ফরিদপুরের আলোচিত দুই হাজার কোটি টাকা পাচার মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর গ্রেপ্তার হয়েছেন, যিনি সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ছোট ভাই। গত সোমবার রাত ৩টার দিকে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে বাবরকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান। বাবর সবশেষ ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। একসময় সদর উপজেলার চেয়ারম্যানের দায়িত্বেও তিনি ছিলেন। যে মামলায় তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন, ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা সাজ্জাদ হোসেন বরকত এবং তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেলও সেই মামলার আসামি। ২০২০ সালের ১৬ মে রাতে ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট মহল্লার মোল্লাবাড়ী সড়কে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে দুই দফা হামলা হয়। পরে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন তিনি। ওই ঘটনায় ৭ জুন রাতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার হন বরকত ও রুবেল। তাদের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও অর্থপাচারের খবর এরপর বেরিয়ে আসতে থাকে, বেশ কয়েকটি মামলাও হয়। অর্থপাচারের অভিযোগে ওই বছর ২৬ জুন ঢাকার কাফরুল থানায় একটি মামলা করেন সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ। তদন্ত শেষে গতবছরের ৩ মার্চ ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপার উত্তম কুমার বিশ্বাস। সেখানে বরকত, রুবেল এবং বাবরসহ মোট ১০ জনকে আসামি করা হয়। ফরিদপুরের এলজিইডি, বিআরটিএ, সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি বিভাগের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং অন্তত দুই হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে।
আসামিদের মধ্যে বরকত ও রুবেল ছাড়াও ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভী ও শহর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিবুর রহমান ফারহান কারাগারে ছিলেন। আর খন্দোকার মোহতেশাম হোসেন বাবর, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রীর এপিএস এএইচএম ফুয়াদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ওরফে ফাহিম, যুবলীগ নেতা কামরুল হাসান ডেভিড, মুহাম্মদ আলী দিদার ও তারিকুল ইসলাম ওরফে নাসিম পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল আদালত। গত মঙ্গলবার দুপুরে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় সংবাদ সম্মেলন করে বাবরকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে বলে অতিরিক্ত পুলিশ (প্রশাসন ও অপরাধ) জামাল পাশা জানিয়েছেন।