মা ইলিশ সংরক্ষণের লক্ষ্যে গত ৪ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ২২ দিনের অবরোধে সরকারের পক্ষ থেকে তালিকাভূক্ত প্রত্যেক জেলেকে দেওয়া হচ্ছে ২০ কেজি চাল। এ চাল পর্যাপ্ত না হলেও, দুর্দিনে সরকারের এ সহযোগীতায় খুশি সুবিধাভোগী জেলেরা। তবে জেলে প্রতি ২০ কেজি করে চাল বিতরণের দায়িত্বে থাকাদের বিরুদ্ধে জনপ্রতি ৪ কেজি করে চাল কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার পিরোজপুরের ইন্দুরকানী বাজার সংলগ্ন চালের গোডাউন থেকে উপজেলার পাড়েরহাটের ১২৬ জন জেলেকে বিতরণের সময় ওজনে ৪ কেজি করে চাল কম দেওয়ার ঘটনা ঘটে। সুবিধাভোগী জেলেদের সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার চাল নেওয়ার জন্য ট্রলার ও ভ্যান যোগে ইন্দুরকানী উপজেলার শেখ ফজলুল হক মনি সেতু সংলগ্ন সরকারি চালের গুদামে হাজির হন তালিকাভূক্ত জেলেরা। এরপর তাদেরকে সেখান থেকে চাল বিতরণ করেন পাড়েরহাট ইউনিয়ন পরিষদের সচিব কাওসার হোসেন। পরবর্তীতে জেলেদের চালের ওজনের বিষয়ে সন্দেহ হয়। এরপর তারা ওজন দিয়ে প্রতি বস্তায় ৪ কেজি চাল কম পান। এতে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে সেখানে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরবর্তীতে খবর পেয়ে উপজেলা মৎস কর্মকর্তা জুলফিকার আলী ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং জেলেদের কম দেওয়া ৪ কেজি চাল ফেরত দেওয়ার কথা বলেন। এছাড়া চালের সরকারি গুদামের এলাকা সংরক্ষিত হওয়ায় সেখানে চাল বিতরণ নিষিদ্ধ হলেও, নিয়ম ভঙ্গ করে সেখানেই জেলেদের মাঝে চাল বিতরণ করা হয়। তবে অনিয়মের বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য ইউপি সচিব কাওসার হোসেন এবং উপজেলা মৎস কর্মকর্তা জুলফিকার আলীর মোবাইলে ফোন করা হলে সেগুলো বন্ধ পাওয়া যায়। দরিদ্র মানুষের চাল আত্মসাতের ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ইন্দুরকানী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট এম মতিউর রহমান। তিনি জানান বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল শ্রেণির মানুষকে সহায়তা করার জন্য আপ্রান চেষ্টা করে যাচ্ছেন। দরিদ্র মানুষদের সহায়তা করার শত চেষ্টার পরও, এ ধরণের ঘটনায় সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়। তবে সরকারি গুদাম এলাকায় চাল বিতরণের কোন সুযোগ নাই বলে জানান পিরোজপুর জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মশিউর রহমান। তিনি জানান, খাদ্য বিভাগের দায়িত্ব হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কমিটির কাছে নির্ধারিত চাল বুঝিয়ে দেওয়া। এরপর কমিটি সেই চাল তাদের সুবিধামত স্থানে বিতরণ করবে। তবে জেলা মৎস কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল বারী জানান, চাল বিতরণে সংশ্লিষ্ট ইউপি সচিব কিছুটা অনিয়ম করেছিল। তবে বিষয়টি চাল বিতরণ কমিটির সদস্যরা জানার পর জেলেদেরকে কম দেওয়া চাল ফেতর দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। তিনি আরও জানান, এ বছর জেলায় তালিকভূক্ত ১৮ হাজার ৭০০ জন জেলেকে সরকারি সহায়তার ২০ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে।