মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

গজনী অবকাশে ঝুলন্ত ব্রীজ পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে

বাসস:
  • আপডেট সময় শনিবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২২

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি শেরপুরের ঝিনাইগাতীর গারো পাহাড় গজনী অবকাশ বিনোদন কেন্দ্র। এ গারো পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগে দর্শনার্থীদের ক্ষেত্র তৈরি করেছে গজনী অবকাশ পর্যটন কেন্দ্র। এবার গজনী অবকাশে ৩টি রাইড যুক্ত হবার পর থেকে পর্যটকদের কাছে তা আরও আকর্ষণীয় ও লোভনীয় হয়ে উঠেছে। এখানে যুক্ত হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ঝুলন্ত ব্রীজ, ক্যাবল কার ও জিপ লাইনিং রাইড।
জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ১৯৯৩ সালে ভারতের মেঘালয় রাজ্য সংলগ্ন ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নে ৯০ একর জায়গাজুড়ে গড়ে তোলা হয় গজনী অবকাশ কেন্দ্রটি। ধাপে ধাপে পর্যটন কেন্দ্রটিতে নির্মাণ করা হয় দৃষ্টিনন্দন মৎস্য কন্যা জলপরী, ডাইনাসোরের প্রতিকৃতি, ড্রাগন, দন্ডায়মান জিরাফ, পদ্ম সিঁড়ি, লেক ভিউ পেন্টাগন, পাতালপুরী, হাতির প্রতিকৃতি, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ, গারো মা ভিলেজ, ওয়াচ টাওয়ার ইত্যাদি। সারি সারি বাহারি গাছের পাহাড়ের মাঝ দিয়ে আঁকাবাঁকা সড়ক, ছোট-বড় মাঝারি টিলা আর চোখ জুড়ানো সবুজের বিন্যাস প্রকৃতিপ্রেমীদের নিশ্চিত দোলা দিয়ে যায়। পাহাড়, বন ও দৃষ্টিনন্দন লেকের কারণে কেন্দ্রটি ভ্রমণপিপাসু ও প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে ক্রমেই সুপরিচিত হয়ে উঠে। পাহাড়ের বুক জুড়ে তৈরি হয়েছে সুদীর্ঘ ওয়াকওয়ে। পায়ে হেঁটে পাহাড়ের স্পর্শ নিয়ে লেকের পাড় ধরে হেঁটে যাওয়া যায় এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে।
ফলে প্রায় দুই যুগ ধরে শীতে দেশ-বিদেশের লাখো পর্যটকের পদভারে মুখরিত হয় পর্যটন কেন্দ্রটি। অবকাশ কেন্দ্রে রয়েছে কৃত্রিম জলপ্রপাত। তার নিচে পাহাড় ঘেঁষে পাথরে বসে আড্ডা আর ওয়াকওয়ের পাশে লেকের ধারে তৈরি হচ্ছে মিনি কফিশপ। চিড়িয়াখানায় যুক্ত হয়েছে নতুন করে প্রায় ৪০ প্রজাতির প্রাণি। নতুনত্বের ছোঁয়া লেগেছে গারো মা ভিলেজেও। মাশরুম ছাতার নিচে বসে বা পাখি আকৃতির বেঞ্চে বসে সহজেই উপভোগ করা যায় পাহাড়ের ঢালে আদিবাসী জনপদের জীবনযাত্রাসহ দিগন্তজোড়া সবুজের সমারোহ। এখানে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নির্মান করে অবকাশের বৈচিত্রে আনা হয়েছে নতুনত্ব ও ভিন্নতা। আগত দর্শনার্থীদের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানাতে জাদুঘরে রাখা হয়েছে বঙ্গবন্ধু-মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত ইতিহাস। পাশেই রয়েছে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী ্রজাদুঘর। তাদের জীবনমানের নানা ইতিহাস ও বৈচিত্র নজর কাড়ে পর্যটকদের। শিশুদের জন্য রয়েছে চুকুলুপি চিলড্রেনস পার্ক।
তবে করোনাসহ নানা কারণে কয়েক বছর ধরেই ওই পর্যটন কেন্দ্রটি ছিল অবহেলিত। বিশেষ করে করোনাকালিন তা বন্ধ থাকায় বন্ধ ছিল পর্যটকদের আনাগোনা। এবার করোনা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকায় গজনী অবকাশ কেন্দ্রটি চালু করা হয়। পর্যটন কেন্দ্রটি পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
তারই আওতায় পর্যটন কেন্দ্রের সৌন্দর্যবর্ধন ও ভ্রমণপিপাসুদের বিনোদনের জন্য প্রায় ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ঝুলন্ত ব্রীজ, ক্যাবল কার ও জিপ লাইনার রাইড নির্মাণ করা হয়েছে। প্রবেশপথের পাশেই ১নং লেকের ওপর দিয়ে বসানো হয়েছে আকর্ষণীয় জিপলাইন রাইড। তার একটু সামনে কৃত্রিম জলপ্রপাতের ওপর বসানো হয়েছে ক্যাবল কার। কারটিতে উঠে পুরো পরিবার একসঙ্গে যাওয়া যাচ্ছে এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে। ক্যাবল কারে চড়ে ওপর থেকে পাহাড় ও লেকের সৌন্দর্য এক সঙ্গে উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকরা।
ছোট ছোট নৌকায় করে ঘুরে বেড়ানো যাবে লেকটিতে। সেইসঙ্গে এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়ে হেঁটে পার হবার জন্য নির্মাণ করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ঝুলন্ত ব্রীজ। এছাড়া নতুন পরিকল্পনায় আরও যুক্ত হচ্ছে শিশু কর্নার ও জেলা ব্র্যান্ডিং কর্নার। এখানে থাকবে জেলার বিভিন্ন ইতিহাস-ঐতিহ্য সংবলিত ছবি, পুস্তক ও ভিডিও চিত্র। আর এখন যোগ হয়েছে কেবল কার ও জিপ লাইনিং। এতো কাছ থেকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ইতিহাস দেখে পর্যটকরা সত্যিই মুগ্ধ। গজনী অবকাশের চা দোকানদার মোঃ কলিমদ্দিন বলেন, করোনা শেষ হওয়ার পর এখন পর্যটকদের আগমন বেড়েছে। আমাদের নতুন জেলা প্রশাসক এসে পর্যটন কেন্দ্রটিতে বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ করছেন। কয়েকটি রাইড চালু হয়েছে। এগুলোর কারণে পর্যটক বাড়বে। আর পর্যটক বাড়লে আমাদের বিক্রি বাড়বে বলে আশা করি। একই কথা জানান বুটিক ব্যবসায়ী মাসুদসহ কয়েকজন।
শেরপুরের জেলা প্রশাসক মোমিনুর রশীদ বলেন, অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি গজনী অবকাশ কেন্দ্রটি করোনার কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। বর্তমানে করোনা স্থিতিশীল থাকায় গজনীতে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়াতে এবং আকর্ষণীয় করে তুলতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নানা কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। এরই আওতায় দৃষ্টিনন্দন ঝুলন্ত ব্রীজ, ক্যাবল কার ও জিপ লাইনিং চালু করা হয়েছে। রাইডগুলো উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে।
এগুলোর মাধ্যমে পর্যটনে নতুন মাত্রা যোগ হবে এবং পর্যটকদের আগমনও বাড়বে বলে তার বিশ্বাস। এখানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য একটি কালচারাল সেন্টার গড়ে তুলতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এলাকায় পর্যটকদের রাত যাপনের জন্য একটি হোটেল নির্মাণের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com