গোপালপুরে এক গ্রামের ভিটে, উঠান, পালান জুড়ে লিচু গাছের বাগান ও মৌ র্যাক। প্রতিটি গাছেই থোকায় থোকায় ঝুলছে বোম্বে, বেদনা, চায়না ও বারি জাতের রসালো লিচু। আর মৌ র্যাকে পোষা মৌমাছি দিয়ে বিপুল পরিমান মধু উৎপাদন করা হচ্ছে। গ্রামের পাঁচশতাধিক পরিবারের সবাই লিচু আবাদ ও মধু উৎপাদন করায় ধোপাকান্দি ইউনিয়নের ভুটিয়া এখন লিচু ও মধুর গ্রাম হিসাবে সুপরিচিতি লাভ করেছে। লিচু আবাদের ফলেই গ্রামে ব্যাপক হারে মৌমাছির আনাগোনা বেড়েছে। লিচু বাগান এখন মধু সংগ্রহের নির্ভরযোগ্য উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। লিচু আবাদ ও মধু উৎপাদন করে গ্রামের মানুষেরা বাড়তি আয়রোজগারে সংসারে স্বচ্ছলতা এনেছেন। এছাড়াও লিচু আবাদের ফলে গ্রামে পাখপাখালির সংখ্যাও বেড়েছে। জানা যায়, বসতভিটা সংলগ্ন ক্ষুদে বাগানে ৫ থেকে শতাধিক লিচু গাছ রয়েছে। গ্রামের প্রবীণ চাষী জামান ফারুখী জানান, তার বাগানে ২০টি গাছে ফল ধরেছে। ৭০ হাজার টাকায় পাইকারের নিকট বিক্রি করেছেন। চাষি আব্দুল মালেক জানান, তিনি পঞ্চাশ বছর ধরে লিচুর আবাদ করেন। এবার প্রায় লক্ষাধিক টাকার লিচু বিক্রি করেছেন। লিচু চাষি আব্দুর রহিম জানান, এবার খরায় মুকুল ঝরে যায়। ফল আকারে ছোট হয়ে যায়। রোগব্যাধি, মাকড়সা ও পোকায় ফলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে। কৃষি অফিসে বহুবার গিয়েছি। তাদের পরামর্শে ওষুধ ও বিষ দিয়েছি। কিন্তু কোন ফল হয়নি। লিচু চাষি মজিবর রহমান প্রায় ৮০ হাজার টাকার লিচু বিক্রি করেন। এবার গাছে পোকার ব্যাপক উপদ্রব ছিল। বাত্তি হওয়ার আগেই অধিকাংশ ফল ঝরে পড়ে। কৃষি অফিসকে জানানো হলেও তাদের কারোর সাড়া পাওয়া যায়নি। লিচু চাষি মিজানুর রহমান জানান, পাইকার এসে বাড়ি থেকে লিচু নিয়ে যায়। বসতভিটা সংলগ্ন এসব ক্ষুদ্র খামারের লিচু আবাদে তেমন খরচ নেই। যে অল্প পরিশ্রম লাগে সেটি বাড়ির গৃহিনীরাই করে থাকেন। লিচু আবাদ করে অনেকেই বাড়তি আয়রোজগারে সংসারে স্বচ্ছলতা এনেছেন। তবে প্রযুক্তিগত পরামর্শ ও কারিগরী সহযোগিতা পেলে কোটি কোটি টাকার লিচু উৎপাদন সম্ভব। ওই ব্লকের উপসহকারি কৃষি অফিসার দুলাল হোসেন জানান, ভুটিয়া এখন লিচুর গ্রাম। বসতভিটা সংলগ্ন ফল আবাদে কোন প্রকল্প না থাকায় লিচু চাষিদের কারিগরী সহায়তা দেয়া যাচ্ছেনা। উপজেলা কৃষি অফিসার শামীমা আকতার জানান, ভুটিয়া গ্রামে লিচুর আবাদ হয় বলে তিনি শুনেছেন। এখন খোঁজখবর নিয়ে দেখবেন।