মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

নওগাঁর মান্দার প্রসাদপুর খেয়াঘাটে একটি সেতুর অভাবে দুই লাখ মানুষের ভোগান্তি

নওগাঁ প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় বুধবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০২২

নওগাঁর মান্দা উপজেলার সদর প্রসাদপুর খেয়াঘাটে একটি সেতুর অভাবে বর্তমানে প্রায় দুই লাখ মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও এখানে একটি কংক্রিটের সেতুর অভাবে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন আত্রাই নদীর পূর্বপাড়ের মানুষজন। বর্ষায় নৌকা আর শুষ্ক মওসুমে নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোই নদী পারাপারে তাদের একমাত্র ভরসা। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও এ সেতুর নির্মাণ কাজ আলোর মুখ দেখছে না। সহসায় যে এ সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হবে, এটাও কেউ বলতে পারছেন না। সেতুর দাবির কথা লোকের মুখেমুখে ঘুরেফিরে আসছে বারবার। তবুও কোন কাজ হচ্ছে না। তবে উপজেলা প্রকৌশল দপ্তর বলছে, ওই খেয়াঘাটে একটি সেতু নির্মাণের জন্য কয়েক দফায় মাটি পরীক্ষা, স্থান নির্ধারণ ও সেতুর ধরণ নিয়ে একাধিক জরিপ কাজ করেছেন এলজিইডি প্রধান কার্যালয়ের প্রতিনিধি দল। খুব শিগগিরই সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে।
স্থানীয়দের দাবি, প্রসাদপুর খেয়াঘাটে একটি সেতু নির্মিত হলে নদী পারাপারের অপেক্ষায় আর থাকতে হবে না। ঘুরতে হবে না অন্তত ৫ কিলোমিটার পথ। মাত্র ২০০ মিটার পথ পাড়ি দিয়ে উপজেলা সদরে পৌছানো যাবে। রোগীদের সহজেই নেয়া যাবে মান্দা হাসপাতাল সহ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও। কৃষকদের উৎপাদিত ধান,পাট, আখ, তিল, সরিষা, সহ নানা পণ্য পরিবহণে ভোগান্তি ও ব্যয় দুটোই কমবে। একই সাথে উপজেলার ৭ নং প্রসাদপুর, ৫ নং গনেশপুর, ৬ নং মৈনম, ১২ নং কাঁশোপাড়া ও ১৩ কশব ইউনিয়নের লোকজন সহজেই উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে পারবেন। স্থানীয়রা আরো জানান, আত্রাই নদীর প্রসাদপুর খেয়াঘাটে একটি সেতুর অভাবে পারাপারের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় স্কুল, কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অফিসগামীসহ সর্ব সাধারণ লোকজনকে। অনেক সময় ভরা মওসুমে ৩০/৪০ মিনিট অপেক্ষা পর্যন্ত করতে হয়। এত সময় দেরিতে পারাপারের কারণে অনেক সময় বিড়ম্বনায় পড়তে হয় তাদের। অনেক শিক্ষার্থীদের ক্লাস মিসের ঘটনাও ঘটে। এছাড়া জরুরি রোগিদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তাই একটি কংক্রিটের মাত্র ৬০০ ফুটের সেতুর অভাবে সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছেন পাঁচ ইউনিয়নের অন্তত দুই লাখ মানুষ। প্রসাদপুর গ্রামের বাসিন্দা ঔষধ ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন মন্ডল ও বাসুদেব কুমার দাস সহ অনেকেই বলেন, শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে লোকজন নদী পারাপার হন। বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি বাড়লে ঝুঁকি তখন আরও বেড়ে যায়। এ সময় নৌকার জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। পারাপারে সমস্যার কারণে সময়মত গন্তব্যে পৌঁছানো যায় না। রাত ১০ টার পর পারাপার বন্ধ হয়ে গেলে পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে পরে গন্তব্যে যেতে হয়। প্রসাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ড সদস্য শরিফ উদ্দিন বাচ্চু বলেন, প্রতিদিন এ খেয়াঘাট দিয়ে অন্তত ১৫-১৬ হাজার লোক পারাপার হন। ভরা বর্ষায় এক সাথে অতিরিক্ত লোক নৌকার চড়লে ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। অনেকে ঝুঁকি এড়াতে নদী পার না হয়ে পাঁচ কিলোমিটার পথ ঘুরে যাতায়াত করেন। প্রসাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন খাঁন বলেন, সংকটাপন্ন রোগীদের হাসপাতালে নিতে এ অঞ্চলের মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। নদী পারাপারের অপেক্ষায় না থেকে প্রসাদপুর খেয়াঘাট সংলগ্ন বিশ্ববাঁধের দরগাতলা মোড় থেকে ফেরিঘাট হয়ে আড়াই কিলোমিটার পথ ঘুরে পরে আবার ফেরিঘাট থেকে আড়াই কিলোমিটার মোট পাঁচ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে তবেই হাসপাতালে যেতে হয় তাদের। বিশেষ করে সন্তানসম্ভবা মায়েদের জন্য খুবই মারাত্মক সমস্যা দেখা দেয়। দীর্ঘ সময়ের কারণে এসব রোগীদের অনেককেই বাঁচানো সম্ভব হয় না। পথেই অনেকে মৃত্যুবরণ করেন।
চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন খান আরও বলেন, কৃষি প্রধান এলাকা হওয়ায় পণ্য পরিবহণে একইভাবে ভোগান্তির শিকার এখানকার দরিদ্র কৃষকরা। গনেশপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হানিফ উদ্দিন মন্ডল বলেন, সেতুটি নির্মাণ করা হলে সাতবাড়িয়া মোড় হয়ে গনেশপুর, মৈনম, কাঁশোপাড়া ও কশব ইউনিয়নের লোকজন মহাসড়ক ব্যবহান না করে তাড়াতাড়ি উপজেলা সদরে পৌঁছাতে পারবেন। দক্ষিণ এলাকার লোকজনও একইভাবে সতিহাটসহ নওগাঁ শহরে যাওয়ার সুবিধা পাবেন। গোটগাড়ী শহীদ মামুন সরকারি হাইস্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ ও সাবেক উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম বলেন, প্রসাদপুর খেয়াঘাটে একটি সেতুর অভাবে শিক্ষার্থীসহ সব শ্রেণী পেশার লোকজনকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। তাই এখানে একটি সেতুর জরুরি দরকার। গতবছর উক্ত সেতু নির্মাণ কাজের সমীক্ষা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মহোদয় সেতুটির সম্ভাব্যতা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। সেসসয় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে দ্রুত এ সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে বলেও আশ্বস্ত করেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com