একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দণ্ডিত বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা বাতিলের নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের করা রিট আবেদনে দ্বিধাবিভক্ত আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১১ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বিভক্তি আদেশে নিয়ম অনুযায়ী প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হবে। তিনি তৃতীয় বেঞ্চ গঠন করে দেবেন এভং এরপর এ বিষয়ে আবারও শুনানি করা হবে।
হাইকোর্টের বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ খালেদা জিয়ার মনোনয়ন বাতিলে নির্বাচন কমিশনের আদেশ স্থগিত করে রুল জারি করেন। বেঞ্চের অপর বিচারপতি মো. ইকবাল কবির এ আদেশের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন।
আদেশের পর খালেদা জিয়ার আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, প্রিজাইডিং জাজ খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন এমন আদেশ দিয়েছেন। কিন্ত দ্বিতীয় জাজ ডিসেন্টিং অর্ডার দিয়েছেন। অর্থাৎ দাঁড়ালো বিভক্তি আদেশ এসেছে।
তিনি আরও বলেন, প্রিজাইডিং জাজ দিয়েছেন খালেদা জিয়ার নির্বাচন করার পক্ষে। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ না এই মর্মে রুল জারি করেছেন। ডাইরেকশন দিয়েছেন নির্বাচনের যাবতীয় ফর্মালিটিজি নেওয়ার জন্য।
বিভক্ত আদেশ আসায় এখন নিয়ম অনুযায়ী এ মামলার নথিপত্র প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হবে জানিয়ে কায়সার কামাল বলেন, প্রধান বিচারপতি তৃতীয় একটি বেঞ্চ গঠন করে দেবেন আবেদনটি নিষ্পত্তি করার জন্য। আমরা প্রত্যাশা করছি, তৃতীয় বেঞ্চে আমরা ন্যায় বিচার পাব, সঠিক সিদ্ধান্ত পাব।
এর আগে এই রিটের ওপর শুনানি শেষে সোমবার হাইকোরেটর সংশ্লিষ্ট দ্বৈত বেঞ্চ এ বিষয়ে আদেশের জন্য আজ মঙ্গলবার দিন ঠিক করেন।
আদালতে খালেদার পক্ষে শুনানি করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, যিনি নির্বাচন কমিশনের শুনানি করেছিলেন। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তার সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির। এছাড়া ব্যারিস্টার বদরোদ্দোজা বাদল, কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট সালমা সুলতানা সুমা, ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান ও ফাইয়াজ জিবরান প্রমুখ শুনানির সময় খালেদার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও ৭ আসনে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিল বিএনপি। তবে গত ২ ডিসেম্বর বাছাইয়ের সময় তা বাতিল করে দেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া ইসিতে আপিল করলেও তা খারিজ হয়ে যায়।
পরে ওই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবীরা। ওই আবেদনের শুনানি শেষে আজ (মঙ্গলবার) এ রায় এলো।
জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছর ও জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৭ বছরের দণ্ড নিয়ে গত ফেব্রুয়ারির ৮ তারিখ থেকে কারাগারে আছেন খালেদা জিয়া।
খবরপত্র/এমআই