রংপুর সিটিতে পর্যাপ্ত হাইস্কুল নির্মাণ ও করোনাকালে শিক্ষার্থীদের বেতন ফি মওকুফের দাবিতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট রংপুর মহানগর শাখার উদ্যোগে প্রেসক্লাবে সামনে থেকে নগরে র্যালি করে। সংগঠনের ৩৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও মহানগর শাখা ২য় কাউন্সিলে কমিটি পরিচিতি উপলক্ষে র্যালি শেষে নগরে নিউক্রস রোডস্থ সুমি কমিউনিটি সেন্টারে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের মহানগর শাখার সভাপতি যুগেশ ত্রিপুরার সভাপতিত্বে আলোচনা করেন বাসদ জেলা আহবায়ক কমরেড আব্দুল কুদ্দুস, ছাত্রফ্রন্ট কেন্দ্রীয় সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি আলমগীর হোসেন সুজন, বেরোবি সভাপতি রিনা মুরমু, উত্তম কুমার দাস, মোতায়াক্কিম বিল্লাহ, মৌসুমী আক্তার মৌ প্রমূখ। আলোচনায় বাসদ নেতা কমরোড আব্দুল কুদ্দুস বলেন, সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে ছাত্র আন্দোলনকে ভয় পাই। সেজন্য নির্বাচন থেকে শুরু করে হাট-বাজার সবকিছু চালু রেখেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি বলেন, সরকার শিক্ষাকেই বাণিজ্যিকীকরণ সাম্প্রদায়িকীকরণ করায় আজ শ্রমজীবী পরিবারে সন্তান শিক্ষা থেকে যেমন বঞ্চিত হচ্ছে- তেমনি সাম্প্রদায়িক শিক্ষা মাদ্রাসা শিক্ষার দিকে ঝুকে পড়ছে। অন্যদিকে শিক্ষা বাণিজ্যিকীকরণ চালু থাকায় শিক্ষা আজ “টাকা যায় শিক্ষা তার নীতিতে পরিণত” হয়েছে। তিনি এসকল বৈষম্য বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানান। কেন্দ্রীয় নেতা আলমগীর হোসেন বলেন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়নে দাবি করে আসছে। আলোচনায় তিনি বলেন, আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা হচ্ছে না। শিক্ষকরা প্রশাসনিক পদ পদবী নিয়ে ব্যস্ত। তার জন্য দায়ী শাসকশ্রেণির আদর্শহীন দলীয়করণ নিয়োগ বাণিজ্য রাজনীতি। বেরোবি সভাপতি রিনা বলেন, সম্প্রতি শাবিপ্রবিতে প্রশাসন ও ছাত্রলীগ মদদে পুলিশ বাহিনী যে ন্যাক্কারজনক হামলা ও গতকালের ৩৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পরিষদের শাবিপ্রবির ভিসির পক্ষ নেয়ার মধ্যে দিয়ে আবারও পরিষ্কার হয়েছে যে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শাকসশ্রেণি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তিনি অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের দাবিকে সম্মান জানিয়ে শাবিপ্রবি ভিসির পদত্যাগের দাবি জানান। সভাপতি যুগেশ ত্রিপুরা বলেন, ছাত্র সমাজের সময় এসেছে ছাত্র রাজনীতির আদর্শবাদী ধারাকে শক্তিশালী করে আন্দোলন গড়ে তোলা। তিনি বলেন, রংপুর সিটিতে পর্যাপ্ত সরকারি হাইস্কুল নির্মাণের দাবীতে আগামীতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট আন্দোলন করবে। এই আন্দোলনে রংপুরের সকল ছাত্র/ছাত্রী, অভিভাবক ও সর্বস্তরের জনসাধারণের সহযোগিতা চান। বক্তারা আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা সাম্য মানবিক ন্যায়বিচারের বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ছাত্র আন্দোলনে বিকল্প নেই। সেই আন্দোলকে শোষণমূলক পুঁজিবাদী ব্যবস্থা ভাঙ্গার আন্দোলনে রূপ দিতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের পতাকা তলে যোগ দেয়ার উদাত্ত আহবান জানান। উল্লেখ্য, আলোচনা শেষে কেন্দ্রীয় নেতা আলমগীর হোসেন সুজন, গত ১৫ জানুয়ারি ’২২ তারিখে ২য় কাউন্সিলের যুগেশ ত্রিপুরা আহবায়ক ও উত্তম কুমার দাসকে সাধারণ সম্পাদক করে রংপুর মহানগরের ১১সদস্য বিশিষ্ট কমিটি পরিচিতি করা হয়।