ষড়যন্ত্রমুলক মিথ্যা মামলা জড়ানোর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভুগি পাবনা জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ন সম্পাদক মেহেদী হাসান বিদ্যুত। গতকাল বুধবার দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা মৎস্যজীবি লীগের সদস্য সচিব মেহেদী হাসান হিরক। তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত ৬ ফেব্রুয়ারী একটি চোরাই মোটর সাইকেল ক্রয়-বিক্রয়ের শালিস করে প্রকৃত মোটরসাইকেলের মালিককে ফিরিয়ে দেওয়ার রায় ঘোষনা করেন মেহেদী হাসান বিদ্যুত। কিছুক্ষন পর র্যাবের একটি অভিযান দল ঘটনাস্থলে গিয়ে মেহেদী হাসান বিদ্যুতসহ ৬জনকে আটক করে। পরে ৪জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সে সময় কোম্পানী কমান্ডার বলেন চোরদের ধরিয়ে দিতে পারলে বিদ্যুতকে ছেড়ে দেওয়া হবে। পরবর্তিতে ওই রাতেই চোরদেরকে ধরে র্যাবের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এরপরেও বিদ্যুতকে হোন্ডা চুরির মামলায় ফাঁসানো হয়। বিদ্যুতের দাবি তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস করতে একটি মহল র্যাবকে দিয়ে এ কাজ করিয়েছে। লিখিত বক্তব্যে আরো উল্ল্যেখ করা হয়, ছাত্রলীগ করি, এ জন্য সামান্য মানবিক আচরণতো দুরের কথা ছাত্রলীগ করা যেন মহাপাপ, বার বার দল তুলে গালাগালি করায় আমার কাছে মনে হয়েছে র্যাবের গোয়েন্দা ওই সদস্য বিএনপি বা জামায়াত ইসলামের সক্রিয় সদস্য। তার মুখে বারবার একই কথা শালা আওয়ামীলীগ ছাত্রলীগ করো। ক্ষমতা দেখাও। আজ তোদের গরম ডিমের থেরাপি দিয়ে ছাত্রলীগ করার সাধ মিটিয়ে দেবো। তোদের কারনে আমাদের একজন সদস্য পাবনা থেকে বদলী হতে হয়েছে। অনেক দিন ধরে অপেক্ষায় ছিলাম। আজকে তোদের সেই জালে আটকাতে পেরেছি। কালাম চলে গেছে তো কি হয়েছে, আমরা তো সবাই পাবনা থেকে চলে যায়নি। তখন বুঝতে আর বাকি রইল না। বিষয়টা পুর্বপরিকল্পিত একটি সাজানো নাটক। উল্লেখ্য গত ২০২০ সালের ৪জুলাই দিবাগত রাতে র্যাবের একটি অভিযান দল গভীর রাতে আমার বাড়িতে জোর পুর্বক প্রবেশ করে প্রতিটি ঘরে চিরুনি তল্লাশির নামে তছনস ও ভাংচুর করে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। পরে এ বিষয়ে মিডিয়াতে খবর প্রকাশিত হলে কর্পোরাল কালামকে পাবনা থেকে বদলী করা হয়। কালাম যাবার আগে বলে গিয়েছিল, আমি চলে গেলাম কিন্তু সবাই তো রইল। আমার এই অপমানের শাস্তি তোকে পেতেই হবে বলে হুমকি দিয়েছিল। তখন আমি মনে করতে পারলাম কেন আমাকে র্যাব ধরে এনেছে। এদিকে র্যাব আমার ছোট ভাই ইমন ও আমার ছোট চাচা আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ৪জনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সাদা কাগজে মুচলেকা নিয়ে ও ভিডিও তে জোর পুর্বক স্বীকারোক্তি নিয়ে ছেড়ে দেয়। এসময় র্যাব আমার সামনে আমার ছোট ভাই ও চাচাকে বলে যখন তোদের ক্যাম্পে ডাকা হবে তখনই চলে আসবি। কোন চালাকির চেষ্টা করা হলে গায়েব হয়ে যাবি। এরপর জনৈক র্যাব সদস্য শিমুল আমাকে মারতে মারতে বলে তোর চাচা মামুনকে কখন যে গায়েব করে দেবো, জানতেও পারবি না। সেদিন তোদের কোন বাপ থাকলে যেন রক্ষা করে। আর শালা ছাত্রলীগ করিস। ছাত্রলীগ আজ তোর পাছার মধ্যে ভরে দিবো বলে মারতে থাকে। আর জোর পুর্বক হোন্ডা চুরির সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করতে বলে। আমি তখন বলি যে কাজে আমি জড়িত না, সে কথা আমি মরে গেলেও স্বীকার করবো না। আপনারা আমাকে পরিকল্পিতভাবে এবং অন্যায়ভাবে নির্যাতন করছেন। পরে রাত ২টার দিকে থানায় নেওয়ার আগে বলে, থানায় যদি বলিস তোদেরকে মেরেছি, শরীরে ব্যাথা আছে, তাহলে তোদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করে ৪/৫ দিন শীতের মধ্যে মেঝেতে শুইয়ে রাখবো। তখন আমরা আবারও কষ্টের হাত থেকে রক্ষা পেতে তাদের শিখিয়ে দেওয়া কথা থানায় বলতে বাধ্য হয়। এর আগে র্যাব আমাকে সহ আমার চাচাকে বলে জয়কে ধরিয়ে দিলে আমাকে ছেড়ে দিবে। পরে পরিবারের সদস্যরা জয়ের পরিবারের সাথে আলাপ আলোচনা করে জয়কে র্যাবের হাতে তুলে দেয়। গ্রেফতারকৃত মিম ও জয় আমার সামনে বলে এই হোন্ডা ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে বিদ্যুত ভাই কোনভাবেই জড়িত না। আমাদের মধ্যে সমস্যা হওয়া বিদ্যুত ভাই এর কাছে মিমাংসা করার জন্য বিচার দিয়েছিলাম। বিদ্যুত ভাই আমাদের ডেকে সব শোনার পর মোটারসাইকেল মলিককে ফোন দিয়ে ডেকে মোটরসাইকেল দিয়ে দিতে বলেন, আর জয়ের কাছ থেকে মিম যে ৯ হাজার টাকা মোটরসাইকেল বিক্রয়ের জন্য গ্রহন করে সেটা জয়কে ফেরত দিতে বলে। এরপরেও র্যাব আমাকে মিথ্যাভাবে মোটরসাইকেল চুরির সাথে জড়িত করেছে। শুধু তাই নয় র্যাবের সদস্য শিমুল আরো বলে তোর রাজনীতি শেষ, তুই এখন হোন্ডা চোরের বস। তোর রাজনীতির ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দিলাম। প্রশাসনের সাথে লাগিস, প্রশাসন এখন দেশ চালায়, কোন নেতাকে গুনার টাইম নেই আমাদের। সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে দোষি র্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মেহেদী হাসান বিদ্যুত, ভুক্তভুগির দাদি খোদেজা খাতুনসহ গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ।