বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ০৪:১৭ অপরাহ্ন

কুটির শিল্পে স্বাবলম্বী এক গ্রামের একশত পরিবার

কামরুল ইসলাম (মিরসরাই) চট্টগ্রাম :
  • আপডেট সময় শনিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২১

স্বাধীনতার পূর্বে থেকে ৯০দশক পর্যন্ত গ্রামগঞ্জের কুটির শিল্প ছিল চাহিদা ছিলো শীর্ষে। দিন বদলেছে প্রযুক্তির ছোঁয়ায়। আর তার ধারাবাহিকতায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার কুটির শিল্পসহ অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী শিল্প। তৈরি হতো মানুষের শ্রম ঝরানো হাতে সময় লাগতো অনেক। আর সেগুলোর সুনামও ছিল বেশ। বর্তমান আধুনিক সভ্যতার যুগে সময় বাঁচাতে হাতে তৈরি ঐতিহ্যবাহী সেই শিল্পগুলো এখন বিলুপ্তির পথে। তবে সেগুলোর প্রতি মানুষের চাহিদা রয়েছে প্রচুর। আবার অনেকেই আছেন প্রযুক্তি থাকলেও এখনও বাপ-দাদার সেই ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। নিয়েছেন প্রযুক্তির সাথে চ্যালেঞ্জ হিসেবে। আর এমনই একজন হচ্ছেন মীরসরাই উপজেলার উদ্যোক্তা ২নং হিঙ্গুলী ইউনিয়নের মেহেদী নগর গ্রামের যুবক শহিদুল ইসলাম রানা। রানা ১৪ বছর বয়স থেকে তিনি মাছের আড়তে চাকুরী করতেন। সেখানে টুকরি চাহিদা দেখে তা তৈরির ইচ্ছে জাগে। পরবর্তী তিনি এটাকে আয়ত্ত্ব করে শুধু পেশা হিসেবে নয় উদ্যোক্তা হয়ে প্রায় ১০০ পরিবারের জীবন বদলে দিয়েছেন। সেই থেকে শুরু করেছেন প্লাস্টিকের বেতী টুকরি তৈরি। নিজ বাড়িতে প্রথমে ১ লক্ষ টাকা পুঁজি দিয়ে ২০০৮ সালে ৫ জন শ্রমিক দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে ৭ লক্ষ টাকা পুঁজি দাঁড়িয়েছে। আর সেখানে কাজ করছেন প্রায় ৫০টি শ্রমলব্দ পরিবারের নারী সদস্যরা। শ্রমিকেরা তাদের দৈনিন্দিন আয়ের পাশাপাশি প্লাস্টিকের বেতী টুকরি তৈরি করে বাড়তি আয় করে থাকেন। প্রতি পরিবার প্রতিদিন ১০টি পর্যন্ত টুকরি বানাতে পারে। সেই টুকরি বানানো বাবদ প্রতিদিন ৩শত টাকা করে আয় করে থাকেন। আকার ও মান ভেদে ১৭ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত মজুরী প্রদান করা হয়। প্রতি পরিবারের মাসিক আয় ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা। ৫০ পরিবারে মাসিক আয় প্রায় ৫ লক্ষ টাকা এবং বাৎসরিক আয় ৬০ লক্ষ টাকা। এই প্লাস্টিকের বেতী টুকরি গুলো অন্যান্য অঞ্চলে উৎপাদিত মাছ সবজি কাঁচামাল সহ অন্যান্য দ্রব্যাদি মূলত একস্থান থেকে অন্য স্থানে সহজে প্রেরণ করা হয়। টুকরি গুলো গুণে-মানে অনেক টেকসই এবং দীর্ঘস্থায়ী। পারিবারিক কাজে ব্যবহার করা হলে এটি যুগের পর যুগ টিকে থাকে। এটি পাইকারি প্রতি পিস ১০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হয়। প্রতি মাসে প্রায় ৫ টন বেতী দরকার হয়। ২০০৮ সালের শুরুর দিকে প্রতিকেজি প্লাস্টিক বেতীর দাম ছিল ৬ থেকে ৭ টাকা করেছিল বর্তমানে এটির দাম প্রায় ৯০ টাকা। এটি বারৈয়ারহাট থেকে প্রায় পুরো বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় বিশেষ করে রাজধানী ঢাকা সহ যেসব এলাকায় মাছের আড়ত রয়েছে সেখানেই বিক্রি হচ্ছে এসব বেতী টুকরি গুলো বিভিন্ন সাইজের তৈরি টুকরি গুলো বিক্রি হয় বিভিন্ন দামে। রপ্তানি করা হয়। প্রতি পিছ বেতী টুকরি থেকে মালিক পক্ষ ২০ থেকে ৩০ টাকা করে আয় করে থাকে। প্রতিমাসে উৎপাদন হয় চার থেকে সাড়ে চারহাজার পিস। যার থেকে মাসিক আয় প্রায় লক্ষ ৩০ হাজার মতো। কুটির শিল্পের উদ্যোক্তা শহিদুল ইসলাম রানা বলেন, আমি যদি সরকারই পৃষ্ঠপোষকতা ও বিনা সুদে ঋণ এবং পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণ যদি জায়গা পেলে তাহলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারব বলে আশা করি। এখানে কাজ করে স্বাবলম্বী মরিয়ম সুরমা নারগিস জানান, সংসারের কাজের পাশাপাশি তারা প্লাস্টিকের বেভী টুকরি তৈরি করে স্বচ্ছল ভাবে জীবন যাপন করছেন। স্থানীয় ইউপি সদস্য মুনাছির আহম্মেদ বলেন, গ্রামে অনেক নারী সদস্যরা রানা প্লাস্টিকের বেতী টুকরি তৈরী স্বাবলম্বী হয়েছেন। মিরসরাই উপজেলার যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা কাজী আবদুল আলিম বলেন, উদ্যোক্তা হলে সরকারী বরাদ্ধ আসলে আমরা উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে সহযোগিতা করবো।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com