মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য সেবা এবং বিশেষ করে শিশুদের দুর্ভোগ ক্রমশ ঝুঁকির দিকে যাচ্ছে। ২৯ আগষ্ট’২১ মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১২৮ নম্বর কক্ষের সামনে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, ১৫-২০জন মা তাদের অসুস্থ শিশু সন্তানদের কোলে নিয়ে সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ডাক্তারের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন। অবশেষে সাংবাদিকদের হস্তক্ষেপে দুপুর বারোটার দিকে তারা জানতে পারেন ১২৮ নম্বর কক্ষে কোন ডাক্তারই বসবেন না। অথচ এই কথাটুকুও মেডিকেলের পক্ষ থেকে তাদেরকে বলা হয়নি। অসুস্থ শিশুদের নিয়ে দীর্ঘ তিন ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকার বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরিফুল কবিরের কাছে জানতে চাইলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ক্যাশিয়ার/হিসাবরক্ষক মোস্তাকিম জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আরিফুল কবির ২ সেপ্টেম্বর’২১ পর্যন্ত ছুটিতে রয়েছেন। উনার অনুপস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করছেন ডাঃ জাহিদ সাহেব। জাহিদ সাহেবের কাছে জানতে চাইলে উনি জানালেন, তাকে করোনার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আর কিছু তার জানা নেই। এবারে ক্যাশিয়ার/হিসাবরক্ষক মোস্তাকিম কথা পরিবর্তন করে জানালেন, দায়িত্বে¡ রয়েছেন ডাঃ ইসমাইল সাহেব। ডাঃ ইসমাইল সাহেব কোথায়(?) জানতে চাইলে ক্যাশিয়ার জানালেন, ইসমাইল সাহেব অসুস্থ বিধায় মেডিকেলে আসেননি। এভাবেই একের পর এক নানা টালবাহানা করতে থাকেন ক্যাশিয়ার/হিসাবরক্ষক মোস্তাকিম। প্রকৃত পক্ষে ২৯ আগষ্ট’২১ রবিবার মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মাঝিবিহীন নৌকার মতই ঘুরপাক খেতে থাকে। ন্যুনতম শৃঙ্খলাও ওই দিন মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে লক্ষ্য করা যায়নি। জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আরিফুল কবির নানা অজুহাতে অফিসে আসেন না। মেডিক্যাল কোয়ার্টারে থাকার বাধ্যবাধকতা থাকলেও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আরিফুল কবির থাকেন রাজশাহী জেলা শহরে। অন্যান্য ডাক্তারের মেডিকেল কোয়ার্টারে থাকা বাধ্যতামূলক হলেও কোয়ার্টারে কোন ডাক্তার থকেন না। মেডিকেলের কোয়ার্টারগুলো ডাক্তাররা ছেড়ে গেলেও মাকড়সারা কোয়ার্টার ছেড়ে যায়নি। জাল বুনে বুনে সাদায় সাদায় গুছিয়ে রেখেছে মেডিকেল কোয়ার্টার। ডাঃ আরিফুল কবির-এর বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে, তিনি সরকারী এ্যাম্বেুলেন্স ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে থাকেন। অভিযোগ রয়েছে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তিনি কারো মোবাইল রিসিভ করেন না। মোহনপুরের নেতৃস্থানীয় দায?িত্বশীল একজন জনপ্রতিনিধি জানালেন, তিন দিনে দশ বারেরও বেশি মোবাইল করলেও ডাঃ আরিফুল কবির মোবাইল রিসিভ করেননি। তার সঙ্গে কথা বলার জন্য পার্সোনাল মোবাইল নম্বরে কল করলে মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। এমন সমস্যা সহ অন্যান্য কারণে মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ক্রমশ ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। এই পরিস্থিতিতে উচ্চ মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন মেডিকেলে সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগীরা।