কুমিল্লার তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বেড়েছে চিকিৎসা সেবার মান। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবা নিয়ে অতিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা প্রশ্ন থাকলেও সেই অবস্থার এখন অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে। জানা গেছে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ সরফরাজ হোসেন খান গত ২৫ অক্টোবর ২০১৯ ইং তারিখে এখানে যোগদানের পর হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা নিতে এসে সবাই যাতে ভালো পরিবেশ পান, সেই ব্যাপারে তিনি আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে থাকেন। যোগদানের পর প্রথমেই তিনি নজর দেন হাসপাতালের ভিতর-বাহিরে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ ডাক্তার, নার্স ও হাসপাতালের কর্মকর্তা/কর্মচারী যাতে সুশৃঙ্খল পরিবেশে নিজ নিজ কর্ম সঠিকভাবে পালন করেন এসেই এ ব্যাপারে সচেষ্ট হন। চিকিৎসা সেবার মান ভালো করার লক্ষ্যে হাসপাতালে রোগীর সেবায় নিয়োজিতরা ও অন্যান্য কর্মকর্তা/কর্মচারী তাদের কাজকর্মে ফাঁকি না দিতে পারেন তার জন্য তিনি নিবিড় মনিটরিং করেন এবং নানা প্রতিবন্ধকতা ও প্রতিকুলতার মধ্যেও অল্প সময়ের মধ্যে এখানে স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে তিনি ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য কর্মকর্তা/কর্মচারীদের মধ্যে আমূল পরিবর্তন এনেছেন। করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় উপজেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে টিম গঠন করে এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা খুবই সাহসী ভুমিকা রাখেন। করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় করোনা রোগীদের এই হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে করোনা রোগী ও করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীদের দেওয়া হয়েছে যতœসহকারে চিকিৎসা সেবা। এখানে ৬০০ জনের অধিক করোনা রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে যারা নিজ বাড়িতে ছিলেন প্রতিনিয়িত তাদের খোজ-খবর নেওয়াসহ পরামর্শ দিয়েছেন এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। তিনি এখানে জরুরী বিভাগে চালু করেছেন ইসিজি ও আরবিএজ পরীক্ষা। চালু করেছেন অপারেশন থিয়েটার, এখানে নিয়মিত সিজারিয়ান অপারেশন সহ ছোটখাটো অপারেশন হয়ে থাকে। চালু করেছেন করোনা রোগীর জন্য ১৩ শয্যা বিশিষ্ট আইসোলেশন ওয়ার্ড। ৩১ শয্যাবিশিষ্ট থেকে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে উন্নিতকরণ করেছেন। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে মুজিব কর্নার ও মুজিব গ্রন্থাগার স্থাপন করেছেন তিনি। ইতিমধ্যে কোভিড-১৯ ভ্যাক্সিনেশন প্রোগ্রামে উপজেলার প্রায় ৫২ শতাংশ মানুষকে টিকা প্রদান করা হয়েছে। উপজেলার ১২-১৭ বছর বয়সী ১৬ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীদের দিয়েছেন ফাইজারের করোনা টিকা, বহিঃ বিভাগ গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ রোগীর সেবা নিয়ে থাকে। অন্তঃবিভাগে রোগী ভর্তির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ওয়েব পোর্টালে সেবার তথ্য, সিটিজেন চার্টার, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের হালনাগাদ করা হয়েছে। এছাড়াও করোনার শুরুতে তিতাসবাসির স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে তিনি দিন রাত পরিশ্রম করেছেন, যার ফলশ্রুতিতে পার্শ্ববর্তী অন্যান্য উপজেলাগুলো থেকে তিতাসে করোনা সংক্রমন সহ মৃত্যুর হার অনেক কম। গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্যসেবা ও তাদের সার্বক্ষনিক খোজ-খবর নেওয়ার ক্ষেত্রেও এই হাসপাতাল থেকে দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা অনেক আন্তরিক। নরমাল ডেলিভারী এখানেই করা হয়। আগামীদিনে এখানে বিভিন্ন ধরনের অপারেশন সহ এক্স-রে যাতে করা যায় তার জন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সহ ট্যাকনিশিয়ান আনার জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে আবেদনও করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়নে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র গুলোতে এখন মেডিক্যাল অফিসারেরা নিয়মিত চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। এদিকে কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোতে গ্রামের মানুষ যাতে ভালো সেবা পায় সেই ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ সরফরাজ হোসেন খান ভালো ভুমিকা রাখছেন। উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে কথা বলে তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যসেবার মান বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এই স্বাস্হ্য কর্মকর্তা হাসপাতালের সেবার মান উন্নয়নে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলে জানান।