বিশ্বাসঘাতকদের সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ আমাদের দলে বেইমান তো ছিলই। খন্দকার মোস্তাক-টোস্তাক তো ছিলই। এটা তো অস্বীকার করি না। আমাদের বাড়ির ভাত কার পেটে না গেছে। জিয়াউর রহমান তো খালেদা জিয়াকে নিয়ে মাসে একবার করে আমাদের বাড়ি গিয়ে বসে থাকতো।’ গত বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদের ১৪তম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এদের থেকে এখন মানবাধিকারের কথা শুনতে হয়। জ্ঞানের কথা শুনতে হয়। আইনের শাসনের কথা শুনতে হয়। আমার বাবা-মার হত্যার বিচার চেয়ে আমি মামলা করতে পারিনি। আমাদের সেই অধিকার ছিল না।’
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় জিয়াউর রহমানকে আসামি করতে চেয়েছিলেন উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘সে পঁচাত্তরের হত্যার সঙ্গে জড়িত এতে কোনও সন্দেহ নেই। আমি তাকে আসামি করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের তখনকার স্বরাষ্ট্রসচিব রেজাউল হায়াত বলেছিলেনÍমৃত মানুষকে তো আসামি করা যায় না। আমার মনে হয় নামটা (আসামি হিসেবে) থাকা উচিৎ ছিল। কারণ জিয়া যে ষড়যন্ত্রে জড়িত তা ফারুক-রশিদ নিজেরাই বলেছে। একাধিক বইতে আছে। আর জড়িত না হলে যেসব যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছিল তাদের ছেড়ে দিলো কেন? জিয়াউর রহমান সেই বিচার বন্ধ করে সবাইকে কারাগার থেকে মুক্তি দিলো। সাত খুনের আসামিকে ছেড়ে দিলো। খুনিদের ডেকে এনে দল করলো। স্বাধীনতা যুদ্ধই যদি করে থাকে তাহলে একাত্তরের অগ্নিসংযোগকারী, খুনি ধর্ষণকারীদের কেন মন্ত্রী উপদেষ্টা বানালো? সংসদে বসালো। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করলো। তার বউ খালেদা জিয়াকে আরও একধাপ ওপরে গিয়ে এমপি বানিয়ে সংসদে বসালো। খুনি, অপরাধী, ধর্ষণকারী, যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গি-এদের সঙ্গে তাদের বসবাস।’
বিএনপির হারুনুর রশীদের বক্তব্যের সূত্র ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সংসদে বলা হয়েছে জিয়াউর রহমান যে সেক্টরে দায়িত্ব পালন করেছেন, সেখানে সব থেকে বেশি প্রাণহানি হয়েছে। তা হলে প্রশ্ন আসে, সে তাহলে যুদ্ধে কী কাজ করেছে। পাকিস্তানিদের পক্ষে? যাতে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা মৃত্যুবরণ করে, সেই ব্যবস্থা করেছিল কিনাÍসেটাই আমার প্রশ্ন। সেক্টরের অধিনায়ক করে প্রাণহানি বাড়িয়ে দেওয়ার মানে কী? নিজের হাতে নিজেদের লোকদের এগিয়ে দিয়েছে মরতে। মেজর হাফিজের বইতে কী আছে? এখন বই চেঞ্জ করছে।’ সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘জিয়ার আমলে প্রত্যেকটি কারাগারে কত মানুষকে ফাঁসি দিয়ে মারা হয়েছে। তার রেকর্ড তো থেকে যায়। সেগুলো একটু খুঁজে বের করে দেখেন।’