মার্চের প্রথম সপ্তাহে (২-৩ মার্চ) বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজি মোহাম্মদ সেলিম। বৃহস্পতিবার তার আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বিচারিক আদালতে এখনো রায়ের নথি পৌঁছায়নি। নথি পৌঁছালে মার্চের ২-৩ তারিখে আত্মসমর্পণ করে আপিল বিভাগে জামিন চাইব।’
সংসদ সদস্য পদ থাকবে না দুদক আইনজীবীর এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি এখনো আপিল বিভাগে নিষ্পত্তি হয়নি। আমরা আপিল বিভাগে আবেদন করব। সেখানেই বিষয়টি চূড়ান্তভাবে সিদ্ধান্ত হবে। এর আগেই সংসদ সদস্য পদ চলে যাবে, এমনটি বলার সুযোগ নেই।’ বিষয়টি নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন হাজি সেলিমের আইনজীবী।
উল্লেখ্য, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ২০০৭ সালে হাজি সেলিমের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন এবং ৫৯ কোটি ৩৭ লাখ ২৬ হাজার ১৩২ টাকার তথ্য গোপনের অভিযোগে রাজধানীর লালবাগ থানায় মামলা করে দুদক। ওই মামলায় ২০০৮ সালে হাজী সেলিমকে দুদক আইনের দুটি ধারায় মোট ১৩ বছর কারাদ- দেন বিশেষ জজ আদালত। ২০০৯ সালে হাজী সেলিম বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০১১ সালে ওই সাজা বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে দুদক। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালে হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় শুনানি করতে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। নির্দেশ অনুযায়ী ২০২০ সালের মামলাটি শুনানির জন্য উদ্যোগ নেয় দুদক। শুনানিতে হাজি সেলিমের মামলার যাবতীয় নথি (এলসিআর) তলব করেন হাইকোর্ট। ওই নথি পাওয়ার পর গত বছরের ৩১ জানুয়ারি শুরু হয় পুনঃশুনানি। এরপর গত বছরের ৯ মার্চ রায় ঘোষণা করেন আদালত। রায়ে আংশিক আপিল মঞ্জুর করে ১০ বছর কারাদ-াদেশ বহাল রাখেন হাইকোর্ট। গত ৯ ফেব্রুয়ারি রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে তাঁকে এক মাসের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। রায়ের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের সিনিয়র আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘১০ বছরের কারাদ- বহাল থাকায় হাজি সেলিম সংসদ সদস্য পদ হারাবেন। আইন অনুযায়ী তিনি সংসদ সদস্য থাকতে পারেন না।’