ফেনীর ফুলগাজীতে মুহুরী নদীর বাঁধ মেরামতের অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঠিকাদারির হাত বদলে নিম্নমানের কাজ হচ্ছে। এতে পানির হালকা স্রোতের চাপেই পুনরায় বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা ক্ষতিগ্রস্থদের। তদারকির দায়িত্বে থাকা পাউবো প্রকৌশলীদের যোগসাজেশে এই অনিয়ম হচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। জেলা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী জহির উদ্দিন বলেন, ভাঙনের স্থানে মাটি দিয়ে সংস্কার করতে হবে। প্রয়োজনে ৩০ ভাগ বালু ব্যবহার করা যাবে। শুধু বালু দিয়ে বাঁধ সংস্কার করা সম্পূর্ণ অন্যায়। সম্প্রতি টানা বৃষ্টিতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাডি ঢলে সদর ইউনিয়নের উত্তর দৌলতপুর এলাকায় বাঁধ ভেঙে কয়েকশ পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্থ ২৬ মিটার বাঁধ সংস্কারে ঠিকাদার নিয়োগ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। ১৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকা বরাদ্দে কাজ পায় কাশেম কন্ট্রাক্টরের মালিক কাশেম ট্রেডাস। পরে দৌলতপুর ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য তাজুল ইসলামের কাছে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকায় সাব-কন্ট্রাক্টর নিয়োগ করে কাশেম ট্রেডার্স। শুরু থেকেই নিম্নমানের কাজ ও অনিয়মের অভিযোগ ওঠে সাব-কন্ট্রাক্টর তাজুলের বিরুদ্ধে। জিও ব্যাগ, মাটির পরিবর্তে বালু, প্লাষ্টিকের বস্তা ও বাঁশের কঞ্চি দিয়ে চলছে সংস্কার। এমনকি নদীর পাড়েই তৈরি হচ্ছে বাঁধ। এতে পানির সামান্য চাপেই ভেঙে যেতে পারে। গত মঙ্গলবার ১০ আগষ্ট ভাঙন এলাকায় গিয়ে এর সত্যতা দেখা যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, “ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অধিক লাভের কারণে সাব-কন্ট্রাক্টর নিয়োগ করেই কাজটি করা হচ্ছে। এখানে বরাদ্দের টাকার কয়েন বসিয়ে দিলেও এর চেয়ে মজবুত কাজ হবে”। যেভাবে বাঁধ মেরামত করা হচ্ছে, এটা সামান্য পানির স্রোতে ভেঙে যেতে পারে”। এদিকে গত বৃহস্পতিবার অনুমোদন ছাড়াই ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু তুলে বাঁধ সংস্কার করায় কাজ বন্ধ করে দেন ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌসী বেগম। সাব- কন্ট্রাক্টর ইউপি সদস্য মোঃ তাজুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “৩ লাখ ২০ হাজার টাকায় যেটুকু সম্ভব আমি সেটুকু করছি। তবে এই বাঁধ মেরামতের জন্য পাউবো কত টাকা দিয়েছে তা আমি জানি না”। তবে মূল ঠিকাদার কাশেম কন্ট্রাক্টর বলেন “৪ লাখ ২০ হাজার টাকার চুক্তিতে কাজ দিয়েছেন তিনি। মৌখিকভাবে অর্ডার দেওয়ার পরই এই কাজ শুরু করেন। সংস্কারের তদারকি দায়িত্ব থাকা সাব-ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার আক্তার হোসেন বলেন, ভাঙনে তৈরি গর্ত মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। কাজের গুণগত মান সম্পর্কে তিনি বলেন, কাজ টেকসই হচ্ছে, আমরা কাজ বুঝে নেব। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী জহির উদ্দিন বলেন, ১৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকা বরাদ্দের মধ্যে মাটি, জিও ব্যাগ, বালুসহ সবকিছু ধরা হয়েছে। সম্প্রতি কাজে অনিয়মের বিষয়টি জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা হয়েছে। কাজে অনিয়ম হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দেন তিনি।