বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০৯:১১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
সোনালু, কৃষ্ণচূড়া ও জারুল ফুল প্রকৃতিকে সাজিয়েছে ভিন্ন সাজে প্রচন্ড গরমে বরিশালের তৈরী হাত পাখা দেশব্যাপি মানুষের শরীর শীতল করছে, ভাল নেই পাখা কারিগররা সুটিয়াকাঠী ইউনিয়নের গণ মানুষের ঢল নেমেছে আনারস প্রতীকের পক্ষে মেধাবী শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়ালো দুর্গাপুর উপজেলা প্রশাসন জলঢাকায় নির্ধারিত সময়ের আগেই স্কুল বন্ধ করার অভিযোগ কালীগঞ্জে পল্লী উদ্যোক্তাদের মাঝে বিআরডিবির ঋণ বিতরণ সৎ ও নিষ্ঠাবান উপজেলা চেয়ারম্যান রেজবী-উল-কবির নকলায় জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ ফটিকছড়িতে মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় বশর নামে এক সিএনজি ড্রাইভারকে মারধর! দুর্গাপুরে বিশ্বমা দিবস উপলক্ষে গাছের চারা বিতরণ

ধান-চাল সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি এবারও

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১

সরবরাহ কম থাকায় বাজারে রেকর্ড দামে চাল কিনতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমদানি বাড়ানো হয়েছে কয়েক দফা। এ সময় সরকারের অভ্যন্তরীণ ধান ও চাল সংগ্রহে নেতিবাচক সংবাদ এসেছে। সদ্যসমাপ্ত বোরো মৌসুমের সংগ্রহ কার্যক্রমে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে খাদ্য অধিদপ্তর। মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, গত ৩১ আগস্ট বোরো মৌসুমের ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রম সমাপ্ত হয়েছে। এ মৌসুমে মোট ১৩ লাখ ৮১ হাজার ৫১৮ টন ধান ও চাল সংগ্রহ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৮ লাখ ৮৫ হাজার টন। আমরা ধানের ক্ষেত্রে সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা অর্ধেক পূরণ করতে পারিনি। তবে চালের সংগ্রহ ভালো হয়েছে। আমরা বেশি কেনার জন্য এ বছর দাম বাড়িয়ে নির্ধারণ করেছিলাম। কিন্তু তারপরও বাজারে ধানের দাম বেশি থাকায় সংগ্রহ পুরোটা হয়নি গত বছরও বোরো মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি খাদ্য অধিদপ্তর। যদিও এ বছর সে তুলনায় সংগ্রহ বেড়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চালের এ ঊর্ধ্বমুখী দামের বাজারে সরকারের সংগ্রহ কর্মসূচির ব্যর্থতা কিছুটা চিন্তার বিষয়। কারণ সরকারি গুদামে চালের মজুত কমে গেলে বাজারে তার প্রভাব পড়ে, চালের দাম বেড়ে যায়। সেই পরিস্থিতি এড়াতে বেশি বেশি সরকারের চাল সংগ্রহ করা প্রয়োজন। আমদানির মাধ্যমে সেটা সাময়িক পূরণ হলেও তা স্থায়ী ও কার্যকর সমাধান নয়।
সমাপ্ত বোরো মৌসুমে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল সাড়ে ছয় লাখ টন, যেখানে সংগ্রহ হয়েছে তিন লাখ ৬২ হাজার ৪৪৫ টন যে মিলার সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পরে চাল দিচ্ছে না, তাদের কালো তালিকাভুক্ত করা দরকার। তাদের শাস্তি দেওয়া দরকার। সরকার শক্ত না হলে চাল পাবে না খাদ্য মন্ত্রণালয়ের খাদ্যশস্য পরিস্থিতি প্রতিবেদন বলছে, সমাপ্ত বোরো মৌসুমে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল সাড়ে ছয় লাখ টন। যেখানে সংগ্রহ হয়েছে তিন লাখ ৬২ হাজার ৪৪৫ টন। এছাড়া ১২ লাখ ৩৫ হাজার টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এসেছে ১০ লাখ ৬০ হাজার ৪১২ টন। অন্যদিকে দেড় লাখ টন আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রায় মিলেছে ৮৫ হাজার ৫১৬ টন।
