সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে মুরগির দাম বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা এবং পাকিস্তানি কক বা সোনালী মুরগির দাম ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এর সঙ্গে ডজনে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ টাকা। মুরগি ও ডিমের দাম বাড়লেও অপরিবর্তিত রয়েছে সবজির দাম। তবে শীতের আগাম সবজি শিম ও ফুলকপির সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে গাজর ও টমেটো। শিম কিনতে ক্রেতাদের কেজিতে ১৬০-২০০ টাকা গুনতে হচ্ছে। আর ছোট একটা ফুলকপি কিনতে লাগছে ৩০-৫০ টাকা। টমেটো ও গাজর কিনতেও ক্রেতাদের কেজিতে ১০০ টাকার ওপরে গুনতে হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার (০৩ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগি ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন, যা গত সপ্তাহে ছিলো ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা। পাকিস্তানি কক মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১১০ থেকে ১৩০ টাকা।
মুরগির দাম বাড়ার বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী খায়রুল হোসেন বলেন, ‘এখন আর লকডাউন নেই। সবকিছু খুলে দেয়া হয়েছে। কিছু কিছু অনুষ্ঠান হচ্ছে। হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলোতে বিক্রি বাড়ায় মুরগির চাহিদার সঙ্গে দামও বেড়েছে। সামনে দাম আরও বাড়তে পারে।’ রামপুরার ব্যবসায়ী মোজাম্মেল বলেন, ‘একদিকে বাজারে মুরগির চাহিদা বেড়েছে, অন্যদিকে সরবরাহ কমেছে। এ কারণে গত কয়েকদিনে পাইকারিতে মুরগির দাম অনেক বেড়েছে। আমাদের ধারণা সামনে মুরগির দাম আরও বাড়বে।’ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিলো ১০০ থেকে ১১০ টাকার মধ্যে।
মালিবাগের ডিম ব্যবসায়ী ঝন্টু বলেন, ‘পাইকারি বাজারে ডিমের দাম বাড়ায় আমরা বাড়তি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। বাজারের হালচাল দেখে মনে হচ্ছে, সামনে ডিমের দাম আরও বাড়বে।’ বাজারের সবজি ব্যবসায়ীরা শিমের কেজি বিক্রি করছেন ১৬০ থেকে ২০০ টাকা। চার সপ্তাহ ধরে একই দামে বিক্রি হচ্ছে শিম। শিমের মতো গাজর ও টমেটোও বিক্রি হচ্ছে আগের দামে, ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া ঝিঙের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, করলা ৪০ থেকে ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পটল ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ২০ থেকে ২৫ টাকা, কাঁচকলার হালি ২৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। আগের মতো ঢেঁড়সের কেজিও পাওয়া যাচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে। আর বরবটির কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকায। তবে ছোট এক আঁটি লাল শাকের জন্য ক্রেতাদের ২০ থেকে ৩০ টাকা গুনতে হচ্ছে। মুলা শাক বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা আঁটি, আর কলমি শাক ৫ থেকে ১০ টাকা আঁটি। সবজির দামের বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী সরদার সামাদ শেখ বলেন, ‘শীতের আগাম সবজির সরবরাহ দিন দিন বাড়ছে। কিছুদিন পর সরবরাহ আরও বাড়বে। তখন সবজির দাম কমে আসবে। সামনে সবজির দাম বাড়ার সম্ভাবনা কম।’
মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩৮০ টাকা।, মৃগেল মাছের কেজি ২৪০ থেকে ২৮০ টাক, তেলাপিয়া ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, পাবদা ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা আর পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে। এ সময়টাতে বাজারে ছোট-বড় সব ধরনের ইলিশেরও দেখা মিলছে। তবে দাম এখনো সাধারণ ক্রেতাদের হাতের নাগালে বাইরেই। বড় (এক কেজির বেশি ওজনের) ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১৩০০ টাকা, মাঝারি আকারের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা আর ছোট ইলিশ ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে।
সেগুনবাগিচার ব্যবসায়ী ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘বাজারে ইলিশের সরবরাহ বেড়েছে। তবে বড় ইলিশের সরবরাহ এখনো তেমন বাড়েনি। বড় ইলিশের সরবরাহ বাড়লে দাম কিছুটা কমে আসবে।’