মৌলভীবাজারের বড়লেখায় বন্যার্তদের আশ্রয়ের জন্য নির্মাণাধীন আশ্রয় কেন্দ্রের বহুতল ভবনের কাজ শেষ হওয়ার আগেই ফাটল দেখা দিয়েছে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। উপজেলার বর্ণি ইউপির পাকশাইল একাডেমির প্রাঙ্গণে নির্মিত এই ভবনের নির্মাণ কাজের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জনমনে। ভবনের দেয়াল নড়বড়ে, সিঁড়িসহ বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেওয়ায় এলাকাবাসীর মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের আওতাধীন বন্যা প্রবণ ও নদী ভাঙ্গন এলাকায় বন্যার্তদের আশ্রয়ের জন্য বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় তিনতলা বিশিষ্ট ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রায় তিন কোটি আটচল্লিশ লক্ষ ছাপ্পান্ন হাজার টাকা বরাদ্দে ভবনটির নির্মাণকাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মামুন এন্টারপ্রাইজ। ২০১৯ সালে ভবনটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়, ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। এলাকাবাসী জানায়, ভবন নির্মাণের সময় নিম্নমানের কাজ ও অনিয়মের বিরুদ্ধে বাধা দিলেও আমলে নেয়নি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে ভবনটির বিভিন্ন অংশে ফাটলের চিত্র স্পষ্ট ও দৃশ্যমান। কাজ শেষ হবার আগেই ফাটল দেখা দেওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্রের কার্যক্রম নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয়রা। সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনের দেয়ালের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। তৃতীয় তলার দেয়ালে হাত দিয়ে আলতো ধাক্কা দিলে সাগরের ঢেউয়ের ন্যায় হেলদোল খাচ্ছে ও দেয়াল ভেঙ্গে পরছে। দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় তলার সিঁড়ির বেয়ে উঠার সময় সিঁড়ি দোলছে। এ প্রসঙ্গে বর্ণি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাইবুর রহমান বলেন, ভবনটিতে অতি নিম্নমানের কাজ হচ্ছে, সিঁড়িতে হাটলে সিঁড়ি ঝুলঝুল করছে। এ অবস্থায় ভবনের কাজ সম্পন্ন হলে পরবর্তী বন্যাকালীন সময় মানুষ এখানে আশ্রয় নিলে ঘটতে পারে হতাহতের ঘটনা। ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান শাইবুর রহমান বলেন, নবনির্মিত ভবনের কাজ শেষ হবার আগেই বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে এবং যথাযথ তদারকির অভাবে নির্মাণকাজে এ অনিয়ম হচ্ছে। এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত এমডি রাজু আহমদ বলেন, ভবনের দেয়াল ও সিঁড়িতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না দেওয়ার ফলে ফাটল ধরেছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা উবায়েদুল্লাহ খান বলেন, ‘ভবন ফাটলের বিষয়টা শুনেছি, বর্তমানে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে।