সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:২২ পূর্বাহ্ন

পায়ে হেঁটে বাবা-ছেলে গাইবান্ধা থেকে হিলি

হিলি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

শখের বশে মানুষ দেশ-বিদেশে ভ্রমণ করে উড়োজাহাজ, পানিজাহাজ, ট্রেন, বাস, রিকশা-ভ্যান, মোটরসাইকেল কিংবা বাইসাইকেল। এক সময় মানুষ গরু গাড়ি, ঘোড়া গাড়ি এবং হাতি ও উঠের পিঠে চড়ে ভ্রমণ করতো। কিন্তু গাইবান্ধার সদর উপজেলার গোবিন্দপুর এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন (অনারারী) সাদেক আলী সরদার(৬৩) পায়ে হেঁটে দেশ ভ্রমণে নেমেছেন। এযেন এক ব্যতিক্রম ভ্রমণ, সফর সঙ্গী হিসেবে পাশে পেয়েছেন তারি ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান(৩০)কে। রবিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৫ টা ১২ মিনিটে গাইবান্ধা থেকে হিলির উদ্দেশ্যে রওনা দেন বাবা ও ছেলে এবং হিলিতে পৌঁছান তারা বিকেল ৫ টায়। গাইবান্ধা হতে হিলির দুরত্ব ৭০ কিলোমিটার, এনিয়ে মোট ৯০০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে পাড়ি দিয়েছেন এই বাবা-ছেলে। শখ এবং শরীর চর্চা তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য। এর আগে ৩২ বার পায়ে হেঁটে বিভিন্ন স্থানে গিয়েছেন তারা। হিলি দিয়ে ৩৩ বার তাদের পথ চলা, পরবর্তীতে তাদের সফর কক্সবাজার। ২০০৬ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহন করেন ক্যাপ্টেন সাদেক আলী সরদার। বাড়িতে এসে বসে সময় কাটাতে ভাল লাগে না তার এবং শরীরও যেন অকেজো হয়ে পড়ছে। শরীরকে ঠিক রাখতে প্রথমে সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে একা হাঁটতে শুরু করেন তিনি। ক্যাপ্টেন সাদেক আলীর দুই ছেলে এক মেয়ে, মেয়ে বড়, তার বিয়ে দিয়েছেন অনেক আগে। মেজো ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান এজজন ব্যবসায়ী। আর ছোট ছেলে তিনিও একজন সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন হিসেবে কর্মরত আছেন। দুই ছেলের সাথে তার বন্ধু সুলভ সম্পর্ক, ছেলেরাও বাবার সাথে সময় দিতে ভালবাসেন। বাবাকে সঙ্গ দিতে এবং তার শখ পুরনে সফর সঙ্গী হয়েছেন মেজো ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান। বগুড়া, রংপুর, পীরগঞ্জ এবং গাইবান্ধার সব উপজেলা সহ বিভিন্ন স্থানে বাবাকে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি। আবারও ৭০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে পাড়ি দিয়ে হিলিতে আসেন তারা। ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাবার প্রতি ভালবাসাটাই এখানে কাজ করেছে, উনাকে আমি আমার বন্ধুর মতো দেখি। ছোট বেলা থেকে আমরা দুই ভাই বাবার সাথে বন্ধুর মতো চলি। বাবার বয়স হয়ে গেছে, তাই তাকে একলা ছাড়তে পারি না। বাবার সাথে পায়ে হেঁটে পথ চলছি, এতে করে আমার শরীরেরও চর্চা হচ্ছে। শরীর ঠিক রাখতে শরীর চর্চার প্রয়োজন আছে। আগামীতে আমাদের আরও অনেক জায়গায় যাওয়ার প্লান আছে। বাবার প্রতি দায়িত্ববোধ ও ভালবাসা আছে, বিধায় হাজার মাইল পথ পাড়ি দিতে ক্লান্তি বা অনীহা আসছে না। সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন সাদেক আলী সরদার বলেন, আমি আর্মির রিটায়ার্ড অফিসার, পথ চলতে ভয় করি না। সকালে বাসা থেকে বেড় হয়েছি। হিলিতে পৌঁছাতে ৭০ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করতে সময় লেগেছে প্রায় ১৬ ঘন্টা। সকাল থেকে রাস্তায় ভারি কোন খাবার খাইনি। কেন না ভারি খাবার খেলে পথ চলতে অনেক অসুবিধা হবে। তাই পথেমধ্যে যেখানে যা পাচ্ছি শুকনা জাতীয় খাবার, তাই বাবা-ছেলে খেয়ে নিচ্ছি। এতে আমার কোন অসুবিধা হচ্ছে না।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com