উন্নত মানের পুষ্টি গুনাগুণ সমৃদ্ধ সবজি স্কোয়াস চাষ করে লাভবান হচ্ছেন জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে থাকা কৃষকরা। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে স্কোয়াস চাষিদর সঙ্গে কথা বলে জানান যায়, স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কারিগরি সহায়তায় পাঁচবিবি উপজেলার আয়মারসুলপুর ইউনিয়নের লকমা গ্রামের মিঠু হোসেন , পশ্চিম কড়িয়া গ্রামের আনিসুর এবং সদর উপজেলার ধলাহার ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর গ্রামের আব্দুস সোবহান ৫০ শতাংশ জমিতে এবার স্কোয়াস চাষ করেছেন। ৫০ শতাংশ জমিতে স্কোয়াসের জন্য চারা লাগে এক হাজার ৮০০টি । চারা সংগ্রহ, লেবার , জমি প্রস্তুতিসহ ৫০ শতাংশ জমিতে খরচ পড়ে প্রায় ২০ হাজার টাকা। ৮০/৮৫ দিনের ফসল হিসাবে স্কোয়স চাষ অতি লাভজনক। বাজারে প্রতিটি স্কোয়াস বিক্রি হচ্ছে ২৫/৩০ টাকা পিস। প্রতিটি গাছ থেকে ৫/৬ টি করে স্কোয়াস সংগ্রহ করা যায়। ইতোমধ্যে ৮৫০ টি স্কোয়াস ২১ হাজার ২৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে বলে জানান, কৃষক মিঠু হোসেন। জমিতে থাকা স্কোয়াস আরও ৪০/৪৫ হাজার টাকা বিক্রি হবে এমন প্রত্যাশার কথা জানান তিনি। ৫০ শতাংশ জমিতে স্কোয়াস চাষ করে ৫৫/৬০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব বলে জানান কৃষকরা। কীটনাশক ব্যবহার না করে ফেরোমন ফাঁদ দিয়ে পোকা দমন করা হয়। ফলে বিষমুক্ত ভাবে এখানে সবজি স্কোয়াস চাষ করছেন কৃষক মিঠু হোসেন, আনিসুর ও সোবহান। গত বছর স্কোয়াস চাষ করে লাভবান হওয়ায় এবারও চাষ করছেন বলে জানান । সবজির জন্য উৎকৃষ্ট মানের স্কোয়াস খেতে কিছুটা মিষ্টি কুমড়ার মতো হলেও মিষ্টতা অনেক কম। স্কোয়াস চাষ লাভজনক হওয়ায় নিজ উদ্যোগে প্রতিবেশী কৃষকরাও তাদের জমিতে স্কোয়াস চাষ করছেন । পল্লীকর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন পিকেএসএফ কৃষি ইউনিটের সহযোগিতায় স্থানীয় বে-সরকারি উন্নয়ন সংস্থা ”জাকস ফাউন্ডেশন” স্কোয়াস চাষে কৃষকদের কারিগরি ও ঋণ সহায়াতা প্রদান করছেন বলে জানান, নির্বাহী পরিচালক নূরুল আমিন।
জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মো: শফিকুল ইসলাম জানান, স্কোয়াসে কোলেস্টেরল নেই বললেই চলে। এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম হার্টের জন্য উপকারী। ওজন কমাতে সাহায্য করা স্কোয়াস স্থ’লতারোধে বিশেষ উপকারী এতে ক্যালোরির আধিক্য নেই । স্কোয়াস ক্যান্সার প্রতিরোধী , এতে রয়েছে প্রচুর পরিমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের ফ্রিরেডিকেল দূও করে। বেটাক্যারোটিন ক্যান্সারের ক্ষতিকর পদার্থ থেকে আমাদের দূরে রাখে । স্কোয়াসে থাকা ভিটামিন সি অকালে ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করে । হাড় মজবুত করাসহ স্কোয়াসে থাকা ম্যাঙ্গানিজ মজবুত হাড় গঠনে সহায়তা করে থাকে। বেটাক্যারোটিন ও লুটেইন চোখের দৃষ্টি বাড়াতে সহায়তা করে । এক কাপ স্কোয়াসে ২৪০০ মাইক্রোগ্রাম লুটেইন রয়েছে। স্কোয়াস হচ্ছে আঁশ জাতীয় খাবারের চমৎকার উৎস কোষ্ঠ্যকাঠিন্য রোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে। খনিজ পদার্থের উৎস স্কোয়াসে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ ম্যাগনেসিয়াম, ফোলেট, কপার, রিবোফ্লাবিন, ফসফরাস, ক্যারোটিনয়েডস, পটাশিয়াম ম্যাঙ্গানিজ, বেটাক্যারোটিন রয়েছে। ডায়বেটিস , উচ্চ রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রনে রাখাসহ অ্যাজমা প্রতিরোধ ও ত্বকের যতেœ অত্যন্ত কার্যকর স্কোয়াস।