সাবিনার হ্যাটট্রিকে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। হংকংয়ের বিরুদ্ধে ৫-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে এই জয় পেয়েছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। রোববার এই খেলা অনুষ্ঠিত হয়। অবশ্য এ জন্য বাংলাদেশের জাতীয় নারী ফুটবল দলকে লম্বা সময় ধরে অনুশীলনে রাখা হয়েছে। নেপালে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে চাটার্ড বিমানে পাঠানো হয়। সেখানে দুই ম্যাচে ভালো করলেও মূল আসর মহিলা এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বে দুই ম্যাচে ১০ গোল হজম করে। জর্দান ও ইরানের বিপক্ষে ৫টি করে গোলে হারের পর সমালোচনার মুখেই পড়েন সাবিনা খাতুনরা। এতদিন ধরে জাতীয় দলের ক্যাম্পে থেকেও কেন ভুলের খেসারতে এভাবে হালি হালি গোল হজম করা। কিন্তু বাংলাদেশ দল আগের দুই ম্যাচে করা ভুলগুলো থেকেই শিক্ষা নিয়ে ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েছে হংকংয়ের বিপক্ষে। তাই রোববার প্রীতি ম্যাচে অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের হ্যাটট্রিকে হংকংয়ের বিপক্ষে ৫-০ গোলের ঐতিহাসিক জয় পায় বাংলাদেশ। সিনিয়র ফুটবলে এই প্রথম হংকংকে হারানো। সাথে প্রথমবারের মতো কোনো জাতীয় দলের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে জয় পাওয়া। উজবেকিস্তানের তাশখন্দের জার অ্যাকাডেমি ট্রেনিং গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে গোলাম রব্বানী ছোটনের দলের গোল উৎসবের শুরুটা হয়েছিল তহুরা খাতুনের মাধ্যমেই। এরপর হ্যাটট্রিকসহ চার গোল সাবিনার।
অবশ্য প্রীতি ম্যাচে ৫ গোল হজম করেছে বলে হংকংকে খাটো করার কোনো সুযোগ নেই। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে লালসবুজ মেয়েদের চেয়ে অনেক এগিয়ে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি। ৭৬-এ অবস্থান তাদের। জর্দান (৬৩) ও ইরানের (৭২) চেয়ে সামান্য পিছিয়ে হংকং। যেখানে বাংলাদেশের র্যাঙ্কিং ১৩৭। আর এই দলটির বিপক্ষে এত বড় জয় পাওয়ার পরও র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি হচ্ছে না বাংলাদেশের। কারণ ম্যাচটি ফিফা উইন্ডোতে হয়নি। এতেই আফসোস বাফুফের মহিলা উইংয়ের চেয়ারম্যান ও ফিফার কাউন্সিল মেম্বর মাহফুজা আক্তার কিরনের। তিনি জানান, ‘বড় লোকসান হয়ে গেল ম্যাচটি ফিফা উইন্ডোতে না হওয়ায়। এরপরও এই দারুণ জয়ে খুব খুশি। মূলত জর্দান ও ইরানের বিপক্ষে বাজে হারের পর পল স্মলি (টেকনিক্যাল ডিরেক্ট) অনেক কাজ করেছেন নারী দলকে নিয়ে। ফুটবলারদের ভুলত্রুটিগুলো শুধরিয়ে দিয়েছেন। রোববার ম্যাচ শুরুর ১৮ মিনিটে তহুরার ৪২তম আন্তর্জাতিক গোলে উল্লাস শুরু বাংলাদেশ দলের। ৪৩ মিনিটে স্কোর দ্বিগুণ করেন সাবিনা খাতুন। এরপর ৫৩, ৫৭ মিনিটে আরো দুই গোল করে পূরণ করেন নিজের হ্যাটট্রিক। ৮৫ মিনিটে নিজের চতুর্থ গোল আদায় বসুন্ধরা কিংসের এই স্ট্রাইকারের। সাবিনার এর আগের হ্যাটট্রিকটি ছিল ২০১৬ সালের সাফে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। সব মিলিয়ে নেপাল ও উজবেকিস্তানে পাঁচ ম্যাচের শেষটি জয় নিয়েই ফিরতে পেরেছে বাংলাদেশ। বাকি চার ম্যাচের একটিতে ড্র। ম্যাচ শেষে উজবেকিস্তান থেকে কোচ ছোটন জানান, আমাদের ইয়াং টিমকে যত বেশি সুযোগ দেয়া যাবে ততই তারা উন্নতি করবে। পরাজয়ে হতাশ হওয়া যাবে না। ফুটবলাররা ইরান ও জর্দানের বিপক্ষে করা ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এই ম্যাচ খেলেছে। কোচ তথ্য দেন, এই ম্যাচে ছোট শামসুন্নাহার, তহুরা ও সানজিদাকে একাদশে খেলানো হয়।