রাজধানীসহ সারাদেশে বিজয়া দশমী ও প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে গতকাল শুক্রবার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ৫দিনব্যাপী সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ‘শারদীয় দুর্গাপূজা’ শেষ হলো। তবে, প্রাদুর্ভাব কমলেও করোনার (কভিড-১৯) কারণে, এবার বিজয়া দশমীতে শোভা-যাত্রা হয়নি। চন্ডীপাঠ, বোধন ও অধিবাসের মধ্যদিয়ে গত ১১ অক্টোবর থেকে দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হয়। পরবর্তী ৪দিন রাজধানীসহ দেশব্যাপি পূজামন্ডপগুলোতে পূজা-অর্চণার মধ্যদিয়ে ভক্তরা দেবী দূর্গার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদস করেন। গতকাল শুক্রবার সকালে দর্পণ-বিসর্জনের মাধ্যমে বিদায় জানানো হয় দেবী দুর্গাকে। পরে, বিকেল ৪টা থেকে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন। এর মধ্যদিয়ে শেষ হয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। এদিকে, গত বৃহস্পতিবার প্রতিটি মন্ডপ ও মন্দিরে ঢাক-ঢোল, কাঁসর-ঘন্টায়, ধূপ আরতি ও দেবী-দুর্গার পূজা-অর্চনায় কেবলই ছিল মায়ের বিদায়ের সুর। গত বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী বিভিন্ন পূজামন্ডপে সারাবিশ্বের কল্যাণ এবং করোনামুক্ত বিশ্ব কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। গত বৃহস্পতিবার সকালে বিহিত পূজার মাধ্যমে শুরু হয় নবমী পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পুরাণ মতে, এই তিথিতে দেবী দুর্গার আর্শিবাদ নিয়ে লঙ্কার রাজা রাবণকে বধ করেছিলেন দশরথ পুত্র শ্রীরামচন্দ্র। এছাড়া, ১০৮টি নীলপদ্ম দিয়ে দেবী দুর্গার পূজা করেছিলেন রামচন্দ্র। তাই মহানবমীতে ষোড়শ উপাচারের সঙ্গে ১০৮টি নীলপদ্মে পূজিত হয়েছেন দেবী দুর্গা। নবমী সন্ধিক্ষণে অনুষ্ঠিত হয়েছে সন্ধিপূজাও। এাদকে, গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন পূজামন্ডপ পরিদর্শন করেন মন্ত্রী,সংসদ সদস্য এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। সেতু মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাদারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, ধর্ম রাজধানীর রামকৃষ্ণ মঠ পূজামন্ডপ পরিদর্শন করেন। এ সময় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বলেন, একটি অশুভ উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী নির্বাচনকে সামনে রেখে কুমিল্লাসহ ১০ থেকে ১২টি জায়গায় মন্দিরে ও হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। তিনি জানান, শেখ হাসিনার সরকার এসব অশুভ অপশক্তিকে মাথা তুলতে দেবে না। অপরদিকে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শন করেন।
করোনার সংক্রমণ কম থাকলেও এবছরও বিজয়ার শোভাযাত্রা হয়নি। তাই পূজার সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রতিমা বিসর্জন করা হয়। তবে গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজ থাকায় নামাজের সময় দুপুরে বিসর্জন অনুষ্ঠান করা হয়নি। বিকাল ৪টা থেকে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন।