর কাছে হাজির হওয়ার সাক্ষ্য দেন। এর মাধ্যমে বান্দাহ ও আল্লাহর মধ্যে যে গভীর সম্পর্ক তৈরি হয় তা তাকে নিয়ে মুক্তির চূড়ান্ত ঠিকানায়।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com