শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৫ পূর্বাহ্ন

দেশের উত্তরাঞ্চলে হাড় কাঁপানো শীত

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০২২

শীতের তীব্রতা হু হু করে বাড়ছে। সারাদিন বইছে কনকনে ঠান্ডা বাতাস, সেই সঙ্গে হাড় কাঁপানো শীত। টানা তিনদিনের মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ এবং ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে তিস্তাপাড়ের জেলা লালমনিহাটের মানুষের জীবন। প্রচ- শীতে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের চলাফেরা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। আবার শীতের প্রকোপে বেড়েছে হাঁপানি, অ্যাজমা, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টজনিত রোগ। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এসব সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। গতকাল রোববার (৩০ জানুয়ারি) বেলা ১১টা পর্যন্ত কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে জেলার অধিকাংশ এলাকা। মাঝে-মধ্যে সূর্য উঁকি দিলেও ঝলমলে রোদের দেখা মিলছে না। ফলে কনকনে ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। গতকাল রোববার সকাল ৯টায় কুড়িগ্রাম রাজারহাট উপজেলার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র জানান, লালমনিরহাটে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে সকাল ৬টায় সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী কয়েক দিন তাপমাত্রা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে।
এদিকে, লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার তিস্তা, ধরলা তীরবর্তী এলাকার খেটে খাওয়া মানুষ কয়েক দিন থেকে কাজকর্ম না পেয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় সাধারণ মানুষের শীতের কাপড় না থাকায় খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। মহাসড়কগুলোতে হেডলাইড জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল জানান, তিস্তা নদীবেষ্টিত এ ইউনিয়নে শীতের তীব্রতা বেশি। সরকারি ও ব্যক্তিগতভাবে এলাকায় প্রায় পাচঁশো শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় জানান, হাঁপানি, অ্যাজমা, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় পাঁচ উপজেলায় ৯০ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছেন ৩০ জন। তবে শীতের তীব্রতা বাড়ায় রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
হাড়-কাঁপানো শীতে স্থবির দেশ, তাপমাত্রা রেকর্ড ৬.৮: উত্তরের হিম বাতাস ও হাড়-কাঁপানো শীতে দেবীগঞ্জে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। হিম বাতাস ও ঘনকুয়াশার সাথে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির ফোটার মতো কুয়াশা ঝরার কারণে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। জরুরি কাজ ছাড়া মানুষ বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না। তীব্র শীত উপেক্ষা করে কাজের সন্ধানে ছুটছে অনেক দরিদ্র ও নি¤œ আয়ের মানুষ। এদিকে ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত ঘনকুয়াশা থাকায় দেবীগঞ্জের সড়কগুলোতে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহনগুলো চলাচল করতে দেখা গেছে। শীতবস্ত্রের অভাবে অনেক দরিদ্র ও নি¤œ আয়ের মানুষ রাস্তার পাশে খড়-কুটো জ্বালিয়ে ঠা-া নিবারণের চেষ্টা করছে।
বিকেল হতেই বইছে উত্তরের হিমবাতাস, সেই সাথে বাড়ছে তীব্র শীত। সন্ধ্যা নামতেই বাজার থেকে মানুষের আনাগোনা কমে যায়। শহরের কামাত পাড়া মহল্লার আকতারুজ্জামান আকতার জানান, মসজিদে ফজরের নামাজ পড়ে রাস্তায় হাঁটতে বের হয়েছি খুব শীত লাগছে। সেই সাথে বইছে বাতাস। শীতের মধ্যে চলাফেরা করতে খুব সমস্যা হচ্ছে। যদি রোদ উঠে তাহলে আমরা একটু রেহাই পাবো।
দেবীগঞ্জ উত্তর পাড়ার অটোভ্যানচালক রবিউল বলেন, দেবীগঞ্জে তীব্র শীতের কারণে যাত্রী কম। সকালে ঘনকুয়াশা ও শীতের কারণে যাত্রী নাই। আমরা ভাড়া পাচ্ছি না সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যক্ষেণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: রাসেল শাহ জানিয়েছেন, তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা উঠা-নামা করছে। রোববার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com