রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৫ অপরাহ্ন

রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিচার না করায় মিয়ানমারের এই পরিণতি: মিশেল ব্যাচেলেট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শনিবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০২২

চার বছর আগে রাখাইনে রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের ওপর বর্বর নির্যাতন চালানো সেনাদের বিচার না করার কারণেই মিয়ানমারে আজ এমন সংকট তৈরি হয়েছে। এ ধরনের ঘটনায় দায়মুক্তি দিতে থাকলে দেশটিতে কোনোদিনই স্থিতিশীলতা আসবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট। তিনি বলেন, মিয়ানমারে যতদিন দায়মুক্তি রয়েছে, ততদিন স্থিতিশীলতা শুধু কল্পকাহিনী হয়েই থাকবে। সামরিক বাহিনীর জবাবদিহিতা যেকোনো সমাধানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জনগণ এটি জোরালোভাবে দাবি করে আসছে।
ব্যাচেলেট বলেন, মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করেছে প্রায় এক বছর হতে চললো। দেশটির মানুষ প্রাণ ও স্বাধীনতা হারানোর ক্ষেত্রে চরম মূল্য দিচ্ছে। মিয়ানমারের সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রচেষ্টায় ‘ঘাটতি’ রয়েছে এবং যেটুকু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা ‘অকার্যকর’ বলে কড়া সমালোচনা করেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান। দেশটিতে দ্রুত গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও জনগণের ওপর দমন-পীড়ন বন্ধে জান্তা সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে বিশ্বনেতাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। মিশেল ব্যাচেলেট বলেন, মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান ও এর পরবর্তী সহিংসতার নিন্দা প্রায় সার্বজনীন হলেও এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের গৃহীত পদক্ষেপ একেবারেই ‘অকার্যকর’। সংকটের মাত্রার সঙ্গে এর সামঞ্জস্য নেই।
তিনি বলেন, মিয়ানমারে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জরুরি ভিত্তিতে নতুন প্রচেষ্টা এবং পদ্ধতিগত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ক্ষমতার অপব্যবহার করা অপরাধীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার সময় এসেছে। মিয়ানমার সংকটের সমাধান না হওয়ায় এদিন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ও দক্ষিণপূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট আসিয়ানেরও সমালোচনা করেন চিলির সাবেক এ প্রেসিডেন্ট। তার মতে, মিয়ানমারে মানবিক সহায়তা চালুর জন্য জান্তা নেতাদের বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছে সংস্থা দুটি। ব্যাচেলেট জানান, তার সঙ্গে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থিদের কথা হয়েছে। তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সঙ্গ না ছাড়ার অনুরোধ জানিয়েছে। গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। কিন্তু তা মেনে নেয়নি দেশটির সাধারণ মানুষ। অভ্যুত্থানের বিরোধিতায় রাস্তা নেমে আসেন তারা। শুরু হয় ব্যাপক সহিংসতা, ধরপাকড়। জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিসের হিসাবে, মিয়ানমার জান্তা সরকারের হাতে এ পর্যন্ত অন্তত দেড় হাজার বিক্ষোভকারী প্রাণ হারিয়েছেন। হামলা-সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা আরও কয়েক হাজার হতে পারে। সংস্থাটি জানিয়েছে, সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলায় মিয়ানমারে অন্তত ১১ হাজার ৭৮৭ জনকে আটক করা হয়, যাদের মধ্যে ৮ হাজার ৭৯২ জন এখনো বন্দি। এছাড়া, বন্দিদশায় মারা গেছেন অন্তত ২৯০ জন। এদের বেশিরভাগেরই মৃত্যুর কারণ ব্যাপক নির্যাতন।
আগামী মার্চ মাসে মিয়ানমারে অভ্যুত্থান পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে একটি বিশদ প্রতিবেদন প্রকাশ করা কথা রয়েছে জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিসের। সূত্র: এপি, এএফপি, আল জাজিরা




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com