বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
ছাত্র-ছাত্রীদেরকে লেখাপড়ার পাশাপাশি গবেষণায় মনোযোগ দিয়ে হবে-অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বোরহানউদ্দিনে বিডি ক্লিনের খাল পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান সম্পন্ন লালমোহনে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে সার-বীজ বিতরণের উদ্বোধন নীলফামারীর ডোমারে ওলামা দলের মতবিনিময় সভা অ্যাডভোকেট হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে রাঙ্গামাটিতে আইনজীবীদের মানববন্ধন নড়াইলে মহান বিজয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে প্রস্তুতিমূলক সভা ব্রহ্মপুত্রের ভাঙ্গন রোধের দাবীতে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর মানববন্ধন নিলাম ডাকে সিন্ডিকেটের কবলে রৌমারী কাস্টমস মঠবাড়িয়ায় টাকা আত্মসাতের অভিযোগ দুবেলা খেয়ে পরে বেঁচে থাকার সংগ্রামে টিকে থাকার লড়াই

‘বাংলাদেশের জনগণকে’ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বার্তা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ৪ এপ্রিল, ২০২২

আজ বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তী। ৫০ বছর আগে ঠিক এই দিনে (৪ঠা এপ্রিল, ১৯৭২) সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছিল বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব স্থাপনের সুবর্ণ জয়ন্তীর দিনটিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিনকেন ‘বাংলাদেশের জনগণের উদ্দেশ্যে একটি বার্তা প্রেরণ করেছেন। সোমবার সকালে ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ফেসবুক পেইজ থেকে ৩ মিনিট ১১ সেকেন্ডের ওই ভিডিওবার্তাটি পোস্ট করা হয়। দৈনিক খবরপত্রের পাঠকদের জন্য মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যটি হুবহু বাংলায় তুলে ধরা হলোঃ
‘শুভ সন্ধ্যা,বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পাঁচ দশকের কূটনৈতিক সম্পর্ক উদযাপনে আপনাদের সাথে যোগ দিতে পেরে আমি আনন্দিত। ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারীতে সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে সফর করেছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন এবং আমাদের দু’দেশের জনগণের মধ্যেকার বন্ধন স্বাধীনতার জন্য আমাদের অনুরূপ সংগ্রাম স্বাধীনতার প্রতি আমাদের ভালোবাসা ও ‘স্বাধীনতার পথ অনুসরণ’ করে আমাদের যাত্রার কথা তুলে ধরেন। এর কিছুদিন পরেই ৪ এপ্রিল, ১৯৭২ প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানকে চিঠি পাঠান এবং আশা প্রকাশ করেন যে, দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ফলে আগামী বছরগুলোতে আমাদের জনগণের মধ্যেকার সৌহার্দ্য ও বন্ধন বৃদ্ধি পাবে।
৫০ বছর পরে, আমাদের দুটি দেশ আমাদের জনগণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রায় প্রতিটি বিষয়েই সহযোগিতা করে এবং বাংলাদেশী ও আমেরিকানদের মধ্যকার সম্পর্ক প্রতিটি প্রজন্মের মধ্য দিয়েই আরো বেশি গভীর ও ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। আমাদের দুটি দেশ জনস্বাস্থ্যের উন্নয়ন, স্থানীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা, গত দুই দশকে বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যুর হার দুই-তৃতীয়াংশে কমিয়ে আনা এবং বাংলাদেশীদেরকে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক প্রদত্ত ৬ কোটি ১০ লক্ষ নিরাপদ ও কার্যকর টিকা দিয়ে কোভিড-১৯’র বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য জোরালো অংশীদারিত্ব স্থাপন করেছে। ২০২১ সালে অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশী পণ্য বেশি ক্রয় করেছে। যার মূল্যমান প্রায় ৮.৩ বিলিয়ন ডলার। আমাদের শক্তিশালী অর্থনৈতিক অংশীদারীত্বকে আরো গভীর করতে আমরা বাংলাদেশকে শ্রমিকদের অধিকার বিষয়ে অগ্রগতি বিষয়ে উন্নতি সাধনে উৎসাহিত করি। আমরা একসাথে জলবায়ু সংকট মোকাবিলা করছি এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও আরো মারাত্মক ঝড়ের কারণে ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত জনপদের সহিষ্ণুতা জোরদার করছি। আমরা দূষণহীন জ্বালানিতে বিনিয়োগ করছি এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাংলাদেশের জলাভূমি ও বনাঞ্চল সুরক্ষা করছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগে সাড়া দেওয়া থেকে শুরু করে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সর্বোচ্চ সংখ্যক সেনা প্রেরণকারী অন্যতম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ভূমিকাকে সমর্থন করা পর্যন্ত বিভিন্ন মানবিক সংকট ও সংঘাত মোকাবেলায় আমরা একসাথে কাজ করি। আমরা রোহিঙ্গাদের সহায়তার জন্যও একসাথে কাজ করছি যারা বার্মার সামরিক বাহিনীর গণহত্যা ও মানবতা-বিরোধী অপরাধের কবল থেকে পালিয়ে এসেছে। আমরা বাংলাদেশের প্রশংসা করি প্রায় ১০ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয়দান ও সহায়তা দেয়ার অব্যাহত প্রচেষ্টার জন্য যেমনটি এই সংকট শুরুর পর থেকে আমরাও করে আসছি। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বাংলাদেশীরা যুক্তরাষ্ট্রে অসাধারণ অবদান রেখেছে। ১৯৫২ সালে ফজলুর রহমান খান ছিলেন প্রথম বাংলাদেশী যিনি যুক্তরাষ্ট্রে লেখাপড়ার জন্য ফুলব্রাইট বৃত্তি পান। তিনি ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি এবং কাঠামো প্রকৌশল ও যন্ত্রকৌশল বিষয়ে দুটি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে তিনি শিকাগোতে একটি স্থাপত্য প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন, যেখানে তিনি সিয়ার্স কর্পোরেশনের জন্য একটি অফিস ভবনের নকশা প্রণয়ন করেন। ১৯৭৩ সালে অর্থাৎ আমাদের দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ঠিক এক বছর পরেই শিকাগো শহরের কেন্দ্রস্থলে বিশিষ্ট সিয়ার্স টাওয়ারের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছিল। সেই থেকে ভবনটি আমেরিকার চিরাচরিত দিগন্তরেখার রূপটাই বদলে দিয়েছে এবং আমেরিকান ও বাংলাদেশীদের হাতে যৌথভাবে কী অনন্য সৃষ্টি হতে পারে তার এক দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছে। এই গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্কের সর্বসাম্প্রতিক কান্ডারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন ও রাষ্ট্রদূত ইসলামকে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই। পরিশেষে,আমরা অব্যাহতভাবে সেই “স্বাধীনতার তারকা” অনুসরণের পাশাপাশি আগামী দশকগুলোতে আমাদের জনগণ একসাথে আরো কী কী তৈরি করে সেটা দেখার প্রতীক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ।’




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com