শেরপুরে তৈরী হচ্ছে পুতুলের মাথার পরচুলা (ক্যাপ)। যা রফতানি হচ্ছে বিদেশে। যেখানে এসব পরচুলা (ক্যাপ) তৈরী করে স্বাবলম্বী হয়েছেন এলাকার অনেকে । বাদ যায়নি স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীরাও। করোনাকালীন সময়ে স্কুল বন্ধ থাকার এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে আয় করছেন বাড়তি টাকা। সরজমিনে দেখা গেছে, শেরপুর সদর উপজেলার পাকুরিয়া ইউনিয়নের ভাটিয়াপাড়া গ্রামে গড়ে উঠেছে লাবীবা তাহসিন হেয়ার ক্যাপ কারখানা। যেখানে কাজ করছেন ৩০ জনের মত শ্রমিক। এছাড়াও কেউ কোউ বাড়িতে বসেও তৈরী করছে পরচুলা। লাবীবা তাহসিন হেয়ার ক্যাপ কারখানার প্রশিক্ষক সাখি আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, চেষ্টা করলে অনেক কিছুই সম্ভব। আজকে আমাদের এই কারখানায় ৩০০ জনের মত মহিলা কর্মী ক্যাপ তৈরী করছে। তারা প্রতিজন মাসে ৫ থেকে ১২ হাজার টাকার মত বেতন উঠাচ্ছে। কেউ ইচ্ছে করলে আমাদের এখান থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে পরচুলা তৈরি ও নিজেরা স্বাবলম্বী হতে পারে। সাখি আরও জানান, আমাদের এখানে ৩ রকমের পরচুলা (ক্যাপ) তৈরি হয়। একটি মাথার ক্যাপ, অন্যটি পুতুল ক্যাপ এবং আরেকটি নৌকা ক্যাপ। স্থানীয় এলাকাবাসী সাইফুল ইসলাম জানান, গ্রামের মহিলারা সচরাচর স্বামী সংসার নিয়ে ব্যাস্ত থাকে। কিন্তু পরচুলার কারখানা আমাদের এলাকায় গড়ে উঠার পর কেউ আর এখন বেকার না। অনেকেই পরচুলা তৈরি করে হাজার টাকা আয় করছেন। কেউ কেউ আবার নিজ বাড়িতে বসেই বানাচ্ছেন পরচুলা। লাবীবা তাহসিন হেয়ার ক্যাপ কারখানা কর্মী তুষ্টি আক্তার বলেন, স্কুল বন্ধ তাই এই সুযোগে পরচুলা তৈরি কারখানায় কাজ করছি। পুতুলের জন্য তৈরি পরচুলা বানাতে সময় লাগে ৬ থেকে ৭ দিন এবং বড় মানুষের জন্য পরচুলা তৈরি করতে সময় লাগে ১২ থেকে ১৫ দিন। এখান থেকে প্রতি মাসে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা আয় করছি। এ বিষয়ে কারাখানা মালিক লিখনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি আমার এক পরিচিত বড় ভাইয়ের অনুপ্রেরণায় লাবীবা তাহসিন হেয়ার ক্যাপ কারখানাটি শুরু করি। এখন বর্তমানে এখানে অনেক মহিলা কর্মীর কর্মসংস্থান হয়েছে। আমিও ধীরে ধীরে লাভবান হচ্ছি। আমি ঢাকা থেকে চায়নিজ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করি। তারপর এগুলো শেরপুর এনে ক্যাপ বানাই। শেরপুর সদরে আমার মত আরও কয়েকজন উদ্দোক্তা আছে। বর্তমানে সব মিলিয়ে প্রায় ২ হাজারেরও বেশী নারী শ্রমিক পরচুলা তৈরীর সাথে জড়িত। যদি কোন সরকারি বা বেসরকারি এনজিও থেকে অল্প সুদে ঋণ পাই তাহলে কারখানাটি আরও বড় করার ইচ্ছা আছে। আমরা এখান থেকে পরচুলা গুলো ঢাকা পাঠাই। এরপর চায়নারা সেটি কিনে তাদের দেশে নিয়ে যায়। জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, যে কোন উদ্দোক্তা কে আমরা অল্প সুদে ঋন দিয়ে থাকি। যদি তারা কেউ আমাদের কাছে আবেদন করে তাহলে সর্বনিন্ম ৫ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকার মত ঋণ দেওয়ার সুযোগ আছে।