ঢাকার ধামরাইয়ে দুটি প্রকল্পের ৫৪লাখ টাকা বরাদ্দে কামার পাড়া মজিবরের দোকান থেকে দুনিগ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত এক কিলোমিটার দৈর্ঘ একটি ইট সলিং রাস্তার নির্মাণের পরই বৃষ্টির পানিতে ভেঙে পড়ে গেছে। ফলে সেই কাজ শেষ না করেই বরাদ্ধের পুরো ৫৪ লাখ টাকায় উত্তোলন করেছে ঠিকাদার। এতে খালের পাড়ে প্লাসিটিং নির্মাণ না করায় বৃষ্টিরে পানির ঢলে রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে। ফলে রাস্তাট যান চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসীর বাঁধা ও অভিযোগ উপেক্ষা করে। ধামরাই উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ঠিকাদারকে বরাদ্ধের পুরো ৫৪লাখ টাকায় ছাড় দেয়া হয় বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। এমন ঘটনাটি ঘটেছে ধামরাই উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের কামারপাড়া গ্রামে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে কামারপাড়া গ্রামের মোঃ মজিবরের মুদি দোকান হইতে দূনিগ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত ১ কিলোমিটার একটি এসবিবি রাস্তা ও কামারপাড়া খালের পাড়জুড়ে প্লাসিটিং নির্মাণের অনুমোদন দেয় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়। এজন্য বরাদ্ধ দেয়া হয় ৫৪লাখ টাকা। কাজটি নির্মাণ করে পাল এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যথাসময়ে কাজটি না করে অর্থবছরের শেষের দিকে এসে কাজ শেষ হয়। এলাকাবাসী জানান, ২০২০-২১ অর্থবছরে কাজটি সম্পন্ন করার কথা থাকলেও প্রথম দিকেই নানাভাবে তালবাহানা করে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন ধামরাই পাল এন্ট্রারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধিকারি ধামরাই উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুব্রত পাল। পিআইও অফিস উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান অবহিত করলে তাদের হস্তক্ষেপে কাজটি শুরু করেন ওই ঠিকাদার।অত্যন্ত ঢিলেতালে কাজটি করা হলে খালের পাড় দিয়ে কোন রকমে প্লাসিটিং নির্মাণ করে কাজ শেষ করেন। পরে কিছু দিনের মধ্যে সেই প্লাসিটিং ভেঙে যায়। ফলে সেই রাস্তা দিয়ে যান চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। রাস্তার কাজও করা হয় অত্যন্ত নির্মমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে পিআইও মোঃ শাহিন-উ-জ্জামান শাহিনকে অবহিত করা হয়।এলাকাবাসী কাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বিল না দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এরপর প্রকৌশলী মোঃ মাহবুবুর রহমান মাহবুবকে সরেজমিনে তদন্ত করার নির্দেশ দেয়া হলেও তিনি সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত না করে ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজস করে বিল রিলিজের ব্যবস্তা করেন। পরে পিআইও এবং প্রকৌশলী ওই ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজস করে সমুদয় বিল রিলিজ করে দেন। ঠিকাদার সুব্রত পাল বলেন, মালামালের মূল্য বৃদ্ধির কারণে কাজটি যথাসময়ে করা হয়নি। রাস্তার কাজ নিয়ে এরবেশী কিছু বলতে আমি রাজি নই। বিষয়টি তৎকালীন বালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা প্রকৌশলী ও প্রকল্প বাস্তাবায়ন কর্মকর্তা এব্যাপারে অবগত আছেন। তাদের সাথে কথা বলেন। তারাই এর জবাব দেবেন, আমি নই। মোঃ রমজান আলী নামে এক ব্যাক্তি বলেন, রাস্তার কাজে নির্মমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার ও প্লাসিটিং নির্মাণ করা না হলে বিষয়টি বহুবার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীকে জানানোর পরও কোন ফল হয়নি। এরপরও ঠিকাদারকে সমস্ত বিল ছাড় দেয়া হয়েছে। অপরদিকে ভেঙে যাচ্ছে রাস্তাটি। যান চলাচলতো দূরের কথা মানুষজনও চলাচল করতে পারছেনা। প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান মাহবুব বলেন, রাস্তা যেখানে নষ্ট বা ধ্বসে যাওয়ার আশংকা রয়েছে সেখানেই প্লাসিটিং নির্মাণের কথা। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্লাসিটিং নির্মাণ করেছে সেটা ভেঙে গেছে। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য নয়। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ শাহিন-উ-জ্জামান বলেন, কাজটি করেছে পাল এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।আমি অভিযোগ পেয়েছি প্লাসিটিং নির্মাণ করেছে নিম্মমানের সামগ্রী দিয়ে। ফলে সেই প্লাসিটিং ভেঙে বৃষ্টির গিয়ে রাস্তা ভেঙে গেছে।আমি সরেজমিনে গিয়ে সেটা দেখেছি। তবে বিলটি ছাড় দেয়া হয়েছে সত্য। আমি বৃহস্পতিবার বিষয়টি সরেজমিনে গিয়ে দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ বরা হবে।