রাজধানী ঢাকার সাথে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যোগাযোগের অন্যতম নৌ-রুটের বাংলাবাজার এবং শিমুলিয়া ঘাটে রয়েছে অসংখ্য খাবার হোটেল। গরম ভাতের সাথে ইলিশ ভাজা আর ইলিশের তেল ও শুকনা মরিচের স্বাদের সাথে এই নৌ-রুটে যাত্রীরা দীর্ঘদিনের। তবে গত বেশ কয়েক বছর ধরে অসাধু ব্যবসায়ীদের ফাঁদে পরছেন যাত্রীরা। ইলিশের নামে সার্ডিন ও চৌক্কা মাছ খাওয়াচ্ছেন তারা। তবে দাম রাখছেন ইলিশের মতোই। দামাদামি করে কিছুটা কমানো গেলেও ইলিশ মনে করেই খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তবে মুখে দেয়ার পর ইলিশের স্বাদ না পেয়ে ধরতে পারছেন বিষয়টি। অনেকে প্রতারণা বুঝতে পেরে চুপচাপ খেয়ে চলে যাচ্ছেন, অনেকেই প্রতিবাদ করতে গিয়ে লাঞ্ছনার
শিকার হচ্ছেন। এদিকে হোটেল ব্যবসায়ীদের দাবি, তারা ইলিশও বিক্রি করেন। যারা প্রকৃত ইলিশ খেতে চায় তাদের ইলিশ মাছই দেয়া হয়। ইলিশের চেয়ে সার্ডিন মাছের দাম কিছুটা কম। ইদানিং অনেকেই এই মাছ চিনতে পারছে। তাই ঠকানোর প্রশ্নই আসে না। হোটেলে খেতে একাধিক মানুষের সাথে আলাপ করলে তারা জানান, ঘাটের হোটেলে সাজিয়ে রাখা মাছগুলো দেখতে ইলিশের মতো হলেও তা ইলিশ নয়। মুখে দেবার পর বিষয়টি বোঝা
যায়। এর আগে সহজে চেনা যায় না। ঘাটের হোটেল মালিকদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, বর্তমানে হোটেলগুলোতে চাঁটগাঁর ইলিশ নামে দামে সস্তা ইলিশ সদৃশ্য সার্ডিন মাছ বেশি পাওয়া যায়। তবে ইলিশের মতো স্বাদ নয় এই ইলিশ। ৭০ থেকে ৮০ টাকা করে পিচ বিক্রি হয়। সার্ডিন এবং ইলিশ দেখতে একই রকম, বেশিরভাগ ক্রেতারা এটা বুঝতে পারেন না, আবার কেউ ধরে ফেলে। সার্ডিনের দাম কম হওয়াতে আমাদের লাভ বেশি হয়। ঘাটের এক হোটেল মালিক জানান, ভোর থেকে রাত পর্যন্ত দোকান খোলা থাকে। হোটেলে ভাত এবং খিচুরির সাথে ইলিশ মাছ বেশি বিক্রি হয়। হোটেলে আস্ত ইলিশও রাখা হয়। একাধিক ব্যক্তি একত্রে এলে তারা কিনতে পারেন। ক্রেতাদের সামনেই মাছ কেটে ভেজে দেয়া হয়। সাথে ইলিশের তেলে শুকনা মরিচ ভেজে দেয়া হয়। কয়েকযুগ ধরে এভাবেই চলছে ঘাট এলাকার হোটেল ব্যবসায়। তবে ইদানিং নকল ইলিশের কারণে সুনাম নষ্ট হচ্ছে।
বি আইডব্লিউটিএর বাংলাবাজার ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন জানান, ঘাটের লঞ্চ ঘাটেই হোটেলের সংখ্যা বেশি। হোটেলগুলোয় ইলিশ মাছ বেশি বিক্রি করতে দেখা যায়। তবে ইলিশের মাঝে নকল ইলিশের বেশ ছড়াছড়ি রয়েছে। বিশেষ করে লঞ্চযাত্রীরাই এ সকল খাবার হোটেলের কাস্টমার। তারা ইলিশের দামে ইলিশ ভেবে নকল ইলিশ খেয়ে প্রতারিত হচ্ছেন।