এ বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম বলেন, আমরা ধানের ক্ষেত্রে সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা অর্ধেক পূরণ করতে পারিনি। তবে চালের সংগ্রহ ভালো হয়েছে। আমরা বেশি কেনার জন্য এ বছর দাম বাড়িয়ে নির্ধারণ করেছিলাম। কিন্তু তারপরও বাজারে ধানের দাম বেশি থাকায় সংগ্রহ পুরোটা হয়নি। ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা বলেন, চালের ক্ষেত্রে কিন্তু অবস্থাটা ভালো। খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটি আমাদের ১০ লাখ টন চাল সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত করেছিল। কিন্তু পরে আমরা আরও এক লাখ ৩৫ হাজার টন কেনার আলাদা লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিলাম। ওই ১০ লাখ টন আমরা অতিক্রম করেছি। কিন্তু দ্বিতীয় ধাপে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হয়নি।
এদিকে জানা গেছে, খাদ্য অধিদপ্তর থেকে আরও সংগ্রহ বাড়ানোর জন্য এক সপ্তাহ সময় চাওয়া হয়েছিল মন্ত্রণালয়ের কাছে। কিন্তু মন্ত্রণালয় তাতে সাড়া দেয়নি। কারণ এক দফা সময় বাড়িয়ে দিয়েই সংগ্রহ কার্যক্রমের শেষ সময় ছিল ৩১ আগস্ট।
সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পরও যে মিলার চাল দিচ্ছে না, তাদের কালো তালিকাভুক্ত করা দরকার বলে মনে করেন কৃষিবিদরা এ বিষয়ে সচিব বলেন, যে মিলাররা মে থেকে চার মাসে চাল দেয়নি, তারা আগামী সাতদিনে কতো চাল দেবে? এ জন্য সময় বাড়ানো হয়নি। সরকারের চাল কেনা শেষ হলে বাজারে চালের সরবরাহ বাড়বে।
যদিও বেশি বেশি চাল সংগ্রহের জন্য এ বছর বোরোতে ধান-চালের দাম বেশ বাড়িয়ে নির্ধারণ করেছিল সরকার। যেখানে গত বছর (২০২০) বোরো মৌসুমে ২৬ টাকা কেজি দরে ধান, ৩৬ টাকা কেজি দরে সিদ্ধ চাল ও ৩৫ টাকা কেজি দরে আতপ চাল কেনা হয়েছে, সেখানে এবার ২৭ টাকায় ধান, ৪০ টাকায় সিদ্ধ চাল ও ৩৯ টাকা কেজি দরে আতপ চাল কেনা হয়েছে। তারপরও সংগ্রহ হয়নি পুরোটা। এদিকে ধান ও চাল সংগ্রহ ব্যর্থতার কারণ হিসেবে খাদ্য অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, ধানের দাম সরকার বাড়িয়ে নির্ধারণ করলেও সংগ্রহের সময় বাজারে দাম আরও বেশি ছিল। পাশাপাশি নানা ধরনের জটিলতায় সরকারের কাছে ধান বিক্রিতে কৃষকের আগ্রহ কম।
চালের ক্ষেত্রে চালকলগুলোর মালিকরা সরকারের নির্ধারিত দামে চুক্তিবদ্ধ হয়েও বাজারে বেশি দাম পাওয়ায় সরবরাহ করেনি। কোনো ব্যবসায়ী পণ্যের বেশি দাম পেলে তা কম দামে বিক্রি করেন না। তাদের চুক্তির চাল দিতে বাধ্য করার কোনো উপায় সরকারের হাতে নেই। এসব বিষয়ে কৃষি অর্থনীতিবিদ জাহাঙ্গীর আলম খান বলেন, সরকারের ধান-চাল ক্রয় কার্যক্রমে সমস্যা রয়েছে। কিন্তু বারবার সমস্যার পরও সরকার সেটা থেকে শিক্ষা নিতে পারেনি। কোনো পরিবর্তন আসেনি। তিনি বলেন, কৃষকের কাছ থেকে চাল নিতে সরকারের নানা শর্ত। কিনতে ঝামেলা করে, আর্দ্রতা নেই বলে তাদের চাল ফেরত দেয়, আরও কতো কী। ভাড়া দিয়ে গুদামে নিয়ে এসব ঝামেলা কৃষক কেন সইবে? এজন্য তারা বাজারেই বিক্রি করে, সরকারকে দেয় না। মিল মালিকদের চুক্তির পরে চাল না দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে মিলার সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পরে চাল দিচ্ছে না, তাদের কালো তালিকাভুক্ত করা দরকার। তাদের শাস্তি দেওয়া দরকার। সরকার শক্ত না হলে চাল পাবে না।-জাগোনিউজ২৪.কম




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com