পাবনা পৌরসভার দিলালপুর মহল্লার এক বাড়ি থেকে স্ত্রী, পালিত কন্যাসহ ব্যাংক কর্মকর্তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্থানীয়রা দুর্গন্ধ পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে আজ শুক্রবার দুপুরে পুলিশ মরদেহ গুলি উদ্ধার করেন। নিহতরা হলো রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও বেড়া উপজেলার কাশিনাথপুর শহীদনগর গ্রামের মৃত মকিম সেখের ছেলে আব্দুল জব্বার (৬০), তার স্ত্রী ছুম্মা খাতুন (৫০) ও পালিত মেয়ে ৭ম শ্রেনীর ছাত্রী সানজিদা খাতুন (১৪)। দ্বীতল ভবনটির নিচ তলায় ব্যাংক কর্মকর্তা স্ত্রী, কন্যাসহ ভাড়া থাকতেন। নিহতদের শরীরে আঘাতের চিহৃ রয়েছে পুলিশ জানিয়েছেন।
পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারনা করছে গত ৩/৪ দিন আগে তাদেরকে হত্যা করে বাহির থেকে গেট বন্ধ করে চলে যায় দুর্বৃত্বরা। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, এক ঘরে মা-মেয়ে ও অপর ঘরে ব্যাংক কর্মকর্তার লাশ। লাশগুলি পচে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। লাশের গায়ে কিছু অংশে পচন ধরেছে। লাশ ৩টি ফুলে চেহারা বিকৃতি হয়ে গেছে। বাড়ির পাশেই ফায়ার সার্ভিসের মসজিদ এবং অপরপাশে ঘনবসতি কয়েকটি বাড়ি অবস্থিত। বাড়ির সামনে পাবনা শহর-ও বাস টার্মিনালের মুল সড়ক। যে ভাবে লাশ পচে গেছে এবং জানালা খোলা ছিল তাতে স্থানীয়রা এত দেরিতে কেন দুর্গন্ধ পেলেন প্রশ্ন প্রত্যাক্ষদর্শীদের।
পাবনার পুলিশ সুপার শেখ মোঃ রফিকুল ইসলাম ৩জন নিহতের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া তিনি বলেন, প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে সন্ত্রাসীরা তাদেরকে কুপিয়ে হত্যার পর বাড়ির সব মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। তবে ঘটনাটি ৩/৪ দিন আগে ঘটেছে বলে ধারনা করছে পুলিশ।
নিহতের স্বজনরা জানায় আব্দুল জব্বার গত ৩০ মে গ্রামের বাড়ি কাশিনাথপুর শহীদনগর থেকে শহরে আসে। পহেলা জুন (০১ জুন) থেকে তার মোবাইল বন্ধ রয়েছে।
সর্বশেষ বিকেল সারে তিনটার দিকে বাড়ির মূল ফটকের তালা ভেঙ্গে পুলিশের পাবনা ক্রাইম ব্রাঞ্চের সদস্যরা বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে। দোতলা বিশিষ্ট এই বাড়িতে অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তিন বছর ধরে ভাড়া রয়েছেন বলে জানা গেছে। তার এক সহকর্র্মী জানান, পৌর শালগাড়িয়াতে তার একটি নিজস্ব বাড়ি রয়েছে। তবে তার ভাইরা ফিরোজ কমিশনারের বাড়ির এলাকা হওয়ায় তিনি সেখানে ভাড়া থাকতেন। তবে শালগাড়িয়ার বাড়িটি ভাড়া দেওয়া রয়েছে।
দ্বীতল ভবনের যে বাড়িতে আব্দুল জব্বার নিহত হয়েছেন সেই বাড়িতে আর কোন ভাড়াটিয়া ছিল না। বাড়ির মূল মালিক দেশের বাহিরে থাকেন বলে স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা গেছে। এই ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
হত্যাকান্ডে শিকার আব্দুল জব্বার রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের অবসর প্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন। অবসরকালে তিনি সিনিয়র কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার স্ত্রী ছুম্মা খাতুন গৃহিণী ও পালিত মেয়ে সাজজিদা খাতুন ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী ছিলেন। তিনি গত ২ বছর পুর্বে অবসর গ্রহন করেন বলে তার ভাগ্নি জানান। তবে ঘটনাটি ডাকাতি না পরিকল্পিত হত্যাকান্ড তা অনেকের মনেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য থানায় নিয়ে আসেন, আগামীকাল শনিবার ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করা হবে।
খপ/প্রিন্স