বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে গণঅনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। রিজভী বলেন, জ্বালানি তেল, গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি ও গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামী শনিবার (২০ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিতব্য মানববন্ধন কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। তার পরিবর্তে গণতন্ত্রের মা, বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে ওইদিন (শনিবার) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত গণঅনশন কর্মসূচি পালিত হবে। উক্ত গণঅনশন কর্মসূচিতে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সব নেতাকর্মীকে অংশগ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানানো হলো।
বিদেশে পাঠিয়ে খালেদা জিয়ার জীবন রক্ষার আবারও বিএনপির আহ্বান: বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারিরীক অবস্থা ভালো না জানিয়ে অবিলম্বে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির আয়োজিত আলোচনাসভায় বক্তব্যে এই আহ্বান জানান তিনি।
মহাসচিব বলেন, ‘আমরা আহ্বান জানাতে চাই, অবিলম্বে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন। তার জীবন রক্ষা করুন। এর সাথে রাজনীতিকে নিয়ে আসবেন না।’ তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার আহ্বানে এ দেশের মানুষ গণতন্ত্রকে এরশাদের হাত থেকে ছিনিয়ে এনেছিল। আজকে সেই গণতন্ত্র পুরোপুরিভাবে হারিয়ে গিয়েছে। আজকে (আওয়ামী) স্বৈরাচারী সরকারের দমনপীড়নে দেশের গণতন্ত্রের সমস্তকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে, অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে। যিনি গণতন্ত্রের জন্য তার সারাটা জীবন অতিবাহিত করলেন। একজন গৃহবধূ হয়েও শুধুমাত্র জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য রাস্তায় বেরিয়ে এসেছিলেন এবং পথে প্রান্তরে ছুটে বেরিয়েছিলেন, সেই খালেদা জিয়াকে আজ অন্যায় এবং বেআইনিভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে বছরের পর বছর। তিনি দীর্ঘ আড়াই বছর নির্জন কারাগারের একটি নি¤œমানের ঘরের মধ্যে ছিলেন। ফলে অনেকগুলো ব্যাধি তারমধ্যে সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে কোনো চিকিৎসার সুযোগ ছিল না। ভালো চিকিৎসা না দেয়ায় আজকে তার অনেক রোগ দেখা দিয়েছে।’ ফখরুল বলেন, বন্ধুগণ, ‘‘আমরা সবাই জানি তিনি (খালেদা জিয়া) আমাদের হৃদয়ের কত কাছের মানুষ। এ দেশের ১৬ কোটি মানুষের কত কাছের মানুষ। একজন রিকশাওয়ালাকে জিজ্ঞেস করুন, তারাও দোয়া করেন, ‘আল্লাহ খালেদা জিয়াকে আপনি সুস্থ করে দেন’। একজন শ্রমিককে জিজ্ঞেস করুন, তিনিও বলবেন, ‘আল্লাহ খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে দেন।’’’ তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে অপমান করা মানে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অপমান করা। আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, শামসুজ্জামান দুদু, ঢাকা উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম প্রমুখ বক্তৃতা করেন।