ফরিদপুরের বোয়ালমারীর একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ গঠনে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই বিদ্যালয়ের বেশিরভাগ দাতা সদস্যদের না জানিয়ে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষক হাজিরার বায়োমেট্রিক যন্ত্র ও কম্পিউটারের প্রিন্টার ক্রয়ের জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ২০১৭ সালে ওই বিদ্যালয়ে ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। কিন্তু ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গত পাঁচ বছরেও যন্ত্র দু’টি ক্রয় না করে সমুদয় অর্থ নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন। জানা গেছে, উপজেলার ময়না ইউনিয়নের উত্তর গৌরীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আসন্ন ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু ওই বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতিসহ বেশিরভাগ দাতা সদস্যই এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না। উত্তর গৌরীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মো. মোশাররফ হোসেন (পটু মিয়া) জানান, কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারী। ওই বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য ১২ জন। নিয়মানুযায়ী সকল দাতা সদস্যরা মিলে তাদের মধ্য থেকে একজন প্রতিনিধি মনোনীত করবেন, যিনি ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রাপ্ত হবেন। কিন্তু যদি দাতা সদস্যরা ঐক্যমতে পৌঁছতে ব্যর্থ হন সেক্ষেত্রে সকল দাতা সদস্যদের নামের তালিকাই উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যানের নিকট পাঠানোর বিধান রয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান একজনকে মনোনীত করবেন। কিন্তু ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ১২ জনের পরিবর্তে ৬ জন দাতা সদস্যের নামের তালিকা উপজেলা চেয়ারম্যানের নিকট প্রেরণ করেন। উপজেলা চেয়ারম্যান ওই ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি মো. জালাল উদ্দিন আহমেদকে মনোনীত করেছেন। এ ব্যাপারে গৌরীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবাশীষ কর বলেন, গত ১৯ অক্টোবর ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে আমি নোটিশ করেছিলাম। যারা এসেছিলো তাদের উপস্থিতিতে নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সেখানে উপস্থিত ৬ জনের নামই আমি উপজেলা চেয়ারম্যানের নিকট পাঠাই। প্রধান শিক্ষক আরো বলেন, দাতা সদস্য হিসেবে আমি ৭ জনের নাম জানি। একজনের বিষয়ে সন্দেহ থাকায় ছয় জনের নাম পাঠিয়েছি। সাবেক সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার (অব) মো. মোশাররফ হোসেনের নাম দাতা সদস্য হিসেবে বাদ পড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বলেন, তিনি (বীরমুক্তিযোদ্ধা মোশাররফ হোসেন) যে জমি স্কুলকে দান করেছিলেন তা আবার নিজের নামে রেকর্ড করে নিয়েছেন। তাই তাকে বাদ দেয়া হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক তার স্বপক্ষে কোন দালিলিক কাগজপত্র প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করতে পারেননি। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবু আহাদ মিয়া বলেন, দাতা সদস্যদের নামের তালিকা উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে কি-না বিষয়টি সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে খতিয়ে দেখা হবে।