শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৬:০৪ অপরাহ্ন

ঈদের আগে নগদ টাকার সংকটে ব্যাংক

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২২

ঈদের আগে নগদ টাকা তোলার জন্য ব্যাংকে গ্রাহকের প্রচণ্ড ভিড়। সব ব্যাংকেই বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে। এটিএম বুথেও লম্বা লাইন। ফলে ঈদের আগে নগদ টাকার সংকটে পড়েছে ব্যাংকগুলো। সংশ্লিষ্টরা জানান, ঈদের আগে সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানে বোনাস দিতে হয়। মাস শেষ হওয়ার আগেই অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মীদের বেতন বুঝিয়ে দিচ্ছে। সবমিলিয়ে মুদ্রাবাজারে বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে। এর ফলে অনেক ব্যাংক নগদ টাকার সংকটেও পড়েছে। সংকট মেটাতে এক ব্যাংক অন্য ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। এতে কলমানিতে বুধবার রেকর্ড পরিমাণ লেনদেন হয়েছে। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকেও টাকা ধার বেড়েছে। রাজধানীর ব্যাংকপাড়া মতিঝিলে দেখা গেছে, ব্যাংকগুলোর কাউন্টারে ভিড় করেছেন বিপুলসংখ্যক গ্রাহক তবে টাকা জমা দেয়ার চেয়ে উত্তোলনের চাপই বেশি। নগদ টাকার চাহিদার পাশাপাশি নতুন টাকায় গ্রাহকের আগ্রহ চোখ পড়ার মতো।
এদিকে অতিরিক্ত গ্রাহকের চাপে ব্যাংকের ক্যাশ কাউন্টারের কর্মকর্তাদের ব্যস্ত সময় পার হয়েছে। সোনালী ব্যাংক লোকাল অফিসে দেখা গেছে, প্রতিটি কাউন্টারের সামনে গ্রাহকের সারি। কেউ কেউ নগদ টাকা তুলে রাখছেন। কেউ এসেছেন সঞ্চয়পত্রের টাকা তুলতে। সংকটের সময় এক ব্যাংক অন্য ব্যাংক থেকে, আবার ব্যাংক থেকে নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সাময়িকভাবে টাকা ধার নেয়। সাধারণত এক রাতের জন্য এই ধার নেয়া হয়। এই ধার দেয়া-নেয়া কার্যক্রম যে ব্যবস্থায় সম্পন্ন হয় তা আন্তব্যাংক কলমানি বাজার নামে পরিচিত। নগদ টাকার ঘাটতি থাকায় আন্তব্যাংক কলমানি বাজার থেকে নিয়মিত ধার করছে ব্যাংকগুলো।
জানা গেছে, ব্যাংকগুলোয় গত জানুয়ারিতে উদ্বৃত্ত তারল্য ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা, গত ফেব্রুয়ারিতে যা কমে হয় ২ লাখ ৪ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা। মার্চে আরও কমেছে। তবে এত টাকা থাকার পরও ব্যাংকগুলো ধার করছে, কারণ ব্যাংকগুলোর কাছে নগদ টাকা আছে খুবই কম। লোকাল অফিসের জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল ওয়াহাব বলেন, ঈদের আগে শেষ কর্ম দিন। এ জন্য লেনদেনের শুরু থেকেই কাউন্টারের সামনে গ্রাহকের ভিড়। স্বাভাবিকের তুলনায় লেনদেন প্রায় তিন-চার গুণ বেড়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নগদ টাকা তোলার চাপ। লোকজন ঈদে বাড়ি যাচ্ছে, সে কারণেই নগদের ওপর চাপ বেড়েছে। এনআরবিসি ব্যাংকের কর্মকর্তা হারুন-উর রশিদ বলেন, সকাল থেকে অনেক গ্রাহক নতুন টাকার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু ১০ টাকার নতুন নোটের চাহিদা বেশি হওয়ায় অনেককে দেয়া সম্ভব হয়নি।
রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা মোহাম্মাদ এহতেশামুজ্জামান বলেন, ঈদের আগে শেষ দুদিন সব সময়ই গ্রাহকের ভিড় থাকে। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। গ্রাহকের বেশির ভাগই টাকা তুলছেন। তবে ব্যাংকে নগদ টাকার কোনো সংকট নেই। আবার এটিএম থেকে নগদ লেনদেনের সুযোগ থাকলেও যারা একটু বেশি পরিমাণে টাকা তুলছেন তাদের ব্যাংকে আসতে হচ্ছে। টাকা তুলতে আসা জামির হোসেন বলেন, শুক্রবার থেকে টানা ছয় দিন ব্যাংক বন্ধ। এ জন্য নগদ টাকা তুলতে এসেছি। পরিমাণে বেশি বলে চেকে একসঙ্গে তুলব। সংকটের সময় এক ব্যাংক অন্য ব্যাংক থেকে, আবার ব্যাংক থেকে নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সাময়িকভাবে টাকা ধার নেয়। সাধারণত এক রাতের জন্য এই ধার নেয়া হয়। এই ধার দেয়া-নেয়া কার্যক্রম যে ব্যবস্থায় সম্পন্ন হয় তা আন্তব্যাংক কলমানি বাজার নামে পরিচিত। নগদ টাকার ঘাটতি থাকায় আন্তব্যাংক কলমানি বাজার থেকে নিয়মিত ধার করছে ব্যাংকগুলো। বুধবার এক দিনের জন্য কলমানি মার্কেট থেকে ৮ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা ধার দেয়া-নেয়া করেছে ব্যাংকগুলো। এই ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ছিল ৫.২৫ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন সুদহার ছিল ৩.৫০ শতাংশ। গড় সুদহার ছিল ৪.৭৫ শতাংশ।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com