শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০২ অপরাহ্ন

ঢাবিতে ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে কাওয়ালী মিছিল

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০২২

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসির পায়রা চত্ত্বরে কাওয়ালী গানের আসরে হামলার প্রতিবাদে কাওয়ালী মিছিল করেছেন বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় হামলার স্থল থেকে মিছিল নিয়ে রোকেয়া হল-কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি হয়ে প্রক্টর অফিসের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী ফাহিম শিহাব রেওয়াজ ছাত্রলীগকে ইতিহাসকে ভালোভাবে পড়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ইতিহাসে দেখতে পাই বঙ্গবন্ধুও কাওয়ালী প্রেমী ছিল। বাংলাদেশের মানুষের আন্দোলন কোনো ভাষা বা সংস্কৃতির বিরুদ্ধে ছিলো না, ছিলো শোষণের বিরুদ্ধে। ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত যে যে কায়দায় পাকিস্তানি শাসকরা আমাদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে একই কায়দায় আওয়ামী সরকার আমাদের শোষণ করছে। তারই অংশ হিসেবে এই ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ আমাদের গান, প্রেম ও সুরের উপর হামলা করছে।’ সমাবেশ থেকে হামলার প্রতিবাদে ছাত্র ফেডারেশন বৃহস্পতিবার বিকাল চারটায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশ করবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি গোলাম মোস্তফা। এদিকে বুধবারের আয়োজনে হামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় টিএসসিতে আবার কাওয়ালী ও প্রতিবাদী গানের আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাওয়ালী ব্যান্ড ‘সিলসিলা’। একইসাথে প্রতি বৃহস্পতিবার টিএসসিতে কাওয়ালী মাহফিল করার ঘোষণাও দেন তারা।হামলায় বানচাল টিএসসির কাওয়ালি আসর
ছাত্রলীগের হামলায় বানচাল হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসিতে আয়োজিত কাওয়ালি গানের আসর। বুধবার (১২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসিতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল কাওয়ালি গানের ওই আসর। সে অনুযায়ী প্রস্তুতিও চলছিল। অনুষ্ঠান শুরু হতে কিছুটা দেরি হচ্ছিল। এমন সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে অনুষ্ঠান বানচাল করে দিয়েছে বলে দাবি আয়োজকদের। হামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন ও অর্থনীতি বিভাগের দুই নারী শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ অন্তত ১১ জন আহত হয়। তবে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের দাবি, এ ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগের কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অনুষ্ঠান শুরুর কিছুক্ষণ আগে সাউন্ড সিস্টেমে সমস্যা দেখা দেয়। এ সময় ঢাবি জসীমউদদীন হল, জহুরুল হক হল ও ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অনুষ্ঠানস্থলে ঢুকে মঞ্চ ও সামনের চেয়ার ভাঙচুর করে। তখন মোবাইলে ভিডিও করতে গিয়ে আহত হন দৈনিক আমার সময়ের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জালাল উদ্দীন।
আয়োজকদের অভিযোগ, সকালে যখন আমরা অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিই, তখন আমাদের বলা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন সেখানে অনুষ্ঠান করতে নিষেধ করেছেন। তখন সাদ্দাম হোসেনকে ফোন দিলে প্রক্টরের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। এরপর হঠাৎ আমাদের মাইক হারিয়ে যায়। এছাড়া আমাদের নানাভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। সন্ধ্যা সাতটার দিকে আমাদের অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা করে। তারা আমাদের স্টেজ, চেয়ার ও সাউন্ডবক্স ভাঙচুর করে।
তারা জানান, অনুষ্ঠান করার বিষয়ে মৌখিক অনুমতি নেওয়া হয়েছে। বিষয়টির প্রতিবাদ জানিয়ে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল করে বাম ছাত্র সংগঠনের নেতা ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ শেষে প্রক্টর অফিসের সামনে জড়ো হন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর একেএম গোলাম রাব্বানী ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ শেষে বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেছেন, এরকম ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগের সম্পৃক্ত থাকার কোনও কারণ নেই। আমরা জেনেছি, এ ধরনের অনুষ্ঠান শরিয়তসম্মত কিনা, নারীরা থাকতে পারবেন কিনা, গান-বাজনা করা কতটা ঠিক সেসব নিয়ে আয়োজকদের দুই দলের মধ্যে মতবিরোধ থাকায় এমন ঘটনা ঘটতে পারে। এর সঙ্গে ছাত্রলীগকে জড়ানোর চেষ্টা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com